More

Social Media

Light
Dark

আক্রমণের ত্রয়ী, রক্ষণের ত্রাস

গোল করাটা নি:সন্দেহে ফুটবল ম্যাচের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত। আর এই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত তৈরি করতে প্রয়োজন হয় আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড়দের নিখুঁত পাসিং আর পারস্পরিক বোঝাপড়া। ফুটবল ভক্তরা বছরের পর বছর ধরে এমন কিছু দুর্দান্ত ফরোয়ার্ড ত্রয়ী দেখেছে যারা এসব কাজে সফলতম।

যখন এই খেলোয়াড়রা লিঙ্ক আপ করে তখনই তারা কিছু অবিস্মরণীয় মুহূর্তের জন্ম দিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এমন কিছু ত্রয়ী হল মেসি নেইমার সুয়ারেজের এমএসএন, ক্রিশ্চিয়ানো, বেল বেনজেমার বিবিসি, রোনালদো, রোনালদিনহো, রিভালদোর আরআরআর। তাদের পরিসংখ্যান এবং অর্জন গুলোতে আরেকবার নজর দেয়া যাক।

  •    বেনজেমা, বেল, ক্রিশ্চিয়ানো (বিবিসি)

রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকরা সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে মোট পাঁচ মৌসুমের জন্য এই ভয়ঙ্কর ত্রয়ীকে দেখতে পেরেছে। লস ব্ল্যাঙ্কোসদের ইতিহাসে এটি অন্যতম স্মরণীয় সময় ছিল। যেখানে তারা চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, তিনটি উয়েফা সুপার কাপ, তিনটি ক্লাব বিশ্বকাপ, একটি সুপারকোপা ডি এস্পানা, একটি কোপা দেল রে এবং একটি লা লিগাসহ মোট ১৩টি ট্রফি জিতেছে।

ads

সব মিলিয়ে তারা ২৯৩ ম্যাচে ২০১টি ম্যাচ জিতেছিল – জয়ের হার ৭১.৭ শতাংশ। এছাড়া দলের ৭৮৪টি গোলের মধ্যে ৪৪২টি তারা করেছিল। তিনজনই ১৩টি শিরোপা মিশনে গোল করে অবদান রেখেছিলেন ৷ এবং তাদের সর্বমোট ১৭১টি অ্যাসিস্ট রয়েছে। ২০১৮ সালে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর বিদায়ের পর বিবিসির পতন ঘটে। 

  • মেসি, সুয়ারেজ, নেইমার (এমএসএন)

একজন আর্জেন্টাইন ও একজন ব্রাজিলিয়ানের সাথে মিলে উরুগুয়ের লুইস সুয়ারেজ তৈরি করেছিলেন দুর্দান্ত এক ফরোয়ার্ড ত্রয়ী। এই তিন জন বার্সেলোনায় ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কাটিয়েছিলেন। এর মধ্যে একসঙ্গে নয়টি শিরোপা জিতেছিলেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ক্লাব বিশ্বকাপ, দুটি লা লিগা শিরোপা, একটি উয়েফা সুপার কাপ, একটি সুপার কোপা ডি এস্পানা এবং তিনটি কোপা দেল রে বার্সেলোনার ক্যাবিনেটে যোগ করেছিলেন মেসি-নেইমাররা।

সে সময় ১৮১ ম্যাচে ১৩৮ ম্যাচে জয় পেয়েছিল বার্সেলোনা, শতাংশের হিসেবে যা ৭৬.২%। নিজেদের সময়ে বার্সেলোনার ৫১৯ গোলের মধ্যে ৩৬৪ গোল করেছিল এমএসএন। এর মাঝে মেসি একাই করেছিলেন ১৫৩ গোল, অন্যদিকে সুয়ারেজের পা থেকে এসেছে আরও ১২১ গোল। তাছাড়া নেইমার গোল করেছিলেন ৯০টি।

গোলের হিসেবে পিছিয়ে থাকলেও অ্যাসিস্টের দিক দিয়ে বিবিসি ত্রয়ীর চেয়ে এগিয়ে আছে এমএসএন। তারা মোট ১৭৩টি অ্যাসিস্ট করেছিল। 

  • রোনালদো, রোনালদিনহো, রিভালদো (ট্রিপল আর)

২০০২ সালে কোরিয়া ও জাপান বিশ্বকাপে ব্রাজিলকে শিরোপা জয়ের গৌরব এনে দিয়ে সবচেয়ে আলোচিত হয়েছে ব্রাজিলের এই ত্রিফলা। পুরো টুর্নামেন্টে তারা যে সাতটি ম্যাচ খেলেছিল তার সবকটিই জিতেছিল। ফাইনালে তারা রোনালদোর জোড়া গোলে জার্মানিকে পরাজিত করেছিল।

এছাড়া রিভালদো এবং রোনালদিনহো উভয়েই সেরা পারফরম্যান্স দেখিয়েছিলেন। প্রতিযোগিতায় ব্রাজিলের ১৮টি গোলের মধ্যে ১৫টি তাদের পা থেকে এসেছিল। রোনালদো আট গোল করে গোল্ডেন বুট জিতেছেন। তাছাড়া রিভালদো পাঁচটি এবং রোনালদিনহোর দুইটি গোল করেছিলেন।

এর বাদে তিনজন তিনটি ভিন্ন সময়ে খেলেছেন এসি মিলানে। সেখানে অবশ্য তাঁদের বলার মত সাফল্য এসেছে সামান্যই।

  • মেসি, নেইমার, এমবাপ্পে (এমএনএম)

সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় আক্রমণভাগ প্যারিস সেন্ট জার্মেই। দলটির ফরোয়ার্ড লাইনে আছেন লিওনেল মেসি, নেইমার এবং এমবাপ্পে। তাদের নিয়েই তৈরি হয়েছে এমএনএম ত্রয়ী। ইতোমধ্যে ওয়ান শিরোপা, ফ্রেঞ্চ সুপার কাপ শিরোপা জিতেছে এমএনএম।

গত মৌসুমে লিওনেল মেসি ১০ গোল এবং ১৪টি অ্যাসিস্ট করেছিলেন। এছাড়া কিলিয়ান এমবাপ্পে করেছিলেন ৩৮ গোল এবং ২৬ অ্যাসিস্ট। অন্যদিকে, নেইমার জুনিয়রের পা থেকে ১৩ গোলের পাশাপাশি ৮টি অ্যাসিস্ট এসেছে।

ব্যক্তিগত ভাবে কিংবা কাগজে-কলমে তারা অপ্রতিরোধ্য। কিন্তু অ্যাটাকিং ত্রয়ী হিসেবে সর্বকালের সেরাদের একটি হতে পারবে কিনা তা জানতে হলে আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে ভক্ত-সমর্থকদের।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link