More

Social Media

Light
Dark

সাকিবের ‘পিকচার আভি বাকি হ্যায়’

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সেন্টার উইকেটে অভাবনীয় একটা দৃশ্যের অবতাড়ণা হল। হঠাৎ সেন্টার উইকেটে নেমে গেলেন সাকিব আল হাসান। সাথে সঙ্গী হল বোলিং মেশিন। একের পর এক বল আসতে লাগলো তাঁর ব্যাট বরাবর, আর সাকিব তুলে মারতে লাগলেন। বড় বড় ছক্কা আছড়ে পড়তে লাগলো গ্যালারিতে। মোট কথা পাওয়ার হিটিংয়ের ওপরই জোর দিলেন সাকিব।

বার্তাটা পরিস্কার, সাকিব কোনো আক্ষেপ রাখতে চান না। আক্ষেপ টা কি? টি-টোয়েন্টির সাথে মানানসই স্ট্রাইক রেট বজায় রাখতে যে পরিমান পাওয়ার হিটিং দরকার সেটা বরাবরই অনুপস্থিত বাংলাদেশের ব্যাটারদের ব্যাটে। এই আক্ষেপ নিয়েই টি-টোয়েন্টিতে ধুঁকছে বাংলাদেশ দল। সাকিব এবার আর সেই আক্ষেপটা রাখতে চান না।

সামনেই তো টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এশিয়া কাপ। আর সংযুক্ত আরব আমিরাতের উইকেট প্রচলিত ব্যাটিং উইকেট হলেও একটু স্লো। ফলে, পাওয়ার হিটিংয়ের কোনো বিকল্প আসলে নেই। সেই সত্যিটা সাকিব বুঝে ফেলেছেন।

ads

এশিয়া কাপের আগে গত কয়েক দিন ধরেই চলছে সাকিব আল হাসানের সিরিয়াস অনুশীলন। পারফর্মার করা ছাড়াও এবার টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়ক হিসেবেও বাড়তি দায়িত্ব যে নিতে হবে তাঁকে। আর সাকিব দায়িত্বের মানেটা বুঝেন। তাঁর জন্য অনুশীলন মানে আর দশজনের মত স্রেফ অর্থহীন ঘাম ঝরিয়ে যাওয়া নয়।

তিনি নিজের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আনায় বিশ্বাসী। আগেও তিনি নিজের ব্যাটিং স্ট্যান্স নিয়ে অনেক কাজ করেছেন। বলকে আরো বেশি জোরে পেটাতে, আরো বেশি রান তুলতে সাকিব কাজ করেছেন নিজের শরীরের পজিশন, ব্যাট ধরার খুঁটিনাটি অনেক কিছু নিয়েই।

সাকিব সম্ভবত বাংলাদেশ ক্রিকেটেরই সবচেয়ে স্মার্ট ক্রিকেটারদের একজন। তিনি বোঝেন, আধুনিক ক্রিকেট পরিবর্তনশীল। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জমানায় এসে ক্রিকেটের ব্যাকরন বইয়ের পাতায় নিত্যনতুন শব্দ বলে যায়, নতুন পাতা সংযুক্ত হয়।

সাকিব সেসবের সাথে নিজেকে আপডেট রাখতে চান। যা বাকিরা অনেক পরে বুঝতে পারেন, সাকিব সেটা বুঝে ফেলেন আগাম। এখানেই তো সাকিবের সাথে বাকি সবার পার্থক্য।

বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টিতে পারফরম্যান্স ইস্যু আর অধিনায়কত্ব নিয়ে অনেকদিন ধরেই ভুগছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সেই ভাবনা থেকেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সাকিবকে আবারও টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্বটা ফিরিয়ে দেওয়ার ভাবনা ভাবছিল।

কিন্তু, সাকিবকে দায়িত্ব দেওয়া হবে – অথচ সেখানে কোনো বিতর্ক থাকবে না – তা কি করে হতে পারে। হ্যাঁ, এর মধ্যেই সাকিব নিজে থেকে অনেকটা জোর করেই একটা বিতর্কের বীজ বুনে দিলেন। অনলাইন বাজির সাইট বেটউইনারের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান বেটউইনারের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর বনে গেলেন। বিসিবি ক্ষেপে গেল। সাকিবকে আল্টিমেটাম দেওয়া হল।

সাকিব চুক্তি থেকে সরে আসলেন। অধিনায়কত্ব নিয়ে একটু জল ঘোলা হল। সেই ঘোলা জলের মাঝে বিসিবি সাকিবের হাতেই তুলে দিল অধিনায়কত্ব। যেন একটা থ্রিলার সিনেমা। তবে, সাকিব নিজে অন্তত জানেন, ‘পিকচার আভি বাকি হ্যায়!’

আর সেই সত্যিকারের পিকচারটা সাকিব বরাবরই মাঠে দেখাতে বিশ্বাসী। হ্যাঁ, এশিয়া কাপের দল নিয়ে অনেক যদি/কিন্তু আছে। হয়তো কোনো ভাবেই ফেবারিটের তালিকাতেও থাকবে না বাংলাদেশ। তবে, ওই যে সাকিব নামের একটা এক্স ফ্যাক্টর আর তাঁর প্রবল প্রচেষ্টাই বারবার আশা করতে বাধ্য করছে।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link