More

Social Media

Light
Dark

পরিবর্তনে মিলবে পরিত্রাণ

ফেভারিট তকমা এবং কাগজে-কলমের শক্তপোক্ত দল নিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করে প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন ভারত। হিসাব-নিকাশ হয়েছিল ফাইনাল অবধি অনায়াসে চলে যাবার। তেমন আর বাঁধা কই ছিল গ্রুপে?

ওইতো পাকিস্তান আর নিউজিল্যান্ড একটু কষ্ট হবে জিততে তবে জিতে হয়ত যাবে। আর রইলো বাকি নবাগত নামিবিয়া, দূর্বল স্কটল্যান্ড এবং উদীয়মান আফগানিস্তান। অত বেশি সমস্যা হবে। এমনটাই হয়ত চিন্তা করেছিল ভারতের ক্রিকেট বোদ্ধারা থেকে শুরু করে ভক্ত-সমর্থক সকলে।

কিন্তু, তেমনটা আর হইলো কই? পাকিস্তানের কাছে হেরে গেলো দশ উইকেটে। সে কি লজ্জার হার! বিশ্বকাপের ইতিহাসের প্রথম পাকিস্তানের বিপক্ষে হারের গল্প সেটাই। সমীকরণের মারপ্যাঁচ এড়ানোর ম্যাচে আবার হেরে বসলো নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। যাহ! এখন তবে কি হবে?

ads

হবার অনেক কিছুই হওয়া বাকি। তবে অত সব হিসাবে না গিয়ে ভারতের এখন মূল ভাবনা আফগানিস্তানকে নিয়ে। তাঁর থেকেও বড় চিন্তা দলের একাদশ সাজানো নিয়ে। ভারত দল নিসঃন্দেহে ভরপুর একগাদা প্রতিভাবান খেলোয়াড় নিয়ে। কিন্তু ঠিক টিম হয়ে খেলাটা হচ্ছে না। কোথাও না কোথাও ঘাটতি থেকেই যাচ্ছ। ঠিকঠিক টিম কম্বিনেশনটার দেখা মিলছে না।

তাই হয়তো প্রশ্ন উঠেছে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে নিয়ে। তিনি কেন নেই দলে? তাঁর মতো অভিজ্ঞ ক্যাম্পেইনার জায়গা পাচ্ছেন না দলে সেটা একটু ভাবনার বিষয়। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দলে অশ্বিনের  অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাশিত। তাঁর অন্তর্ভুক্তিতে দলের এই বেহাল দশার উন্নতি সাধিত হতেও পারে। আশার মৃত্যু নেই।

ভারতের পরবর্তী ম্যাচ আফগানিস্তানের বিপক্ষে। আফগানিস্তান এখন পর্যন্ত খেলা তিন ম্যাচে জিতেছে দুই ম্যাচ। পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে আসিফ আলীর এক ওভারে মারা চার ছক্কায় ম্যাচটি হেরে যায় মোহাম্মদ নবীর নেতৃত্বাধীন আফগানিস্তান। কি দানবীন ব্যাটার আসিফ আলী। ধুকতে থাকা এই ভারতের বিপক্ষে নিশ্চই আফগানরা চাইবে একটা অঘটন ঘটিয়ে ফেলতে।

আফগানিস্তান ক্রিকেটের এই ক্ষুদ্র সংস্করণে আফগানিস্তার সমীহ করবার মত এক দল। তাঁরা নিজেদের সেই অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন বিশ্ব ক্রিকেটে। তাঁদের মোহাম্মদ নবী, রশিদ খান ও মুজিব-উর রহমানরা নিয়মিত খেলেছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের টি-টোয়েন্টি ফ্রাঞ্চাইজি লিগ। এই তিন খেলোয়াড় তাঁদের অভিজ্ঞতা নিঙরে দিচ্ছিন পুরো দলের মাঝে। যা যেকোন দলকে তাঁদেরকে নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে।

