More

Social Media

Light
Dark

রদ্রিগো দ্য সুপার সাব!

অতিরিক্ত সময়ে আবারও আক্রমণে রিয়াল মাদ্রিদ। এবার ভিনিসিয়াস জুনিয়রের ব্যাকহিল করা বল নিয়ে রদ্রিগো গোয়েজ গোললাইনের দিকে খানিকটা এগিয়ে গেলেন। এরপর ঠিক পেনাল্টি স্পটের আশেপাশে থাকা করিম বেনজেমার কাছে এগিয়ে দিলেন বল। ততক্ষণে সেভিয়ার রক্ষণে আরও একবার ছেঁদ হয়ে গেছে। বেনজেমা দু’জনকে কাটিয়ে বল জড়িয়ে দিলেন জালে। রুদ্ধশ্বাস এক জয়!

এর আগে অবশ্য রদ্রিগো রিয়ালের হয়ে প্রথম গোলটা করেছিলেন সেভিয়ার বিপক্ষে। বদলি নেমে। রিয়াল তখন পিছিয়ে ২-০ গোলে। লা-লিগার টেবিলের দুই শীর্ষ দলে মধ্যকার খেলা। স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজনা বেশ অনুভব করার মতই ছিল। আর সেভিয়ার ঘরের মাঠে রিয়াল খানিক কোনঠাসাই ছিল। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এডওয়ার্ড কামাভিঙ্গার পরিবর্তে আনচেলত্তি মাঠে নামান রদ্রিগোকে।

নির্ঘাত কোন গোপন মন্ত্র দিয়ে পাঠিয়েছিলেন তাঁকে। নামার মিনিট চারেকের মাথায় রদ্রিগো খুঁজে পায় জালের ঠিকানা। যে রিয়াল প্রথমার্ধে পাত্তাই পায়নি সেভিয়ার কাছে সে রিয়ালের মানসিকতার পুরোটাই যেন বদলে দেন রদ্রিগো গোয়েস। আবার নতুন উদ্যমে রিয়াল উদ্দীপ্ত। এবার চাপটা দিতে শুরু করে রিয়াল। ফলাফল ২-০ গোলে পিছিয়ে থেকে ৩-০ গোলের জয়।

ads

এই মোমেন্টাম, এই যে দলের মাঝে মানসিক চাঙ্গাভাব ঢেলে দেওয়া, এ কাজটা নিত্যদিনের রুটিনে যেন পরিণত করে ফেলেছেন রদ্রিগো। এই যেমন সেভিয়ার বিপক্ষের ম্যাচের দিন পাঁচেক আগেই এমন কাজটা আবার করেছিলেন রদ্রিগো। তাও আবার ইংলিশ ক্লাব ফুটবলের পরাশক্তি চেলসির বিপক্ষে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে যখন রিয়ালের বিদায় প্রায় নিশ্চিত ঠিক তখনই আবারও বদলি হয়ে নামা রদ্রিগোর বাজিমাত।

তবে রদ্রিগোর সে গোলের থেকেও বেশি সেদিন প্রশংসা কুড়িয়েছিল লুকা মদ্রিচের দূর্দান্ত পাস। বুটের বাইরের দিক থেকে বাড়ানো সে পাস যেন ভিঞ্চি কিংবা পিকাসোর হাতে আঁকা ছবি। অথবা ধরুণ পিরামিডের মত আশ্চর্যজনক এক শিল্পকল্প। ব্যাখ্যাতিত তবু অদ্ভুত সুন্দর। কিন্তু সে পাসের মাহাত্ম হয়ত ফিঁকে হয়ে যেত, সে পাস নিয়ে হত না কোন আলোচনা, হলেও তা অতিসামান্য।

সে পাসের পূর্ণতা যেন এসেছিল রদ্রিগর পা থেকে। মদ্রিদের সেই দূর্দান্ত পাস পড়তে পারাও তো শিল্পের থেকে কোন অংশেই কম নয়। তবে আলোচনার বিষয় রদ্রিগোর এমন অন্তর্ভুক্তি। রদ্রিগোর সামর্থ্যের পূর্ণ ব্যবহারটাই যেন করছেন ডন কার্লো আনচেলত্তি। তিনি জানেন ঠিক কখন এবং কোন সময় তাঁকে মাঠে নামাতে হবে। তবে মাঠে ঠিক নামানোর কাজটা করে দেন আনচেলত্তি। তবে মাঠের যে তাঁর সামর্থ্যের প্রমাণ রাখছেন রদ্রিগোর তাঁর সম্পূর্ণ কৃতীত্ব তাঁর নিজেরই।

তিনি জানেন তাঁকে দল বিপদের মুখেই ঠেলে দেয়। তিনি জানেন তাঁর দল তাঁর থেকে প্রত্যাশা করে। ২১ বছর বয়সী একজন তরুণ দলের চাহিদা বুঝে নিজেকে মেলে ধরছেন এটাই কি খুব কম কিছু? না অবশ্যই না। তবে তাঁর থেকেও বড় বিষয় তিনি হয়ত নিজেকে গড়ে তুলছেন একজন সুপার সাব হিসেবে।

ফুটবলে এমন ক্যারিশম্যাটিক খেলোয়াড়দের কদর আছে। কেননা এরাই তো ম্যাচ দলের পক্ষে এনে দেন, এরাই তো ক্লাচ করে ম্যাচ জেতান। যখন সকল কিছু বিপক্ষে যেতে থাকে তখন রদ্রিগোরাই তো নিজেদের চাহিদাটা বাড়িয়ে নেন। তাঁরা প্রতিপক্ষের সব স্বপ্ন দুমড়েমুচড়ে দেন।

যখনই প্রতিপক্ষ ভাবতে শুরু করে এই বুঝি এলো জয়, তখন রদ্রিগোরা বলেন, ‘সবুর করুণ, আমি তো ফুরিয়ে যাইনি।’ সবাই যেখান থেকে ভাবেন শেষের কথা ঠিক সেখান থেকে রদ্রিগোরা নতুন করে শুরু করার পরিকল্পনা করেন। এভাবেই তো সাদামাটা খেলোয়াড় বনে যান ‘সুপার সাব’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link