More

Social Media

[ivory-search id="135666" title="Post Search"]
Light
Dark

কেস্ট স্টাডি: ওপেনিং ক্রাইসিস

পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ওপেনিং নিয়ে বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে বাংলাদেশকে। আসলে ওপেনিং নিয়ে বাংলাদেশের সমস্যাটা অনেক আগের। তবে সেই সমস্যার চুড়ান্ত রূপ দেখা গিয়েছে পাকিস্তান সিরিজে। সিরিজের মাঝেই প্রায় মাঝরাতে নতুন এক ওপেনারকেও ডাকা হয়েছিল। সেই সংকট স্বাভাবিকভাবেই এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ। এরমাঝেই দরজায় কড়া নাড়ছে আফগানিস্তান সিরিজ।

প্রথমে একটু পিছনের ঘটনা গুলো মনে করা যাক। ওপেনিং পজিশনে এই ফরম্যাটটায় অনেকদিন ধরেই তামিমকে পাচ্ছিল না বাংলাদেশ। পাকিস্তান সিরিজও খেলননি এই ব্যাটসম্যান। আর এখন তো সাময়িক অবসরের ঘোষণাই দিয়ে দিয়েছেন তামিম। ফলে তাঁকে নিয়ে আলোচনা আপাতত তুলে রাখাই ভালো।

পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ওপেনিং পজিশনে দলের প্রথম পছন্দ ছিলেন নাঈম শেখ। নাঈম শেখ বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত ধারাবাহিক ভাবে রান করেছেন সেকথা সত্যি। তবে তাঁর স্ট্রাইকরেট নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন ছিল। নাঈম শেখ বিপিএলে ব্যাট হাতে ধারাবাহিক হতে না পারলেও, তিনি স্ট্রাইকরেটের সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন। ফলে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নাঈম শেখের আর দলে জায়গা পাওয়া কঠিন।

ads

পাকিস্তানের বিপক্ষে নাঈমের সাথে প্রথম দুই ম্যাচে ওপেন করানো হলো এতদিন টেস্ট খেলে আসা সাইফ হাসানকে দিয়ে। স্বাভাবিক ভাবেই সাইফ হাসান ব্যর্থ হয়েছেন। এরপর তৃতীয় ম্যাচের আগে হঠাত করেই রাতে বেলা দলে ডাকা হলো তরুণ ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনকে। ফলে ধরে নেয়া যাচ্ছিল শেষ ম্যাচে ওপেনিং করবেন ইমন। তবে তাঁকে আর কোন এক অজানা কারণে নামানো হয়নি। ফলে ইমনকে আর পরীক্ষা করেও দেখা হয়নি।

পারভেজ হোসেন  ইমনকে এখনো পরীক্ষা করা যাচ্ছেনা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ওপেনার ভাবা হয় ইমনকে। এছাড়া টি-টোয়েন্টি দলেও ঢুকে পড়েছিলেন। ফলে এই বিপিএলে রান করাটা ইমনের জন্য ও বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য ভীষণ প্রয়োজন ছিল। তবে রান করবেন কী, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে ম্যাচই খেলতে পারছেন না পারভেজ হোসেন ইমন।

কুমিল্লা পুরোদস্তুর ওপেনার বানিয়ে ফেলেছে মাহমুদুল হাসান জয়কে। জয়কে ওপেনার বানানোর প্রক্রিয়াটা অবশ্য শুরু করেছিল বাংলাদেশ দলই। পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে চট্টগ্রামে বসে মুমিনুল হক ঘোষণা দেন জয়কে তাঁরা ওপেনার হিসেবেই ভাবছে। ওপেনার জয় নিজেকে প্রমাণ করলেন নিউজিল্যান্ডের কঠিন কন্ডিশনে।

এরপর কুমিল্লার হয়ে চার ম্যাচে ওপেন করেছেন জয়। জয়ের ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছে সারাজীবন ওপেনই করেছেন তিনি। সবচেয়ে বড় কথা তাঁর ইনিংস গুলো চোখে লেগে থাকে। পাওয়ার প্লের পুরো ব্যবহার করতে পারেন বাড়তি রিস্ক না নিয়েই। চার ম্যাচে ৩১.৬৬ গড়ে ৯৫ রান করেছেন। আরো প্রশংসনীয় ব্যাপার তাঁর স্ট্রাইকরেট। ব্যাটিং করেছেন ১৩৫.৭১ স্ট্রাইকরেটে।

ফলে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও ইতোমধ্যেই নির্বাচকদের নজর কেড়েছেন মাহমুদুল হাসান জয়। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ওপেনিং পজিশনে বাংলাদেশের দুটি পজিশনই ফাকা। ওদিকে বিপিএলে বাংলাদেশের আরেক ওপেনার আছে দারুণ ফর্মে।

টেস্ট ক্রিকেটে লিটন দাস ছিলেন দারুণ ফর্মে। তবে রঙিন পোশাকে প্রেক্ষাপট ছিলেন একেবারেই বিপরীত। তবে বিপিএলে টেস্টের সেই ফর্ম দিরিয়ে এনেছেন লিটন দাস। কুমিল্লার হয়ে ফিরেই তিন ম্যাচের দুটিতেই চোখ ধাঁধানো ইনিংস খেলেছেন। তিন মক্সাচে ৩৩.৩৩ গড়ে করেছেন ১০০ রান। তিনি ব্যাটিং করেছেন ১৩৫.১৩ স্ট্রাইক রেটে।

সবিমিলিয়ে আফগানিস্তান সিরিজের আগে বাংলাদেশ দলের সামনে ওপেনার হিসেবে খুব বেশি নাম নেই। এই কয়েকজনের মধ্যে থেকেই বেঁছে নিতে হবে টি-টোয়েন্টি ওপেনার। এছাড়া এই সিরিজে যারা ডাক পাবেন তাঁরা স্বভাবিক ভাবেই বিশ্বকাপের পরিকল্পনায় ঢুকে যাবে। ফলে এই সিরিজের টি-টোয়েন্টি দলটা বেশ গুরুত্বপূর্ন।

সবমিলিয়ে বাকি ম্যাচ গুলোতেও লিটন ফর্ম ধরে রাখতে পারলে তিনি প্রথম পছন্দ হতে পারেন। এছাড়া নাঈম শেখ রান করলেও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের সাথে তিনি কোনভাবেই মানিয়ে নিতে পারছেন না। ফলে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে তাঁকে নিয়ে পরিকল্পনা করার কোন মানে নেই।

ওদিকে ইমন বিপিএলে ম্যাচ পেলে তাঁকে দেখা নেয়া যেত। সেক্ষেত্রে মাহমুদুল হাসান জয়ই এখন এগিয়ে থাকবেন। তবে ইমন যেহেতু দলে ছিলেন ফলে তাঁকে একেবারে বাদ দিয়ে দেয়াটাও অবিচার হবে।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link