More

Social Media

[ivory-search id="135666" title="Post Search"]
Light
Dark

দলছুট একজন ইরফান শুক্কুর

তিনি বেশ সুদর্শন। প্রথম দেখায় সিনেমার নায়ক ভেবে বিভ্রম হতে পারে। তাই, সহজেই ভিড় থেকে তাঁকে আলাদা করা যায়। কিন্তু, শুধু ক্রিকেটার হিসেবে আসলে আলাদা করার জো নেই।

কেউ বলেন তিনি গড়পড়তা মানের ক্রিকেটার। কেউ বলেন তাঁর মধ্যে সম্ভাবনা আছে। সে যাই হোক না কেন ঘরোয়া ক্রিকেটে কেউই তাঁকে এড়াতে পারেন না। বলছিলাম ইরফান শুক্কুরের কথা। ঘরোয়া ক্রিকেটে খোঁজ খবর যারা রাখেন তাঁদের কাছে নামটা একদমই অপরিচিত নয়।

তাঁকে তরুণ মনে করলে ভুল করলেন। বাংলাদেশের ক্রিকেট পাড়ায় তিনি আছেন আজ প্রায় এক যুগ হতে চললো। বয়সও কম নয়, ২৮ পার হয়ে গেছে। যদিও, কখনও জাতীয় দলের ত্রিসীমানায় আসেননি।

ads

ইরফান শুক্কুরের প্রসঙ্গ আসলেই সবার আগে বলতে হয় ২০১৯ সালের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের কথা। সেই আসরের ফাইনালে রাজশাহী র‌য়্যালসের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন। তাঁর ৫২ রানের ইনিংসের সুবাদে রাজশাহী ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রথমবারের মত বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন হয়।

এরপর বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপেও ফর্মে ছিলেন। পরে কোভিড কালে আয়োজিত প্রেসিডেন্টস কাপেও ব্যাট হাতে ভাল করেছিলেন।  তবে, সর্বশেষ বিপিএলে খুব একটা ম্যাচ খেলার সুযোগই পাননি। পাবেন কি করে, দলে যে ছিলেন জাতীয় নুরুল হাসান সোহান।

গোটা ক্যারিয়ার জুড়েই অবশ্য ইরফানকে এই সংকট মোকাবেলা করতে হয়েছে। কারণ, এই সময়ে ঘরোয়া কিংবা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের সফল ব্যাটসম্যানদের অনেকেই উইকেটরক্ষ। এই তালিকায় মুশফিকুর রহিমের মত অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান যেমন আছেন, তেমনি লিটন দাসের মত নান্দনিক ব্যাটসম্যানও আছেন।

সোহান তো আছেনই, জাতীয় দলের বাইরে থাকা এনামুল হক বিজয়, মোহাম্মদ মিঠুনও উইকেটরক্ষক। আর বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান ইরফান শুক্কুর ব্যাট ও করেন টপ অর্ডারে। এই বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে নির্বাচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করাটা খুবই কঠিন।

আর ইরফানের ক্ষেত্রে তাঁর বয়সটা বড় একটা ফ্যাক্টর। তাঁর চেয়ে বরং জাতীয় দলের হয়ে একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা জাকির হাসানকে ঘিরে বেশি আগ্রহ থাকে। কারণ, জাকিরের বয়স মাত্র ২৪। জাকিরের পেছনে বিনিয়োগ করলে, যতটা সময় তিনি সার্ভিস দিতে পারবেন, সেটা হয়তো ইরফান শুক্কুর পারবেন না।

ইরফান অবশ্য সর্বশেষ বিপিএল দলে জায়গা ধরে রাখার মত পারফরম্যান্সও করতে পারেননি। যে চার ম্যাচে খেলেছেন সেখানে করেছেন মাত্র ২৯ রান। ফলে দল তাকে নিয়ে এগোতে পারেনি খুব বেশি।

সব মিলিয়ে ইরফান বরাবরের মতই আলোচনার বাইরে। তবে, লড়াই করা থামাননি। তবে সব লড়াইয়ের গন্তব্য জাতীয় দল হয় না।

আসলে, ইরফান বরাবরই লড়াকু। প্রবল জিদটা সেই কৈশোর থেকেই নিজের মধ্যে আছে তাঁর। বাংলাদেশের বয়স ভিত্তিক কাঠামো থেকে উঠে এসেছেন তিনি। ২০১০ সালের অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপটা দিব্যি খেলতে পারতেন। কিন্তু, ফিটনেস ইস্যুতে বাদ পড়েন। প্রবল পরিশ্রম করে ফিটনেস ফিরে পেয়ে পরে ঘরোয়া ক্রিকেটে মনোযোগী হন ইরফান।

তাঁর সতীর্থ সৌম্য সরকার সেই বিশ্বকাপ খেলে পরে জাতীয় দলে আসেন। কিন্তু, যুব বিশ্বকাপ কিংবা জাতীয় দলে ঠাঁই কোনোটাই ভাগ্যে ছিল না ইরফান শুক্কুরের। তিনি বরাবরই দলছুট, কিংবা পাদপ্রদীপের আড়ালে থাকা একজন। তাঁর লড়াইটাও চলে নীরবেই।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link