More

Social Media

Light
Dark

হাফ ছেড়ে বাঁচল বাংলাদেশ

হারলে কোয়ালিফায়ার রাউন্ড থেকেই বিদায়, আর জিতলে বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে খেলার আশা বেঁচে থাকা। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের সাথে হোচট খাওয়ার পর আজ স্বাগতিক ওমানের বিপক্ষে এমন কঠিন সমীকরণ নিয়েই খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। তবে আজ আর হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়নি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলকে।

কোয়ালিফায়ার রাউন্ডে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক ওমানকে ২৬ রানে হারিয়ে এবারের বিশ্বকাপে প্রথম জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। ব্যাটে বলে অনবদ্য পারফরম করে জয়ের নায়ক সাকিব আল হাসান। ব্যাট হাতে ২৯ বলে ৪২ রানের ইনিংস খেলার পর বল হাতেও চার ওভারে ২৮ রান দিয়ে তিন উইকেট শিকার করেন এই অলরাউন্ডার।

আজ বল হাতে দুর্দান্ত ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমানও। চার ওভারে ৩৬ রান দিয়ে চার উইকেট শিকার করেন এই পেসার। একটি করে উইকেট পেলেও ইকোনোমিকাল বোলিং করে দলের জয়ে অবদান রেখেছেন মেহেদী হাসান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। এছাড়া ৫০ বলে ৬৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন নাঈম শেখ।

ads

১৫৪ রান তাড়া করতে নেমে শুরুটাই ভালো হয়নি ওমানের। তাসকিন আহমেদের খরুচে প্রথম ওভারের পর দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে বাংলাদেশ স্বস্তি এনে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। ৬ বলে ৬ রান করে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে ফিরে যান আকিব ইলিয়াস। তবে দলকে প্রথম সাফল্য এনে দিলেও বিস্ময়করভাবে ঐ ওভারে পাঁচটি ওয়াইড বল করেন মুস্তাফিজ।

১৩ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙলেও দ্রুত গতিতে রান তুলতে থাকে ওমান। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৩৪ রান যোগ করেন যতিন্দর সিং ও কাশ্যপ প্রজাপতি। ১৮ বলে ২১ রান করা প্রজাপতিকে ফিরিয়ে দিয়ে এই জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজ। তবে এর আগের বলেই জুটি ভাঙার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু যতিন্দর দেওয়া সহজ ক্যাচ মিস করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

৪৭ রানে এই জুটি ভাঙার পর তৃতীয় উইকেটে জিশান মাকসুদকে নিয়ে ৩৪ রান যোগ করেন যতিন্দর। ক্রমেই যখন এই জুটি বিপজ্জনক হয়ে উঠছিল তখনই বাংলাদেশ শিবিরে ত্রাতা হয়ে আসেন মেহেদী হাসান। ১৬ বলে ১২ রান করা মাকসুদকে মুস্তাফিজের ক্যাচ বানিয়ে ফিরিয়ে দেন এই স্পিনার।

এরপর উইকেটে থিতু হওয়া যতিন্দর সিংকে সাকিব আল হাসান ফিরিয়ে দিলে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। ৩৩ বলে ৪০ রান করে ফিরে যান এই ওপেনার। যতিন্দর যখন ফিরে যান তখনো ৪২ বলে ৬৪ রান প্রয়োজন ছিল ওমানের। শেষের দিকে দ্রুত উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১২৭ রান সংগ্রহ করে ওমান।

বাংলাদেশের বোলারদের ভিতর মুস্তাফিজুর রহমান চারটি ও সাকিব আল হাসান তিনটি উইকেট শিকার করেন। এছাড়া মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও মেহেদী হাসান একটি করে উইকেট শিকার করেন।

