More

Social Media

Light
Dark

বিশ্বকাপ ছাপিয়ে ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট

একটা স্বর্ণালী ট্রফি। ছুঁয়ে দেখবার কতই না ইচ্ছে। সবাই তো ছুঁতে পারে না। তবু ক্রিকেট খেলা প্রতিটা খেলোয়াড়ের স্বপ্ন একবার অন্তত বিশ্বকাপ শিরোপা হাতে উৎসব করা। শিরোপা হাতে উৎসব করা না হোক, ক্রিকেটে এই মহাযজ্ঞে অন্তত অংশগ্রহণ করার চেষ্টায় কমতি থাকেনা বিন্দুমাত্র। তবে এখানটাই খানিকটা ভিন্ন পথের পথিক যেন দক্ষিণ আফ্রিকা।

বর্তমানে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্যে চলমান রয়েছে ‘সুপার লিগ’। পয়েন্ট টেবিলের একটা হিসেব-নিকেশ হচ্ছে। শীর্ষে থাকা আট দল সরাসরি অংশ নেবে ২০২৩ সালের শেষের দিকে ভারতে অনুষ্ঠিত হওয়া বিশ্বকাপ আয়োজনে। সুপার লিগের আওতাধীন প্রতিটি ম্যাচের ফলাফলেই রয়েছে নির্দিষ্ট পরিমাণ পয়েন্ট। সে পয়েন্টের ব্যবধানে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্তমান অবস্থান একাদশতম স্থানে।

সরাসরি বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে না পারার একটা শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তাছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে খুব বেশি সুযোগও বাকি নেই। মাত্র আটটি ম্যাচ ছিল তাঁদের কাছে। সেখান থেকেও তিনটি ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে গেল প্রোটিয়াদের। এর জন্যে অবশ্য প্রোটিয়াদের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার (সিএসএ) একটা বিশাল বড় ভূমিকা রয়েছে।

ads

আগামী বছরের শুরুর দিকে অস্ট্রেলিয়ার সাথে তিনটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলার কথা ছিল প্রোটিয়াদের। এর আগে অবশ্য দুইটি টেস্ট খেলবে তাঁরা অজিদের সাথে। বক্সিং-ডে টেস্ট সহ সেই সিরিজের দুইটি লাল বলের ম্যাচ খেলতে প্রস্তুত সিএসএ। যত বিপত্তি ওয়ানডে নিয়ে। ওয়ানডে সিরিজের সময়েই আফ্রিকান ক্রিকেটে নতুন এক ফ্রাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আগমন ঘটতে চলেছে।

বর্তমান দুনিয়ান ক্রিকেটের একটা বড় অংশ দখল করে নিয়েছে ফ্রাঞ্চাইজি ভিত্তিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট গুলো। দেশের অর্থনীতির পাশাপাশি ক্রিকেট বোর্ডগুলোর আয়ের একটা বিশাল বড় উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ধরণের ক্রিকেট টুর্নামেন্টগুলো। তাইতো প্রায় প্রতিটা ক্রিকেট খেলুড়ে দেশের ক্রিকেট বোর্ড ঝুকছে। বাদ যায়নি দক্ষিণ আফ্রিকাও।

এর আগের দুই বারের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট বোর্ডের। একবার তো টুর্নামেন্টের ব্রডকাস্টিং স্বত্ব বিক্রি করতেই ব্যর্থ হয় তাঁরা। সে পরিস্থিতি কাটিয়ে আবারও আয়োজন হাতে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট বোর্ড। এবার আর কোন ধরণের কমতি রাখতে চাইছে না দেশটির ক্রিকেট বোর্ড। তাঁরা চাইছে টুর্নামেন্ট চলাকালীন সময়ে অধিকাংশ প্রোটিয়া তারকা খেলোয়াড়দের যেন পায় ফ্রাঞ্চাইজিগুলো।

তবে সেটা নিশ্চিত করতে গিয়েই বিশ্বকাপ যাত্রা খানিকটা হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। যদিও সিএসএ অস্ট্রেলিয়ার সাথে বহুবার আলাপ করেছে সিরিজটি অন্য কোন সময় করা নিয়ে। তবে তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট পঞ্জিকাও পরিপূর্ণ। খালি সময় নেই বললেই চলে। এমন পরিস্থিতে সে তিনটি ওয়ানডে ম্যাচ হাত ছাড়া করতেই হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে।

বাকি থাকা পাঁচটি সুপার লিগের ম্যাচের তিনটি খেলতে হবে ভারতের বিপক্ষে। এই সময়ে অন্যতম শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলাটা খানিক কঠিন। বাকি থাকা দুইটি ম্যাচ নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে। এমন জটিল সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট। বিশ্বকাপ খেলতে না পারাটা নিঃসন্দেহে খেলোয়াড়দের জন্যে বিশাল বড় এক ধাক্কার সামিল।

আবার অন্যদিকে অর্থনৈতিকভাবে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট বোর্ডও বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হবে। তবে ক্রিকেট বোর্ড ইতোমধ্যে ৩০% স্বত্ব বিক্রি করে ফেলেছে। ক্যাবল টিভি সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান ‘সুপারস্পোর্টস’ দক্ষিণ আফ্রিকার অনুষ্ঠিতব্য এই ফ্রাঞ্চাইজি লিগের এক বিশাল অংশ নিজেদের করে নিয়েছে। তাই ক্রিকেট বোর্ডকে এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতেই হচ্ছে।

তবে কি দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নটা অধরা থেকে যাবে? অংশগ্রহণ যখন হুমকির মুখে পড়ে যায় তখন নিশ্চয়ই শিরোপা জয়ের স্বপ্নটা বিলাসিতায় পরিণত হয়। নতুন এক স্রোতে গা ভাসিয়ে অতলে না তলিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link