তাছাড়া তাঁদের উদ্বোধনী জুঁটি মোহাম্মদ শাহজাদ ও হযরতুল্লাহ জাজাই প্রচন্ড পরিমাণ মারকুটে এবং বিধ্বংসী। তাঁদের বিরুদ্ধে অশ্বিনের মতো একজন বোলারের খুব প্রয়োজন দেখা দিতে পারে ভারতের একাদশে। অশ্বিন তাঁর অভিজ্ঞতা এবং তাঁর স্কিলে নাজেহাল করে দিতে পারে আফগানিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ।

বরুণ চক্রবর্তীকে দেওয়া সুযোগ তিনি সত্যিকার অর্থে কাজে লাগাতে হয়েছেন ব্যর্থ। তিনি যে শুধু ব্যর্থ হয়েছেন তা নয়। তাঁর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা যে নেহাৎ অতি নগন্য তা স্পষ্টত বোঝা গিয়েছে তাঁর শরীরি ভাষায়। তাই তাঁর পরিবর্তে দলে অশ্বিনের অন্তর্ভুক্তি যেন এখন সময়ের দাবি।

কিন্তু ক্রিকেট পাড়ায় এক গুঞ্জন রটেছে। তা অবশ্য রটেছিল চার বছর পর জাতীয় দলে অশ্বিনে ফেরত আসার পর থেকেই। গত চার মাস যাবৎ হয়েছেন দলের ভ্রমণ সঙ্গী। তাঁর মতো একজন বিশ্বমানের স্পিনারের জায়গা হয়নি কোন ম্যাচের একাদশে। এতে যেন সেই পুরোনো গুঞ্জন আরো জোড়ালো হয়েছে। বিরাট কোহলি তাঁকে সম্ভবত দলে চাননি। সেই নানা কারণে একজন খেলোয়াড়কে দলে নাই-ই চাইতে পারেন একজন অধিনায়ক।

কিন্তু যখন প্রশ্ন বিশ্বকাপে টিকে থাকা নিয়ে, তখন কি অধিনায়ক তাঁর ব্যক্তিগত আক্রোশ কিংবা অপছন্দকে দূরে ঠেলে দলের দিক বিবেচনা করবে না? স্কিল এবং অভিজ্ঞতার দিক থেকে ভারত দলে অশ্বিনের চেয়ে ভাল বিকল্প এই মুহূর্তে নেই। তাই ভারত দলের তুরুপের তাস বনে যাওয়ার এক ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের। কিন্তু শেষমেশ অধিনায়ক তাঁর ইগো ঝেড়ে ফেলেন কি না তা দেখবার বিষয়।

তবে এই অশ্বিনের অন্তর্ভুক্তি ছাড়াও ভারতকে তাঁদের ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। দুই ম্যাচেই কলাপ্স করেছে এই তুখর ব্যাটিং লাইনআপ। তবে প্রথম ম্যাচের ধাক্কা সামলে নেয় ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলির ব্যাটে ভর করে। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের ব্যাটিং থামে ১১০ রানে। আইপিএলের এত অভিজ্ঞতা এবং প্রতিভার ফিকে হওয়া দেখা ছাড়া যেন কিছুই করার ছিল না।

এক্ষেত্রে ভারত পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে দুইটি। এক হার্দিক পান্ডেয়ার বদলে দলে সুরিয়াকুমার যাবদকে একাদশে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। যদি সুরিয়াকুমার পুরোপুরি ফিট থাকেন। অন্যদিকে রোহিত শর্মা খেলবেন ওপেনিং-এ। সেক্ষেত্রে ঈশান কিশান এবং সুরিয়াকুমার খেলবেন মিডেল অর্ডারে। ব্যাটার হিসেবে একাদশে থাকা হার্দিক নিজেকে ঠিক প্রমাণ করতে পারেননি। দুই ম্যাচে তাঁর সংগ্রহ ৩১ রান, ৩৫ বলে। যা প্রত্যাশা মেটাতে ব্যর্থ। সুতরাং তাঁর পরিবর্তে একজন প্রোপার মিডেল অর্ডার ব্যাটার জরুরী, যেহেতু তিনি বল হাতেও দলকে সার্ভিস দিতে ব্যর্থ।

মোটামুটি ধারণা করা যায় ভারত এই ধরণের পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামার সম্ভাবনা প্রখর। অন্তত জয় দরকার পরের ম্যাচে সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link