More

Social Media

Light
Dark

বিশ্ব কাঁপানো সেই সব ইনিংস

ক্রিকেটের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের সবচেয়ে বড় আসর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। চলতি বিশ্বকাপের আগে আরো ছয়টি বিশ্বকাপ হয়েছে সেই ২০০৭ সাল থেকে শুরু করে। কিংবদন্তি সব ব্যাটসম্যানরা খেলেছেন দারুণ সব ইনিংস।

মধ্যপ্রাচ্যের মরুর বুকে শুরু হয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসর। এই আসর চলাকালেই চলুন আগের বিশ্বকাপগুলোর সেরা ব্যক্তিগত ইনিংস গুলোর স্মৃতিচারণা করা যাক।

  • তামিম ইকবাল (বাংলাদেশ)

ads

তালিকার শুরু বাংলাদেশি তারকা ব্যাটার তামিম ইকবালকে দিয়ে। শুরু তাঁকে দিয়ে হলেও তাঁর ইনিংসটি রয়েছে রানের বিবেচনায় পঞ্চম স্থানে। ২০১৬ বিশ্বকাপে তামিম যেন একাই বাংলাদেশ দলের দায়িত্বভার নিজের কাঁধে নিয়েছিলেন। সেবার তিনি প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে ১০৩ রানের এক অনবদ্য ইনিংস খেলেছিলেন, এমনকি অপরাজিতও ছিলেন সে ম্যাচে বাংলাদেশের খান সাহেব।

ভারতের ধর্মাশালায় তামিম প্রায় ১৬৩ স্ট্রাইকরেটে রান সংগ্রহ করেছিলেন ওমানের বিপক্ষে। সেই ইনিংসে তামিম ছক্কা হাকিয়েছিলেন পাঁচটি অপরদিকে তাঁর চারের সংখ্যা দশটি। ৬৩ বল মোকাবেলা করে বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসের শেষ অবধি অপরাজিত ছিলেন তামিম ইকবাল।

  • আহমেদ শেহজাদ (পাকিস্তান) 

২০১৪ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল বাংলাদেশে। সেই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশি দর্শকদেরকে বিষন্নতায় ভাসিয়েছিলেন পাকিস্তানের ওপেনার  আহমেদ শেহজাদ। তাঁর ১১১ রানের অপরাজিত ইনিংসের উপর ভর করে পাকিস্তান বাংলাদেশকে ১৯১ রানের বিশাল এক টার্গেট ছুড়ে দেয়।

মিরপুরে মাশরাফি, আল আমিন, জিয়াউরদের বিপক্ষে একাই ধ্বংসযজ্ঞ চালায় আহমেদ শেহজাদ। ১৭৯ স্ট্রাকরেটে পাঁচটি ছয় ও দশটি চারের সমন্বয়ে। মাত্র ৬২ বল মোকাবেলা করে তিনি তাঁর একক নৈপুন্যে পাকিস্তানকে ম্যাচ জয়ের খুব কাছে নিয়ে যান। শেষমেশ পাকিস্তান ৫০ রানের এক বিশাল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে।

  • অ্যালেক্স হেলস (ইংল্যান্ড)

এক ইনিংসে রানের দিক বিবেচনায় তৃতীয় স্থানে রয়েছেন ইংল্যান্ডের অ্যালেক্স হেলস। ২০১৪ টি-২০ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিনি ১১৬ রানের অপরাজিত এক অনবদ্য ইনিংস খেলেন।

শ্রীলঙ্কার দেওয়া ১৯০ রানের টার্গেট তাড়া করতে নামে ইংল্যান্ড। বন্দর নগরীর জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে দু’দল মুখোমুখি হয়। আগে ব্যাটিং করে দিলশান ও জয়াবর্ধনের অর্ধশতকের উপর ভর করে শ্রীলঙ্কা জয়ের জন্যে যথেষ্ট রান সংগ্রহ করে।

