More

Social Media

Light
Dark

এ রোনালদো কে রুখবে কে!

দ্য থিয়েটার অব ড্রিমে এক উৎকন্ঠা বিরাজমান। দলকে উজ্জিবীত করতে স্লোগানের ডেসিবেল হয়ত ছাড়িয়েছে সহ্য মাত্রা। হারতে বসা ম্যাচে এসে সমতা। সময় তখনও বাকি মিনিট পনেরো। সুযোগ আছে তখনও বাকি। ফুটবলে কতকিছুই তো হয়।

শেষ মুহূর্তের গোলে কেও কেও জিতে নেয় শিরোপা কিংবা ড্র করে নেয় গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। তাইতো আশায় বুক বেঁধেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড সমর্থকেরা। শূন্য থেকে এক, এক থেকে হতে পারে তিন আর  একটি মাত্র গোলের দেখা মিললেই।

এলো সেই কাঙ্খিত গোল। এলো শেষে ম্যাচ জয়ের সুবাতাস। হারার মুখ থেকে ফিরে জয়ের স্বাদ নেহাৎ অমৃত থেকে কম কি আর? এলো তো এলো দলের সেরা খেলোয়াড় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মাথা থেকে। সে কি বুনো উল্লাস!

ads

অব্যশ দিনের শুরুটা রেড ডেভিলদের জন্যে ছিলনা। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের তৃতীয় গ্রুপ পর্বের ম্যাচে মুখোমুখি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও ইতালির ক্লাব আটলান্টা। ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার ইউনাটাইডের মাঠ ওল্ড ট্রাফোর্ডে। রেড ডেভিল সমর্থকরা হয়ত ভেবেছিলেন সহজেই জেতা যাবে ম্যাচ। ঠিক এমনটাই হয়ত ভেবেছিলেন কোচ ওলে গুনার সোলশায়ার। দু’একটা পরিবর্তনও এনেছিলেন এদিন।

কিন্তু ইতালির দলটির ছিল ভিন্ন পরিকল্পনা। এক জয় ও এক ড্র নিয়ে টেবিলের স্বস্তির জায়গায় অবস্থান করা আটলান্টার এদিনের পরিকল্পনার পুরোটা জুড়েই ছিল জয়। ছক আগে থেকেই কষে রেখেছিলেন জিয়ান গাসপেরেনি। সেই মোতাবেক শুরুর পনেরো মিনিটেই প্রথম আঘাত হানেন আটলান্টার অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার মারিও পালাশি।

ডেভিড জ্যাপাকস্তার বাড়ানো ক্রসে ট্যাপ ইনে বল জালে জড়ান গাসপেরেনি। তার ঠিক তের মিনিটের মাথায় ডিফেন্ডার মেরিহ ডেমিরাল কর্ণার থেকে বাড়ানো বলে দূর্দান্ত হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন।

শুরুতেই পিছিয়ে পড়া মার্কোস র‍্যাশফোর্ড, রোনালদো, ব্রুনো ফার্নান্দেজরা একের পর এক খাপছাড়া আক্রমণ চালাতে থাকলেও আটলান্টার জমাট রক্ষণ চিড়ে গোল আদায় করতে ব্যর্থ হয় তাঁরা। ২-০ তে পিছিয়ে ড্রেসিং রুমে যায় দু’দল। বিরতিতে কি এমন টোটকা দেয় সোলশায়ার অগোছালো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড গুছিয়ে নেয় নিজেদেরকে। শুরুর ভুলগুলো শুধরে নিয়ে অল আউট অ্যাটাকে চেপে ধরে আটলান্টাকে।

মার্কোস র‍্যাশফোর্ডের পায়ে থেকে আসে রেড ডেভিলদের প্রথম গোল ম্যাচের ৫৩ মিনিটে। ব্রুনোর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি আর সূক্ষ্ণ পাস থেকে র‍্যাশফোর্ডর গোল। এর আগে অবশ্য একটা সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেছেন এই মিডফিল্ডার। এক গোল খেয়ে আটলান্টা ফাউলের পসড়া নিয়ে হাজির হয়। বেশকিছু হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করেন ম্যাচ রেফারি।

ম্যাচে অনুজ্জ্বল ক্রিশ্চিয়ানো। তবুও চেষ্টা করে গেছেন রোনালদো। অলআউট অ্যাটাকে থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ৭৫ মিনিটে সমতা ফেরায় ডিফেন্ডার হ্যারি মাগুয়ের গোলে। প্রত্যাশার শুরু সেখান থেকেই। জয়ের স্বপ্ন দেখা সেখান থেকে শুরু হয় আবার নতুন করে। কিন্তু কে এনে দেবে সেই জয়? হারতে থাকা ম্যাচকে নিজেদের করতে কান্ডারি হবেন কে?

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো বনে গেলেন ত্রাণকর্তা, জয়ের কান্ডারী। দ্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ম্যান আবারো বনে গেলেন জয়ের নায়ক। পুরো ম্যাচের আক্ষরিক অর্থে নিষ্প্রভ থাকা ক্রিশ্চিয়ানোই শেষমেশ এনে দিলেন জয়। ম্যাচের ৮১ মিনিটে রেড ডেভিল লেফটব্যাক লুক শ এর বাড়ানো ক্রসে হেড করে বল জালে জড়ান ক্রিশিচ্যানো রোনালদো। এতেই জয় সুনিশ্চিত হয় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।

কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়। রুখবে কে ক্রিশ্চিয়ানোকে? নিজের খারাপ দিনেও যিনি দলকে এনে দেন জয়, ৩৬ বছর বয়সে এসেও পুরো নব্বই মিনিট খেলতে পারা রোনালদো আসলে কি হার মেনে নেবেন কোন ডিফেন্ডারের কাছে? কোথায় গিয়ে শেষ করবেন তিনি তাঁর ক্যারিয়ার? এটাও হতে পারে বিশাল বড় এক প্রশ্ন।

তবে যতদিন রয়েছেন লিওনেল মেসি আর ক্রিশ্চিয়ানো দল থাকবে নির্ভার, আর সমর্থকদের ফুটবল খোড়াক যে পুরোটাই মিটবে তা নিসঃন্দেহে বলা যায়। মেসি-রোনালদো দ্বৈরথ আর একটু প্রসারী হোক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link