More

Social Media

Light
Dark

রেড ডেভিলদের ট্রান্সফার আক্ষেপ

বেশ সরগরম। ঠিক যেন সকাল বেলার কাঁচাবাজার। ইউরোপের ফুটবলের দলবদলের অবস্থাও ঠিক তাই। কতশত চমকের দেখা মিলছে। বহুদিনের গুঞ্জন ভুল প্রমাণিত হচ্ছে। হুট করেই খেলোয়াড় কিংবা ক্লাব কর্তাদের মত বদলে যাচ্ছে। পছন্দের খেলোয়াড় হাতছাড়াও হয়ে যাচ্ছে বহু ক্লাবের। সে তালিকার উপরের দিকেই অবস্থান ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের।

লিগ প্রতিদ্বন্দী দুই ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটি ও লিভারপুল বাজারে থাকা টাটকা সবজি ব্যাগে পুরে বাড়ি রওনা হয়ে গেছে। আর্লিং হ্যালান্ড গেছেন ইতিহাদে আর ডারউইন নুনেজ গেছেন অ্যান্ডফিল্ডে। ওল্ড ট্রাফোর্ড শূন্য চোখে অপেক্ষমান। তবে এমন ঘটনা ‘দ্য থিয়েটার অব ড্রিম’ প্রথমবার দেখছে না। এর আগেও বহুবার পছন্দের খেলোয়াড় অথবা সময়ের সেরা খেলোয়াড় হাতছাড়া হয়েছে রেড ডেভিলদের। সে সব নিয়েই আজকের আয়োজন।

  • অ্যালান শিয়েরার (ইংল্যান্ড)

স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের অধীনে যেন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তবে তখনকার সবচেয়ে বড় আফসোস ছিল হয় অ্যালান শিয়েরারকে দলে ভেড়াতে না পারা।

ads

ইংলিশ এই স্ট্রাইকার ছিলেন সে সময়ের সেরাদের একজন। লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতাদের একজন। তবুও দুই দফা চেষ্টা করেও শিয়েরারকে ওল্ড ট্রাফোর্ডের মায়ায় বেঁধে ফেলা যায়নি। হয়ত তিনি যুক্ত হলে রেড ডেভিলরা চলে যেত ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

  • সাদিও মানে (সেনেগাল)

লিভারপুলে নিজের ক্যারিয়ারের স্বর্ণালী দিন কাটিয়ে সেনেগালের মহাতারকা সাদিও মানে চলে গেছেন জার্মান পরাশক্তি বায়ার্ন মিউনিখ ডেরায়। তবে অন্য এক লাল জার্সিও গায়ে জড়াতে পারতেন সাদিও মানে।

২০১৫ সালের দলবদলে সাদিও মানে ছিলেন রেড ডেভিলদের পছন্দ তালিকার শীর্ষে। তবে সাউদাম্পটনের কাছে হারতে হয়ে সাদিও  মানে দৌড়ে। এরপর তো দুই মৌসুম বাদে লিভারপুলের হয়ে রীতিমত রাজত্ব করলেন মানে।

  • জন বার্নস (ইংল্যান্ড)

বলা হয় স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন নাকি জন বার্নসের একজন ভক্ত। ইংলিশ এই উইঙ্গারকে দলে ভেড়াতে চেয়েছিলে তিনি। তবে ব্যর্থ হয়েছেন।

এ দফা লিভারপুল ছিনিয়ে নিয়ে যায় ফার্গুসনের পছন্দের খেলোয়াড়কে। অগ্যতা তাঁর অভাব পূরণে দলে ভেড়ানো হয়ে জ্যাসপার ওলসেনকে। তবে ব্যর্থতার অথৈ জলে হাবুডুবু খাওয়া ওলসেন রেড ডেভিলদের একপ্রকার দুঃখই বলা চলে।

  • টনি ক্রুস (জার্মানি)

রিয়াল মাদ্রিদ ও জার্মান কিংবদন্তি টনি ক্রুসও একসময় ছিলেন ম্যানচেস্টার সিটির টার্গেট ফুটবলার। পাঁচটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতে অনন্য এক রেকর্ডের ভাগিদার এই মিডফিল্ডার মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার আগেই গুঞ্জন ছিল রেড ডেভিলদের শিবিরে যাবার।