তাঁদের জয়ের আশা তীব্র হয় প্রথম ওভারেই মিশেল ল্যাম্ব বোল্ড আউট হলে।  কিন্তু খেলা তখনো ছিল বাকি। হেলস, ইয়ন মরগ্যানের সাথে জুটি বেঁধে দলের জয় ছিনিয়ে আনেন। সেই ইনিংসের হেলসে ব্যাট থেকে আসে ছয়টি ছক্কা ও এগারোটি চার। প্রায় ১৮১ গড়ে রান তোলেন অ্যালেক্স হেলস।

  • ক্রিস গেইল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) 

দ্য ইউনিভার্স বস খ্যাত ক্রিস গেইল নি:সন্দেহে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসের একজন কিংবদন্তি। তাঁর মতো বিধ্বংসী ব্যাটার থাকবেন না সেরা ইনিংসের তালিকায় তা কি করে হয়? ছক্কার তালিকায় শীর্ষে থাকা গেইল সেরা ইনিংসের তালিকায় রয়েছেন দ্বিতীয়তে। ২০০৭ সালের দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে স্বাগতিকদের বিপক্ষেই ১১৭ রানের বিশাল বড় এক ইনিংস খেলেন গেইল।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসর ২০০৭ সালে বিশ্বকাপের উদ্বোধনি ম্যাচেই এই কীর্তি গড়েন ক্রিস গেইল। তিনি তাঁর এই ১১৭ রানের ইনিংস গড়তে বল খেলেন মাত্র ৫৭টি। চার থেকে বেশি ছক্কাই হাকান গেইল এই ম্যাচে। তাঁর ছয় সংখ্যা দশটি এবং চার মেরেছেন সাতটি।

তাঁর এমন মারকুটে ব্যাটিং এর উপর ভর করেই ২০৫ রানের পাহাড় ছোঁয় উইন্ডিজরা। কিন্তু ঘরের মাঠে বৈশ্বিক এই টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই কি এত সহজে হার মেনে নেবেন হার্শেল গিবস, গ্রেইম স্মিথরা? তারাও লড়াই করে টপকে যান ২০৫ রানের বিশাল টার্গেট। ২০৫ স্ট্রাইকরেটে করা গেইলের ইনিংস ফিকে হয়ে গেলেও তা জায়গা করে নেয় রেকর্ডের পাতায়।

  • ব্রেন্ডন ম্যাককালাম (নিউজিল্যান্ড)

নিউজিল্যান্ডের সাবেক উইকেটরক্ষক ব্যাটার ব্রেন্ডন ম্যাকালামের ব্যাটিং যেন ছিল চোখের জন্যে এক প্রশান্তি। তাঁর অসাধারণ ব্যাটিং শৈলী মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করার এক বিষয়। তবে ২০১২ সালের শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের বিপক্ষে করা তাঁর ব্যাটিং যেন গুলির মতো করে বিধেছে বাঙালি ক্রিকেট সমর্থকদের মনে।

সেবার প্রায় ২১২ গড়ে রান তোলার এক দানবীয় খেলায় মত্ত হন ম্যাককালাম। তিন নম্বরে নেমে বাংলাদেশি বোলারদের তুলোধুনো করেন তিনি। ৫৮ বল মোকাবেলা করে ম্যাককালাম হাকান সাতটি ছক্কা, পক্ষান্তরে এগারোটি চারে দ্রুত রান তোলা অব্যাহত রাখেন।

শেষ পর্যন্ত আব্দুর রাজ্জাকের বলে তামিম ইকবালের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগ পর্যন্ত ম্যাককালাম রান তোলেন ১২৩। ফলস্রুতিতে বাংলাদেশ পায় ১৯২ রানের টার্গেট। বোলাদের মতো ব্যাটাদের ব্যর্থতায় ৫৯ রানে পরাজয়ের স্বাদ নিতে হয় বাংলাদেশকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link