More

Social Media

Light
Dark

দুজনার দুটি পথ

একই মঞ্চের দু’টি ভিন্ন গল্প। মুদ্রার একপাশে একজন টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা, আরেকজন দলের হতাশা। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) পঞ্চদশ আসরে দুই দক্ষিণ আফ্রিকান তারকা ভ্যান ডার ডুসেন ও ডেভিড মিলারের গল্পটা এমন-ই। শিরোপা জয়ে গুজরাটের হয়ে অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ছিলেন মিলার। কিন্তু রাজস্থানের জার্সি গায়ে খেলার সুযোগটাই পর্যাপ্ত পাননি রসি ভ্যান ডার ডুসেন। মাত্র তিন ম্যাচেই শেষ হয়েছে এবারের আইপিএল আসর।

আইপিএলের দাপুটে ফর্মটা জাতীয় দলের জার্সিতেও টেনে এনেছেন মিলার। ভারতের বিপক্ষে সিরিজ; তাও আবার ভার‍তের মাটিতে। মাস দুয়েকের মত এখানেই তো তিনি ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালিয়েছেন। চেনা কন্ডিশনে এই দায়িত্বটাই এবার পালন করেছেন জাতীয় দলের জার্সিতে।

একপ্রান্তে ডুসেন দ্রুত রান বের করতে হিমসিম খাচ্ছে, ঠিক আরেকপ্রান্তে ব্যাট হাতে ঝড়ের শুরু মিলারের। মাত্র ২২ বলে তুলে নিলেন ফিফটি। খেললেন ৩১ বলে ৫ ছক্কা ও ৪ চারের বিধ্বংসী এক ইনিংস। ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ডও গড়লেন।

ads

তবু যেন কোথাও হারটা চোখ রাঙাচ্ছিল। ডুসেনের ব্যক্তিগত সংগ্রহ তখন ৩০ বলে ২৯! ওভারপ্রতি দরকার ১২+ রান। শ্রেয়াস আইয়ার সহজ এক ক্যাচ ছেড়ে দিলেন! ব্যাস, ঘুরে দাঁড়ানোর নতুন এক গল্প রচিত হল ডুসেনের ব্যাটে। রান নিতে হিমসিম খাওয়া ডুসেন মুদ্রার উল্টো পিঠটা দেখালেন পরক্ষণেই। সমালোচনার ঝড়টা রূপ নিলো প্রশংসায়।

পরের ১৬ বলে করলেন ৪৬ রান; চার ছক্কা আর পাঁচ বাউন্ডারি। হারের দায়টা যেখানে নিজের কাঁধে উঠত। সেখানে ৪৬ বলে ৭৫ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংসে মিলারকে ছাপিয়ে জয়ের নায়ক বনে গেলেন ডুসেন। একশোর নিচে স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করতে থাকা এই প্রোটিয়া তারকা ইনিংস শেষ করেছেন ১৬৩ স্ট্রাইক রেট নিয়ে।

মিলার ঝড় ছাপিয়ে ভাবনার বিপরীতে গিয়ে দিল্লীতে ক্রিকেটভক্তরা দেখলো দাপুটে এক প্রত্যাবর্তন। শেষ দশ ওভারে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডটাও করলো দু’জনে মিলে। শেষ দশ ওভারে আফ্রিকার প্রয়োজন ছিল ১২৬ রানের; ৫ বল বাকি থাকতেই সেই রান টপকে রেকর্ড গড়া জয় তুলে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।

ভারতের টানা ১২টি-টোয়েন্টি জয়। আর মাত্র এক ম্যাচ জিতলেই টানা সর্বোচ্চ টি-টোয়েন্টি জয়ের রেকর্ড হবে। কিন্তু সেই স্বপ্নটা ধূলিসাৎ করে দেন ডেভিড-ডুসেন জুটি। তাও আবার নিজেদের রেকর্ডগড়া জয়ে। ২১২ রানের লক্ষ্যমাত্রায় টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড; সেটাও কি-না ভারতের মাটিতে! যে দলটা ঘরের মাঠে তো অপ্রতিরোধ্য, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও লম্বা সময় ধরে হারের মুখ দেখেনি।

আইপিএলে প্রতি আসরেই উপেক্ষিত থাকা মিলার এবার উড়ন্ত ফর্মে ছিলেন। বনে যান দলের নিয়মিত মুখ। সেই যে ঘুরে দাঁড়ানো, এরপর থেকে রানের ফোয়ারা চলেছেন তিনি। ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পে মিলারের নামের পাশে যোগ হল আরেকটি দুর্দান্ত ইনিংস। বিপরীতে ধু্ঁকতে থাকা ডুসেন একই ম্যাচে দেখলেন মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। এই দুই প্রোটিয়া তারকার অবিশ্বাস্য এক জুটিতে দিল্লীতে হারের বোঝা মাথায় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ভারত।

এই দুই তারকার ঘাড়ে চড়ে নিজেদের ইতিহাসের অন্যতম সেরা রোমাঞ্চকর টি-টোয়েন্টি জয়টাই দেখলো কি দক্ষিণ আফ্রিকা? ঘরের মাটিতে ভারতকে ধরাশায়ী করে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই যেন ভিন্ন ইঙ্গিত দিল মিলার-ডুসেনরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link