More

Social Media

Light
Dark

‘মাতারা’ বেয়ারস্টো

চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে জয়াসুরিয়ার সেই তাণ্ডব ইনিংসটা মনে পড়লো। ২০০৮ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) চেন্নাইয়ের বিপক্ষে ৪৮ বলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের ওপেনার সনাথ জয়াসুরিয়া ১১৪ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলেছিলেন। ওই ইনিংসে হাঁকানো ১১ ছক্কার ৭টি হাঁকিয়েছিলেন পাওয়ারপ্লেতে। আইপিএলে পাওয়ারপ্লেতে সর্বোচ্চ ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ডটা প্রায় ১৪ বছর যাবত নিজের নামে করে রেখেছিলেন এই লঙ্কান মারকুটে তারকা।

তবে এবার সেই রেকর্ডে ভাগ বসেছে। আইপিলের পঞ্চদশ আসরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে খেলতে নেমে পাওয়ারপ্লেতেই সাত ছক্কা হাঁকান পাঞ্জাব কিংসের ওপেনার জনি বেয়ারস্টো। মাতারা হারিকেনের মত সেঞ্চুরির দেখা না পেলেও ২৯ বলে ৬৬ রানের তাণ্ডব ইনিংস খেলেন এই ইংলিশ তারকা।

পঞ্চদশ আসরটা ব্যাটে বলে ঠিক মিলছিল না বেয়ারস্টোর। প্রত্যাশা অনুযায়ী মারকাটারি ব্যাটিংটা তিনি করতে পারছিলেন না। বড় ইনিংস নেই, টি-টোয়েন্টি সুলভ ব্যাটিংয়ের দেখা নেই – বেয়ারস্টোর ব্যর্থতায় পাঞ্জাব কিংসের মুখ থুবড়ে পড়ার চিত্রটাও ছিল স্পষ্ট। প্রতি ম্যাচেই শুরুতেই উইকেট দিয়ে আসছেন তিনি। বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলতেও হিমসিম খাচ্ছিলেন।

ads

প্রথম সাত ম্যাচের চারটিতেই ফিরেছেন এক অঙ্কের ঘরে। বাকি তিন ম্যাচে কোনোমতে দুই অঙ্কে পা দিলেও যেতে পারেননি বেশিদূর। সব মিলিয়ে পাঞ্জাব কিংসের হয়ে এবারের আসরটা ছিল এই ইংলিশ ওপেনারের জন্য চরম হতাশার। তবে ব্যর্থতার বেড়াজাল ছিড়ে অবশেষে তিনি পেয়েছেন আলোর দেখা। প্রথম সাত ম্যাচে হতাশায় মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়লেও – গেল দুই ম্যাচেই তুলে নিয়েছেন দুই ফিফটি।

রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে ৫৬ রানের অসাধারণ এক ইনিংসের পর ব্যাঙ্গালোরের বিপক্ষে খেলেছেন ৬৬ রানের ঝড়ো এক ইনিংস। বহুদিন বাদে দেখা মিলল বেয়ারস্টোর স্বভাবসুলভ এক ইনিংসের। দীর্ঘসময় ব্যাট হাতে নিষ্প্রভ এই ইংলিশ তারকাও ছিলেন ফর্মে ফেরার অপেক্ষায়। টানা দুই ফিফটিতে অবশেষে যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারছেন বেয়ারস্টো।

গেল কয়েক আসর ধরেই খেলছিলেন সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে। অধারাবাহিকতার কারণে পুরো মৌসুম খেলা হয়নি কোনো আসরেই। পঞ্চদশ আসরের মেগা নিলামে বেয়ারস্টোকে ৬.৭৫ কোটি রুপিতে দলে ভেড়ায় পাঞ্জাব কিংস। চড়ামূল্যে বিকলেও পারফরম্যান্সে তার ছিটেফোঁটাও দেখা মিলেনি। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে যে উড়ন্ত ফর্ম দেখা যায় – আইপিএলের মঞ্চে সেই ফর্ম কিংবা ধারাবাহিকতা তিনি কোনো আসরেই সেভাবে দেখাতে পারেননি।

এবারের আসরটা ছিল চরম হতাশার। টানা ব্যর্থতায় ভাসছিলেন দিশাহীন সাগরে। খারাপ অবস্থা কিছুতেই কাটিয়ে উঠতে পারছিলেন না। তবে টিম ম্যানেজমেন্ট ঠিক ভরসা রেখেছিল এই ইংলিশ তারকার উপর। সামর্থ্য আছে বলেই ভরসা – আর সেই ভরসার প্রতিদান দিলেন শেষভাগে এসে। পর পর দুই ফিফটিতে অন্তত ব্যর্থতা কাটিয়ে রানে ফিরতে পেরেছেন তিনি।

বেয়ারস্টোর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে এখন প্লে অফের স্বপ্ন দেখছে পাঞ্জাব কিংস। কাগজে কলমে এখনও প্লে অফে যাওয়ার সুযোগ আছে দলটির। এর জন্য জিততে হবে পরের দুই ম্যাচেই। আর প্লে অফে রাস্তাটা সহজ করতে হলে ওপেনিংয়ে এই ফর্ম ধরে রাখতে হবে বেয়ারস্টোকে।

শুরুটা মন্দ হলেও শেষটা রোমাঞ্চকর হতে পারে। পরের দুই ম্যাচে দুই ভাল ইনিংস মুছে দিতে পারে বেয়ারস্টোর শুরুর ব্যর্থতা। সেক্ষেত্রে হয়তো এই দফায় তাঁর ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্যারিয়ারটা ভরাডুবি থেকে বাঁচবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link