More

Social Media

Light
Dark

সিডনি টেস্ট ২০০৮: আম্পায়ারিং নাটক

২০০৮ সাল। সিডনি টেস্ট। সেই সিরিজে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কের মধ্যে (অনিল কুম্বলে আর রিকি পন্টিং) ভদ্রলোকের চুক্তি হয়েছিল যে লো ক্যাচ এর ক্ষেত্রে তারা ফিল্ডারের সততার উপরেই বিশ্বাস রাখবেন। অর্থাৎ, কোনো ফিল্ডার যদি লো মাটি ঘেঁষা ক্যাচ ধরে দাবি করেন যে তিনি ক্যাচটি সঠিকভাবে ধরেছেন, তার হাতে আসার আগে বলটি বাউন্স করেনি, তাহলে আম্পায়ার আর ব্যাটসম্যানকে সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে।

কেননা লো ক্যাচার ক্ষেত্রে অনেকসময় তৃতীয় আম্পায়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না, সঠিক অ্যাঙ্গেল পাওয়া যায়না, অনেকসময় সঠিক ক্যাচকেও মনে হয় বাউন্স হয়েছে। আর ফিল্ডার অবশ্যই ফিল করতে পারেন বলটি নিচে নামার সময় তার হাতে এসেছে না ড্রপ খেয়ে উঠবার সময় হাতে এসেছে।

বলাই বাহুল্য, সেই সময়ে আম্পায়ার্স কল ব্যাপারটার প্রচলন হয়নি।

ads

চতুর্থ ইনিংসে সৌরভ গাঙ্গুলিকে স্লিপে যে আউট দেওয়া হয়, সেটি মাইকেল ক্লার্ক ধরেন। টেলিভিশন রিপ্লে তে পরিষ্কার দেখা গেছে ড্রপ ক্যাচ। পন্টিং তার সতীর্থ ও উত্তরসুরী অধিনায়ক ক্লার্কের সাথে কথা বলে ক্লিন ক্যাচ বলে দাবি করেন ও চুক্তি অনুযায়ী ভারতকে সেটা মেনে নিতে হয়। এখানে তৃতীয় আম্পায়ারের কোনো ভূমিকা ছিল না।

গোটা ম্যাচে স্টিভ বাকনার আর স্টিভ বেনসন মিলে গোটা ম্যাচে ৯ টি ভুল সিদ্ধান্ত দেন। যার অধিকাংশই ভারতের বিপক্ষে.. সাইমন্ডসকে পরিষ্কার কট বিহাইন্ড দেওয়া হয়নি। দ্রাবিড়কে ভুল কট বিহাইন্ড দেওয়া হয় যেখানে বল প্যাডে লেগেছিলো। গাঙ্গুলির আউট তো জোচ্চুরির পরিষ্কার নিদর্শন অস্ট্রেলিয়ান দের তরফে।

কেননা মাইকেল ক্লার্ক নিজে ব্যাটিংয়ের সময় ফিল্ডারের কথা মেনে নিয়ে মাঠ ছেড়ে যেতে অস্বীকার করেছিলেন। এ ছাড়াও বাকিগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ভারত আর অস্ট্রেলিয়ার অন্য ইনিংস গুলিতে।

এই ম্যাচেই হয়েছিল হরভজন সিংহ আর অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস এর কুখ্যাত মাঙ্কিগেট অধ্যায়। তার সাথে এইভাবে ম্যাচ হেরে সফরকারী ভারতীয় টিম খুবই ক্ষুব্ধ হয়। অধিনায়ক কুম্বলে বলেছিলেন – যথার্থ ভাবেই – ‘একটাই দল ক্রিকেটের স্পিরিট মেনে খেলেছে।’

কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার যথারীতি কমেন্ট্রি বক্সে গর্জে ওঠেন। ক্লার্কের আউটের টেলিভিশন রিপ্লে দেখিয়ে বলেন – ‘তুমি পরিষ্কার আউট, তাও তুমি দাঁড়িয়ে আছো। আর নিজে ফিল্ডিং এর সময় তুমি বাম্প ক্যাচ ধরে দাবি করছো ব্যাটসম্যান আউট, এটা কোন দেশীয় সততা? ক্রিকেট কি তাহলে আর ভদ্রলোকের খেলা নয়?’

দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) দলের পাশে দাঁড়ায় আর তাদের চাপে পরের টেস্টে স্টিভ বাকনর আর বেনসনকে সরিয়ে দেওয়া হয়। যে টেস্টে ভারত ৭২ রানে জিতে প্রথম এবং এখনো অবধি একমাত্র এশিয়ান দল হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার দুর্গ পার্থে জেতার রেকর্ড করে।

অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ড পরপর ১৭ তম টেস্ট জয় আটকে যায়, (দ্বিতীয়বার ভারত এই কাজ করে দেখায়, ২০০১ ইডেনের পরে) এবং ১১ বছর পার্থে অপরাজিত থাকার রেকর্ড ও চূর্ণ হয়। অনিল কুম্বলে পার্থের এই জয়কে তার ক্যারিয়ার এর সেরা জয় হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link