More

Social Media

Light
Dark

ক্রিকেটের স্বার্থ দেখলেন টেলর

ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে ক্লাসিক ব্যাটসম্যানদের তালিকায় হয়তো তিনি থাকবেন না। তবে টেস্ট, ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টি তিন ফরম্যাটেই বিশ্বের সবচেয়ে কার্যকর ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি বেঁচে থাকবে।

যেকোনো কন্ডিশনে, যেকোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে রান করাই যার একমাত্র ধ্যান। নিউজিল্যান্ডকে টেস্ট ক্রিকেটে বিশ্বের সেরা বানানোর অন্যতম কারিগর রস টেলর। টেলর আসলে ক্রিকেটেরই মনীষী। তাইতো নিজের শেষ ম্যাচে মাঠে নামার আগে দলের হারের চেয়ে তাঁর কাছে বেশি মর্যাদা পেয়েছে টেস্ট ক্রিকেটের উন্নয়ন।

টেস্টে নিউজিল্যান্ডের সফলতম ব্যাটসম্যানদের একজন। সেই ব্রেন্ডন ম্যাককালামদের যুগ থেকে আজ কেন উইলিয়ামসনের বিশ্বসেরা ব্ল্যাকক্যাপস। এই দুই যগের সেতুবন্ধন ছিলের আমাদের এই ক্রিকেট মনীষী। অনেক তো হলো, ৩৭ বছরের জীবনে একমাত্র সঙ্গী ব্যাটটাকে এবার একটু বিশ্রাম দিতে চান। বাংলাদেশের সাথেই খেলবেন ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট ম্যাচ এমন ঘোষণা আগেই দেয়া ছিল।

ads

তাইতো হ্যাগলি ওভালে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেলরের শেষ ম্যাচের আগে এই ক্রিকেট মনীষী রচনা করলেন নতুন এক বানী। তিনি যে শুধু নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের না, বরং পুরো ক্রিকেট দুনিয়ার সেটাই আরেকবার মনে করিয়ে দিলেন। যাওয়ার আগে বুঝিয়ে গেলেন, তিনি চলে গেলেও তাঁর চেয়ে বেশি কিছু থেকে যাবে টেলরের না থাকা জুড়ে।

বাংলাদেশের বিপক্ষে মাউন্ট মঙ্গানুইতে প্রথম টেস্টে হেরে খুব একটা সুখকর অবস্থায় নেই নিউজিল্যান্ড। তাই মন খারাপ থাকারই কথা। তবে নিজেদের হারকে ছাপিয়ে রস টেলর দেখছেন ক্রিকেটের বৃহত্তর চিত্র। তিনি বলছেন বাংলাদেশের জয়টাই বেশি জরুরি ছিল টেস্ট ক্রিকেটের এগিয়ে যাবার জন্যে। এই ম্যাচ নিয়ে টেলর বলেন,’ “নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, আমার মনে হয় এটি (বাংলাদেশের জয়) বিশ্ব ক্রিকেটের জন্য ভালো। অবশ্যই আমরা হতাশ যে আমরা তেমন কোনো লড়াই করতে পারিনি। পুরো সময়টায় আমরা স্রেফ উড়ে গেছি। তবে আমার মনে হয়, টেস্ট ক্রিকেটের টিকে থাকার জন্য, বাংলাদেশের উঠে আসা প্রয়োজন।”

এছাড়া নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের এই পারফর্মেন্সকেও বেশ প্রশংসা করেছেন তিনি। তিনি মনে করেন এই জয় বাংলাদেশকে বিদেশের মাটিতে আরো ভালো খেলতে সাহায্য করবে। বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেটে আরো অনেকদূর এগিয়ে যাবে এই আত্মবিশ্বাসকে জড়িয়ে ধরে। বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে তিনি বলেন,’ “এই জয় থেকে ওরা অনেক আত্মবিশ্বাস পাবে, শুধু এই সফরের জন্য নয়, আগামী কয়েক বছরে নিজেদের সব সফরের জন্যই আত্মবিশ্বাসী হবে ওরা।”

তবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ও নিজের ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট ম্যাচে একচুলও ছাড় দিতে রাজি নন টেলর। প্রথম টেস্ট হারের জবাবটা দিতে চান বাইশ গজেই। জানিয়েছেন হ্যাগলি ওভালে ব্যাটসম্যানদের দিতে হবে কঠিন পরীক্ষা। দ্বিতীয় টেস্টের ভেন্যু নিয়ে তিনি বলেন,“এই মাঠ আমরা খুব ভালোভাবে চিনি। আমার মনে হয়, মাউন্টে (আগের টেস্টের ভেন্যু) কীভাবে খেলা উচিত, আমরা এখনও তা বুঝে ওঠার চেষ্টা করছি। কিন্তু এখানকার উইকেট সম্পর্কে আমাদের ধারণা অনেক বেশি। আমার মনে হয়, এখানে বাউন্স থাকবে ও ক্যারি ভালো থাকবে পুরো সময়ই। অনেক ঘাস থাকবে এখানে।”

হ্যাগলি ওভালের উইকেট নিয়ে বলেন, ‘বোলারদের জিভে জল চলে আসার মতো উইকেট থাকবে। ব্যাটিংয়ে আমাদের আরও বেশি নিবেদন দেখাতে হবে গত টেস্টের চেয়ে। তবে আমাদের ব্যাটাররা এই কন্ডিশনে অনেক অভ্যস্ত, বোলাররাও।’

এছাড়া নিজের শেষ টেস্ট ম্যাচে টেলরের পরিবার ও বন্ধুদের জন্য বাড়তি কিছু করতে চান এই ব্যাটসম্যান। তিনি বলেন,”তাঁরা (পরিবার ও বন্ধুরা) আমার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের একটা বড় অংশ। আর আমার সন্তানরাও এখন আমার খেলা কিছুটা দেখেছে। এই ক্রিকেটের কারণে আমি অনেক কিছুই পেয়েছি। তবে সব ভালোরই তো একটা শেষ আছে, আমার জন্য সেই শেষের সময়টা এসেছে। আর কয়েকটা ওয়ানডে ম্যাচ, এরপর হয়তো জীবনের নতুন কোন অধ্যায় শুরু হবে।“

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link