More

Social Media

Light
Dark

শোয়েব মালিক, এবার যাওয়ার সময় হল!

বয়স চল্লিশ পেরিয়েছে, কিন্তু ফিটনেস কিংবা ফর্ম, দুটোই তাঁর আছে। অর্থাৎ একজন চিরসবুজ ক্রিকেটারের যেমন রসদ থাকা প্রয়োজন তাঁর প্রতিটি উপাদানই তাঁর মাঝে আছে। বলছি শোয়েব মালিকের কথা। ঘরোয়া ক্রিকেটে আছেন দুর্দান্ত ফর্মে।

চলমান পাকিস্তান ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপেও দুর্দান্ত সব ইনিংস উপহার দিয়েছেন। তবুও নির্বাচকদের আড়ালেই চলে গেছে শোয়েব মালিক নামটা। আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জায়গা হয়নি তাঁর। বিশ্বকাপে তাঁর জায়গা না পাওয়া দেখে এক প্রকার হতাশই হয়েছেন শোয়েব মালিকের এক সময়ের সতীর্থ মোহাম্মদ হাফিজ। ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অকপটে।

পাকিস্তানের এক সংবাদ মাধ্যমে তিনি বলেন, ‘আমি জানিনা শোয়েব মালিককে যথাযথ বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হবে কিনা। দীর্ঘ ২২ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার তাঁর। গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে পাকিস্তানের জন্য সেরাটা দিয়ে আসছে মালিক। যেভাবে সে ফিটনেস নিয়ন্ত্রণ করে, তা সত্যিই অবিশ্বাস্য। আমার অবসরের সময় তাকেও পরামর্শ দিয়েছিলাম অবসর নিতে। কেননা আমি জানতাম আমার মত সেও সম্মান পাবে না। তাকে শেষবারের মত বিদায় নেওয়ার সুযোগ দিক। কিন্তু ক্রিকেট বড্ড নিষ্ঠুর।’

ads

পাকিস্তানের সিনিয়র ক্রিকেটার বিদায়ের ক্ষেত্রে সবসময়ই নাকি টিম ম্যানেজমেন্ট দায়সারা ভাব দেখায়। এ নিয়ে মোহাম্মদ হাফিজ বলেন, ‘২০১৯ বিশ্বকাপের পর মালিককে যথাযথ বিদায় দেওয়ার জন্য দলের ম্যানেজমেন্টকে বলেছিলাম। তারা আমার কথা শুনেনি। অবশ্যই মালিকের শেষ একটা ম্যাচ খেলা দরকার। যখনই কাউকে বিদায় দেওয়ার কথা উঠে, আমাদের ম্যানেজমেন্ট দায়সারা একটা ভাব দেখায়।’

পাকিস্তানের এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে শোয়েব মালিকের সংযুক্তি কতটা কাজে দিতো তা নিয়ে হাফিজ বলেন, ‘পাকিস্তানের বর্তমানে মিডল অর্ডার বেশ স্ট্রাগল করছে। এমন অবস্থানে শোয়েব মালিক বেটার অপশন হতো। আর দলে একজন সিনিয়র ক্রিকেটার থাকলে বড় টূর্নামেন্ট খেলার মধ্যে অনেক আত্মবিশ্বাস পাওয়া যায়। খুশদিল, আসিফ ভাল। তবে শোয়েব মালিকের সব দিকেই শট খেলার ক্ষমতা আছে। তাই শোয়েব মালিক দলে থাকলে খুবই ব্যালান্সড হতো।’

অবশ্য শোয়েব মালিকের দলে সুযোগ না পাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁরই করা একটি টুইটের দায় আছে বলে ধারণা করা হয়। এশিয়া কাপের শ্রীলঙ্কার কাছে হারের পরে শোয়েব মালিক টুইট করেছিলেন, ‘আমরা কবে স্বজনপ্রীতির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসব।’ ঐ এক টুইটেই বেশ বিতর্ক হয়। অবশ্য অনেকে মনে করেন শোয়েব মালিকের সে টুইটটি যথার্থই ছিল।

তবে পাকিস্তানের আরেক সতীর্থ শহীদ আফ্রিদি মনে করেন, ঐ সময়ে মালিকের এমন টুইট করা উচিৎ হয়নি। তাঁর আরেকটু অপেক্ষা করা উচিৎ ছিল। ঐ টুইটের কারণে বরং শোয়েব মালিকের নিজেরই ক্ষতি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘শোয়েব মালিক যেমন ক্রিকেটার তাতে অবশ্যই এবারের দলে থাকা উচিৎ ছিল। সে এখনো ফিট। বাইরের সব ফ্রাঞ্চাইজি লিগে তাঁর চাহিদা আছে। আর ও দলে থাকলে বাবর আজমও একটু সাপোর্ট পেতো। সেটা হোক একাদশে থেকে নয়তো সাইড বেঞ্চে বসে। কিন্তু লাভটা হতো পাকিস্তানেরই।’

এ ছাড়া তিনি আরো বলেন, ‘পাকিস্তানের এই মুহূর্তে মিডল অর্ডার লাইন আপ খুব একটা শক্তিশালী না। এই জায়গাটায় মালিক দারুণ সংযুক্তি হতে পারতো। তাছাড়া বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজটাই পরখ করে নেওয়া যেত তাকে। তাঁর এত বছরের অভিজ্ঞতা পাকিস্তান দুর্দান্তভাবে কাজে লাগতে পারত।’

টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও শোয়েব মালিক বাকি দুই ফরম্যাটে এখনো খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন। দলে থাকেন না। কিন্তু দলে আসার জন্য যে ফর্মটা প্রয়োজন সেই ফর্মটা ধরে রাখার চেষ্টা করেন। বিশেষত, তিনি এই বয়সে এসেও ফিটনেস নিয়ে প্রচুর কাজ করেন। এজন্য এখনো তাকে তরুণ ক্রিকেটারদের মতোই মনে হয়।

তবে, এবারের বিশ্বকাপে খেলছেন না মানে ধরে নেওয়াই যায়, আপাতত সহসাই পাকিস্তান দলে আর দেখা মিলছে না মালিকের। তবে আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তানের মতো নির্বাচকদের আনপ্রেডিক্টেবল ভাবনায় তিনি আসলেও অবাক করার মতো ব্যাপার হবে না।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link