More

Social Media

[ivory-search id="135666" title="Post Search"]
Light
Dark

ডুবে যাব সেই সাগরে

সার্জিও অ্যাগুয়েরোর ‘মিডল নেম’ কিন্তু লিওনেল,মেসির নামের প্রথম অংশ।দুজনের মধ্যে এটাই একমাত্র মিল নয়।দুজনের ভাল বন্ধুত্বের কথা সবার জানা। বয়সভিত্তিক বিশ্বকাপে এক রুম শেয়ার করা থেকে তাঁর শুরু, এমনটাই সবাই ধরে নেয়।

কিন্তু আসলে তা নয়।

গল্পের শুরু আরো আগে থেকে। অ্যাগুয়েরো যেদিন ইন্দিপেন্দিয়ান্তের হয়ে অভিষেকের অপেক্ষায় মেসি তখন টিভিতে ধারাভাষ্যকারের মুখে শুনছেন মাত্র ১৫ বছর বয়সে নেমে রেকর্ড করতে যাচ্ছে তারই নামের আরেকটি ছেলে।আগুয়েরো সেদিন কার রেকর্ড ভেঙ্গেছিল জানেন, কে হবে আর ডিয়েগো ম্যারাডোনা বাদে!

ads

মেসি-আগুয়েরোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত বোধহয় ছিল একসাথে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ জেতা। কারণ দু’জন যখন উৎযাপনে ব্যস্ত আর্জেন্টিনায় তখন দুর্ঘটনায় মারা গেলেন তাদের বাল্যকালের এক বন্ধু। তাঁকেই বিশ্বকাপটা উৎসর্গ করে দিল দুই বন্ধু।

ছোটবেলায় অ্যাগুয়েরোর প্রিয় কার্টুন ছিল জাপানিজ ওয়ানপাকু আমুকাশি কুমকুম। সারাদিনই এই কার্টুনের চরিত্রগুলোকে অনুকরণ করতে সে আর চিল্লাতো কুমকুম বলে। একদিন অ্যাগুয়েরোর দাদা কুমকুমকে একটু পরিবর্তন করে বলল কুন-কুন। আর সেভাবেই আগুয়েরো হয়ে গেল সার্জি কুন অ্যাগুয়েরো।

শুধু কার্টুন না, কুনের ফুটবলটাও চোখে পড়তে লাগল সবার। মাত্র পনেরোতে অভিষেক, তাও ম্যারাডোনার রেকর্ড ভেঙে। বুঝতেই পারার কথা তার ট্যালেন্টটা সহজাত। কুনের বাবা স্থানীয় ক্লাবে খেলত ফুটবল। বাবা যখন মাঠে খেলত,আগুয়েরো খেলত মাঠের পাশে, বর্ডার লাইনে। একদিন বাবাকে নির্দেশ দিচ্ছিল কুন, ‘যে তুমি ওদিকে যাও, এই পাসটা ভুল ছিল, শটটা নিলে ভাল করতে।’

মানে অ্যাগুয়েরো ছিল ওর বাবার কোচ! এই জিনিসটা চোখে পড়ে এক রুটি ব্যবসায়ীর।মনে মনে আওড়াতে লাগলেন এই ছেলে ফুটবল বুঝে তো বেশ। লোকটা রুটি বিক্রেতা কিন্তু পাকা জহুরি। মুক্ত ঠিকই চিনেছিল। কুনের ফুটবল ক্যারিয়ার উত্থানে এই ব্যবসায়ীর অবদান বেশ।

ইন্দিপেন্দিয়ান্তে থেকে একলাফে কুন চলে আসল স্পেনে, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে। ট্রান্সফার ফি-টাও ছিল রেকর্ডময়।সিমিওনের অধীনে আগুয়েরো ছিল আক্রমনে সেকেন্ড ফিডল,মানে দ্বিতীয় বাদক।তাহলে প্রথমজন কে ছিল? হ্যাঁ, এল নিনো ফার্নান্দো তোরেস। অ্যাগুয়েরো তোরেসে এতই মুগ্ধ হয়েছিল যে ডানহাতে তোরেসের নামটা ট্যাটুও করে ফেলেছিল।

শব্দটা ছিল ‘তেঙওয়ার’, তোরেসের নামের এই ভার্শনটা লর্ড অফ দ্যা রিংসের লেখক জে জে টলকিনের লেখা এলভিশ ভাষা থেকে ধার করা।তোরেসের পরে কুন জুটি বেধেছিল আরেক দক্ষিণ আমেরিকান গ্রেট ডিয়েগো ফোরলানের সাথে।কুনের পরের স্টপেজ ছিল ইংল্যান্ডে,ধনীক্লাব ম্যানচেস্টার সিটিতে।

অ্যাগুয়েরোর সিটি গল্প একটা রুপকথা। অতিরিক্ত ড্রামাটিক কিছু। ইউনাইটেডের সামনে দিয়ে লিগ জিতায়ে দিল সিটিকে। বালোতেল্লির মেবি একমাত্র অ্যাসিস্ট ছিল সেটি সেবার লিগে। আসলেই রুপকথা। কুইন্স পার্কের বিরুদ্ধে সেই গোল আগুয়েরোকে বানিয়ে দিয়েছে রুপকথার নায়ক, সুপার হিরোও বলা যায়।

ইউনাইটেড সাপোর্টার হিসেবে সিটি-কুন পার্টনারশিপ গল্পটা এড়িয়ে যাচ্ছি। কিন্তু একজন ফুটবল সাপোর্টার হিসেবে ওই ২০১২ লিগ না উল্লেখ করে পারলাম না।

অ্যাগুয়েরো বার্সায় গেল সিটি থেকে। সাথে নামের আগে কিংবদন্তি শব্দটাকে লাগিয়ে নিয়েছিল। ভাল করবে এটাই প্রত্যাশা ছিল সবার। কিন্তু হল না কিছুই। থেমে যেতে হচ্ছে শুরুর আগেই। বিদায় সার্জিও, ফুটবলের বাইরের জীবনের জন্য শুভকামনা , ফুটবল তোমাকে মিস করবে ভীষণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link