More

Social Media

Light
Dark

কক্ষচ্যুত এক তারকা

২০০৬ সালে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ যে দলটা নিয়ে খেলতে গিয়েছিল সেই দলের তিনজন এখন বাংলাদেশ ক্রিকেটের মহাতারকা। সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। এছাড়া সেই দলের আরো পাঁচজন বাংলাদেশের জাতীয় দলের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন। যারা খেলেননি তাঁদের অনেকেই ঘরোয়া ক্রিকেটে সুনাম কুড়িয়েছেন। এছাড়া সেই দলে খেলা সিরাজউদ্দৌলা খাদেম এখন খেলেন পর্তুগাল জাতীয় দলে।

কিন্তু, সেই কাতারে সামিল হতে পারেননি রেজাউল ইসলাম রাজন। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সম্ভবত সবচেয়ে সম্ভাবনাময় সেই যুব দলের হয়ে বিশ্বকাপে এই স্পিনার ছয় ম্যাচ খেলে তুলে নিয়েছিলেন ছয় উইকেট। তবে এরপর আর রাজনের ক্রিকেট ক্যারিয়ারটা খুব বেশি লম্বা হয়নি।

শেষবার যখন ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছেন সেবারো আবাহনীর হয়ে খেলেছিলেন। তবে নিজেকে সেভাবে প্রমাণ করতে পারছিলেন না তিনি। সেই অনুর্ধ্ব-১৯ দল থেকেই সোহরাওয়ার্দী শুভ, শামসুর রহমান শুভ, মেহেরাব হোসেন জুনিয়র, ডলার মাহমুদ, রকিবুল হাসানরা বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন। এছাড়া সেই দলের নাবিল সামাদও ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত পারফর্মার।

ads

শুধু দলটার অন্যতম স্পিনার রেজাউল ইসলাম রাজনই কোথায় যেন হারিয়ে গেলেন। ২০১৩ সালে মাত্র ২৪ বছর বয়সেই নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ারটার ইতি টানেন। ঠিক কী কারণে এত দ্রুত খেলা ছেড়ে দিলেন সেটা নিয়ে অবশ্য কথা বলতে চাননা চিনি। শুধু বলছিলেন,’ সেটা তো অনেক বড় গল্প, আমি আসলে আর পেরে উঠছিলাম না।‘

২০১৩ সাল অবধি ঘরোয়া ক্রিকেটে টিকে থাকলেও খেলার সুযোগ পেয়েছেন সামান্যই। সাকিবের এক সময়কার সতীর্থ এখন অবশ্য টিভিতে সাকিবের বোলিং দেখে মুগ্ধ হন। ছোটবেলার সেই সাকিবকেও বুঝি মনে পড়ে যায়। এখন আমরা বল হাতে যেই স্মার্ট সাকিবকে দেখি সেটা নাকি বয়সভিত্তিক দলে থাকতেই টের পেয়েছিলেন তিনি। সেই সময়েই নাকি বল হাতে এমনই সব ক্যারিশমা দেখাতেন সাকিব।

ওদিকে মাঠের ক্রিকেটটা ছাড়লেও রাজনের কাজ এখনও ক্রিকেট নিয়েই। নিজে সাকিব হতে না পারলেও আগামী দিনের সাকিবদের খুঁজে বের করার দায়িত্ব তাঁর কাঁধেই। অনেকদিন ধরেই লোকাল স্পিনারদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছিলেন। তবে ক্রিকেট বোর্ড থেকে সেভাবে  তাঁকে ব্যবহার করা হয়নি কখনো।

এবার অবশ্য সুযোগ এসেছে কোচ হিসেবে কাজ বড় পর্যায়ে কাজ করার, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অধীনে এবার হঠাৎই ডাক পড়েছে তাঁর, স্পিনারদের ক্যাম্পে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে হঠাতই স্পিনার সংকটে পড়েছিল বাংলাদেশ। এরপরই মিরপুরে লোকাল স্পিনারদের নিয়ে একটি বিশেষ ক্যাম্পের আয়োজন করেছে বিসিবি।

আর সেই ক্যাম্পে লোকাল স্পিনারদের নিয়ে কাজ করছেন বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ। হেরাথে সহকারী হিসেবে আছেন স্থানীয় কিছু কোচও আছেন। তাদেরই একজন হিসেবে আছেন রাজন।

মিরপুরে ৩২ জন স্পিনারকে নিয়ে চলছে রঙ্গনা হেরাথের চারদিনের বিশেষ স্পিনিং ক্যাম্প। আর সেই ক্যাম্পেই হেরাথের সহকারী কোচ হিসেবে আছেন রাজনও। এই ক্যাম্প থেকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য স্পিনার তৈরি করে রাখতে চান রাজনরা।

তাঁর বয়সভিত্তিক দলের বন্ধুরা এখন অনেকেই ক্রিকেটের মহাতারকা। তবে সেসব নিয়ে রাজনের মনে আক্ষেপ নেই। পুরো দায়টা তিনি নিজের উপরই নিয়েছেন। তবে হার মানতেও রাজি নন তিনি। কোচ হিসেবে হতে চান সেরাদের একজন। একদিন বাংলাদেশ দলের কোচ হিসেবে কাজ করার লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link