More

Social Media

Light
Dark

আর্শদ্বীপ, আশার দীপ!

কথায় আছে, ‘ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস’। ক্যাচ মিস করে গোটা ম্যাচ হাতছাড়া হওয়ার ঘটনায় এবারের এশিয়া কাপের মঞ্চে বোধহয় সবচেয়ে বড় অপরাধী আর্শদ্বীপ সিং। ভারত পাকিস্তানের সুপার ফোরের ম্যাচ। জয়ের ভারটা যে দুই পাল্লাতেই সমান ছিল। দরকার ছিল শুধু সুপার ফোরে জিতে পাল্লাটা ভারী করা। যেদিকে জয়ের ভার বাড়বে, ওই দলের কেল্লাফতে।

কিন্তু একটা ক্যাচ! একটা ক্যাচই যেন বদলে দিয়েছিল ম্যাচের পুরো দৃশ্যপট। আর্শদ্বীপ সিং নিশ্চয়ই তার জীবন থেকে মুহুর্তটি মুছে ফেলতে চাইবেন, তার একটা হাতছাড়া করা ক্যাচেই যে তার দল ভারতের কপাল পুড়লো তা ভুলে যেতে চাইবেন। ম্যাচে তখন টানটান উত্তেজনা। খেলার ফলাফল যেকোন দিকে ঘুরে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশ প্রবল। ঠিক সে সময় আর্শদ্বীপ ফেলে দিয়েছেন আসিফ আলীর ক্যাচ। আর যা হওয়ার তাই হয়েছে।

সেই ক্যাচ হাতছাড়া করার ফলেই মোমেন্টামের পুরোটুকু চলে যায় ভারতের বিপক্ষে। অথচ সেই ক্যাচটি যদি নিতে পারতেন আর্শদ্বীপ, শূন্যরানে প্যাভিলনে ফিরে যেতেন আসিফ। আর তাতেই ম্যাচের  মোড় ঘুরে ভারতের কপাল খুলত, সেই সাথে ম্যাচটির নায়ক বনে যেতে পারতেন আর্শদ্বীপ। কিন্তু হায়, সেই ফেলে দেয়া ক্যাচ যে তাকে গোটা সোস্যাল মিডিয়া, গোটা ভারতবর্ষের খলনায়কে পরিণত করে দিয়েছে।

ads

এই বছরের শুরুতে ভারতের হয়ে অভিষেক হওয়ার পর, আর্শদ্বীপ ১১ টি-টোয়েন্টিতে ২০.১৪ গড়ে এবং ১৬.৩ স্ট্রাইক রেটে ১৪ টি উইকেট নিয়েছেন। এদিকে সেই এক ম্যাচে ক্যাচ মিসের জেরে অর্শদ্বীপ নিজের উঠতি ক্যারিয়ার নিয়েই শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিলেন। তিনি জানেন তিনি ভালো বোলার, কিন্তু ওই এক মুহূর্তের গ্লানি তাঁর বাকী সব অর্জনকে মিইয়ে দিয়েছিলো যেন! সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মজার পাত্র বনে গিয়েছিলেন রীতিমতো। তাছাড়া ক্রিকেট পাড়ার চোখ রাঙ্গানি তো সহ্য করতে হয়েছেই। 

কিন্তু আর্শদ্বীপ এবার বোধহয় একটু নিসঙ্কোচে নি:শ্বাস নিতে পারবেন। কারণ আসন্ন টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ঘোষিত ভারতীয় দলে নিজের নাম খুঁজে পেয়েছেন এই তরুণ। বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে নিজেকে প্রমাণের সুযোগ পাচ্ছেন, বাঘা বাঘা সব দলের সাথে  মোকাবেলা করতে যাচ্ছেন- একজন তরুণ উদীয়মান ক্রিকেটারের জন্য এটাতো স্বপ্ন ছুঁয়ে দেখার মতো ব্যাপারই।

২৩ বছর বয়সী এই পেসারের কোচ যশবন্ত রাই শিষ্যের জন্য বেশ উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, ‘যেকোন খেলোয়াড়ের মতো,আর্শদ্বীপ কিছুটা টেনশনে ছিল। কিন্তু তারপর আমরা তাকে বলেছিলাম যে সে সমস্ত কঠোর পরিশ্রম করেছে এবং চিন্তা করতে হবে না। পাকিস্তানের বিপক্ষে সে ক্যাচ ছেড়ে দেয়ার পরে আমি তার সাথে কথা বলেছিলাম এবং সে আমাকে বলেছিল সে রাতে ঘুমাতে পারেনি। সে জানিয়েছিলো যে সে ট্রল সম্পর্কে চিন্তা করে না। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যেকোন ক্রিকেটারের জন্য সবচেয়ে বড় মঞ্চ এবং আর্শদ্বীপের ভুল শুধরে নেওয়ার মনোভাব সেই মঞ্চে তাঁকে এবং ভারতকে সাহায্য করবে।’

আইপিএলের মঞ্চে পাঞ্জাব কিংসের আর্শদ্বীপ ডেথ ওভারে সেরা বোলারদের একজন হয়ে উঠেছে। কোচ রাই মনে করেন , ‘একজন তরুণ হিসাবে আর্শদ্বীপের সবচেয়ে ভাল জিনিসটি ছিল সে ওভারের ছয়টি বলই ভিন্নতার সাথে ভাবতে ও করতে পারে।’

সব মিলিয়ে আসন্ন আসরে অস্ট্রেলিয়ায় আর্শদ্বীপ জাসপ্রিত বুমরাহ, ভুবনেশ্বর কুমার, হর্ষাল প্যাটেল এবং হার্দিক পান্ডিয়ার পাশাপাশি ভারতের পেস ব্যাটারির অংশ হবেন। এশিয়া কাপে হাতাশা কুড়ানো আর্শদ্বীপ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসরে কিভাবে বোলিং ও ফিল্ডিং মিলিয়ে সফলতার গল্প লিখবেন, তা দেখতে মুখিয়ে থাকবে পুরো ভারতবর্ষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link