তাঁকে ঘিরেই পরিকল্পনা সাজানোর মত কথাও রটেছিল ইউরোপের ফুটবল অঙ্গনে। তবে এ ইউনাইটেডের ব্যর্থতার তালিকায় তাঁর নামটিও জুড়ে যায়।

  • পিটার বিয়ার্ডসলি (ইংল্যান্ড)

নিউক্যাসেলের সাথে প্রায় তিন মিলিয়ন পাউন্ডের চুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পক্ষ থেকে পিটার বিয়ার্ডসলির জন্যে। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের পুনর্গঠনের সঙ্গী করতে চেয়েছিলেন পিটার বিয়ার্ডসলিকে।

তবে, অদ্ভুত কারণ মাত্র ১.৯ মিলিয়ন পাউন্ডে তিনি যোগ দেন লিভারপুলে। ইউনাইটেডের আক্ষেপের তালিকাটা বাড়িয়ে দিয়ে তিনি লিভারপুলের শিরোপা জয়ের সাক্ষী হন।

  • জর্ডান হেন্ডারসন (ইংল্যান্ড)

লিভারপুলের অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ড যার হাতে তাঁর একসময় আসার কথা ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে। জর্ডান হেন্ডারসন ছিলেন ফার্গুসনের প্রিয় খেলোয়াড়দের একজন।

তবে, ক্লাবে মেডিকেল কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে হেন্ডারসনের বিপক্ষে মত দেওয়ায় তাঁকে আর দলে পাননি ফার্গুসন। হেন্ডারসনের দৌড়ের ধরণ অধিক ইনজুরির কারণ হতে পারে বলে মত ছিল মেডিকেল কর্তাদের।

  • আর্লিং হাল্যান্ড (নরওয়ে)

এই সময়ে বিধ্বংসী স্ট্রাইকারদের একজন তরুণ আর্লিং হাল্যান্ড। বেশ কিছু ক্লাব তাঁকে নিজেদের পতাকাতলে নিয়ে আসার পায়তারা করেছিল। সে তালিকায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের নামও শোনা যাচ্ছিল, তবে তা বেশ মৃদু। তবে ২০১৯ সালে হাল্যান্ডকে দলে ভেড়াতে পারত ইউনাইটেড।

তৎকালীন কোচ ওলে গুনার সোলশায়ার হতে পারতেন অন্যতম হাতিয়ার। তবে না, আগ্রহের অভাবে হাল্যান্ড চলে যান বুরুশিয়া ডর্টমুন্ডে। আর এবারতো তিনি রীতিমত আতঙ্ক ছড়াবেন রেড ডেভিল রক্ষণে।

  • পল গ্যাসকোয়েন (ইংল্যান্ড)

আরও একজন ইংলিশ তারকা ফুটবলার পল গ্যাসকোয়েনে পূর্ণ শক্তিমত্তার যথাযথ ব্যবহার হয়ত করতে পারতেন স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন।

১৯৮৮ সালে গ্রীষ্মকালীন দলবদলে তাঁর সাথে ইউনাইটেডে একটা সংযোগের গুঞ্জন বেশ জোরালো ছিল। তবে ইউনাটেডের আশায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে তিনি চলে যান টটেনহামে।

  • করিম বেনজেমা (ফ্রান্স)

২০২১-২২ আসরের ব্যালন ডি’অর জেতার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে ফ্রেঞ্চ ফুটবলার করিম বেনজেমা। ক্রিশ্চিয়ানো  রোনালদো পরবর্তী সময়ে রিয়াল মাদ্রিদের দায়িত্বভার একা কাঁধে সামলেছেন বেনজেমা।

২০০৯ সালে যখন ক্রিশ্চিয়ানোকে বেঁচে দেওয়া সিদ্ধান্ত পাকা ছিল রেড ডেভিলদের ঠিক তখন তাঁর অবর্তমানে বেনজেমাকে দলে ভেড়ানোর পরিকল্পনা ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। তবে সে আশাও ভন্ডুল করে দেয় রিয়াল মাদ্রিদ। এরপরের বাকিটুকু তো বেনজেমার শ্রেষ্ঠত্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link