এর আগে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের শুরুটা আজও ভালো হয়নি। বিলাল খানের করা তৃতীয় ওভারের পঞ্চম বলে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে ফিরে যান লিটন দাস। এর আগের বলেই রিভিউ নিয়ে জীবন ফিরে পেয়েছিলেন এই ওপেনার। সুযোগ কাজে লাগাতে না পেরে ৭ বলে ৬ রান করে লিটন ফিরে যাওয়ার পর উইকেটে আসেন মেহেদী হাসান।

তবে ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। নিজের খেলা চতুর্থ বলে ফাইয়াজ বাটের হাতে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে রানের খাতা খোলার আগেই ফিরে যান মেহেদী। এরপর ২১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া বাংলাদেশের হাল ধরেন নাঈম শেখ ও সাকিব আল হাসান। তৃতীয় উইকেট জুটিতে দু’জন যোগ করেন ৮০ রান।

তবে এই জুটি বড় হওয়ার অনেক আগেই থেমে যেতে পারতো। দুই বার ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান নাঈম। ফাইয়াজের করা সপ্তম ওভারের পঞ্চম বলে পয়েন্টের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন নাঈম। দৌড়ে গিয়ে যতিন্দর সিং ক্যাচ মুঠোয় নিয়েও ছয় বানিয়ে দেন। এর পরের ওভারে মিড উইকেটে আবার ক্যাচ দেন এই ওপেনার। এবার ক্যাচ ফেলে দেন কাশ্যপ প্রজাপতি।

দুই বার জীবন পেয়ে ৪৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন নাঈম। তবে এর আগে ২৯ বলে ৪২ রান করে সাকিব রান আউটের ফাঁড়ে পড়ে বিদায় নিলে ভাঙে দু’জনের জুটি। সাকিব ফিরে যাওয়ার পর উইকেটে এসে সুবিধা করতে পারেননি নুরুল হাসান সোহান ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। ছক্কার চেষ্টায় সীমানায় ধরা পড়েন দু’জনই।

৪ বলে ৩ রান করেন সোহান এবং আফিফের ব্যাট থেকে আসে ৫ বলে ১ রান। দু’জনের বিদায়ের পর ৫০ বলে ৬৪ রান করে ফিরে যান নাঈম। ১২২ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর উইকেটে এসে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ফাইয়াজের জোড়া আঘাতে ৪ বলে ৬ রান করে মুশফিক ফিরে যাওয়ার পরের বলেই বিদায় নেন সাইফউদ্দিন।

এরপর শেষের দিকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ১০ বলে ১৭ রানে ভর করে ইনিংসের শেষ বলে অলআউট হওয়ার আগে ১৫৩ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ওমানের বোলারদের ভিতর তিনটি করে উইকেট শিকার করেন বিলাল খান ও ফাইয়াজ বাট। এছাড়া কলিমুল্লাহ দুটি এবং জিশান মাকসুদ একটি উইকেট পেয়েছেন।

  • সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ১৫৩/১০ (ওভার: ২০; নাঈম- ৬৪, লিটন- ৬, মেহেদী- ০, সাকিব- ৪২, সোহান- ৩, আফিফ- ১, মুশফিক- ৬, মাহমুদউল্লাহ- ১৭, সাইফউদ্দিন- ০, তাসকিন- ১*, মুস্তাফিজ- ২) (বিলাল- ৪-০-১৮-৩, ফাইয়াজ- ৪-০-৩০-৩, কলিমুল্লাহ- ৪-০-৩০-২, মাকসুদ- ২-০-১৭-১)

ওমান: ১২৭/৯ (ওভার: ২০; আকিব- ৬, যতিন্দর- ৪০, প্রজাপতি- ২১, মাকসুদ- ১২, আয়ান- ৯, সন্দীপ- ৪, নাসিম- ৪, কলিমুল্লাহ- ৫) (সাকিব- ৪-০-২৮-৩, মেহেদী- ৪-০-১৪-১, সাইফউদ্দিন- ৪-০-১৬-১, মুস্তাফিজ- ৪-০-৩৬-৪)

ফলাফল: বাংলাদেশ ২৬ রানে জয়ী।

ম্যাচ সেরা: সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link