More

Social Media

Light
Dark

অভিজ্ঞতার পরীক্ষা

আসন্ন টি-টোয়েন্ট বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের স্কোয়াডের সাথে অতিরিক্ত ত্রিকেটার হিসাবে রয়েছেন শুধুমাত্র রুবেল হোসেন। এই পেসারের সাথে অতিরিক্ত ক্রিকেটার হিসাবে লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ওমানে গেলেও শেষ পর্যন্ত দেশে ফিরে আসতে হচ্ছে তাকে। তবে রুবেল স্কোয়াডের সাথে থেকে গেলেও সরাসরি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন না।

স্কোয়াডের কোন সদস্য চোটের কারনে ছিটকে গেলে তবেই বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ আসবে রুবেলের সামনে। তবে বিশ্বকাপের স্কোয়াডে অতিরিক্ত হিসাবে থেকেও নিজকে ভাগ্যবান ভাবতে পারেন এই পেসার। কারণ বাংলাদেশের খেলা সর্বশেষ ১৩ টি টি-টোয়েন্টির একটিতেও একাদশে ছিলেন না তিনি। অর্থ্যাৎ দীর্ঘ দিন এই ফরম্যাটে সুযোগ না পেয়েও বিশ্বকাপে দলের সাথে গিয়েছেন তিনি।

রুবেল জাতীয় দলের হয়ে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন চলতি বছরের মার্চে নিউজিল্যান্ড সফরে। ঐ সিরিজে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এক ম্যাচে সুযোগ পেয়ে দুই ওভারে ৩৩ রান দিয়ে এই পেসার ছিলেন উইকেট শূন্য। ঐ ম্যাচের আগে রুবেল সর্বশেষ টি-টোয়েন্ট খেলেছিলেন আরো প্রায় আড়াই বছর আগে ২০১৮ সালের আগস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে।

ads

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তিন ম্যাচে এই পেসার তিন উইকেট পেলেও ছিলেন বেশ খরুচে। এক ম্যাচে বোলিং কোটা পূরণ করারই সুযোগ পাননি তিনি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টতে ২৮ ম্যাচে ৩২.৫৭ গড়ে ও ৯.৪৫ ইকোনোমিতে ২৮ উইকেট শিকার করা রুবেল ২০১৮ সালেই খেলেছিলেন সবচেয়ে বেশি টি-টোয়েন্ট। ঐ বছর ১১ ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশে ছিলেন তিনি।

ঐ ১১ ম্যাচে রুবেল শিকার করেছিলেন ১০ টি উইকেট। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টতে রুবেলের কোন ইনিংসে পাঁচ উইকেট বা চার উইকেট না থাকলেও তিন উইকেট পেয়েছিলেন দুই বার। সেটাও চার বছর আগে। দুই বারই প্রতিপক্ষ ছিল নিউজিল্যান্ড। টি-টোয়েন্টতে রুবেলের সাফল্য বলতে ঐ দুই ম্যাচই। এছাড়া এই ফরম্যাটে তাকে তেমন প্রভাব বিস্তার করতে দেখা যায়নি।

২০১৬ সালে সর্বশেষ টি-টোয়েন্ট বিশ্বকাপের দলেও ছিলেন না রুবেল। ওয়ানডেতে এই পেসার এক সময় দলের অপরিহার্য সদস্য থাকলেও টি-টোয়েন্ট বা টেস্টে নিয়মিত ছিলেন না কখনোই। মাঝে মাঝে সুযোগ পেলেও ব্যর্থ হয়েছেন। এরপরেও অভিজ্ঞতার কারণে হয়তো নির্বাচক, অধিনায়ক বা টিম ম্যানেজমেন্ট তাঁর উপর আস্থা রেখেছেন বার বার।

আসন্ন টি-টোয়েন্ট বিশ্বকাপের স্কোয়াডে স্ট্যান্ড বাই হিসাবে রুবেলকে বেছে নেওয়া হয়েছে এই অভিজ্ঞতার কারণেই। বড় মঞ্চে পারফরম্যন্স করার অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাঁর। এর আগে দুটি টি-টোয়েন্ট বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতাও রয়েছে রুবেলের। সব কিছু বিবেচোনা করে বর্তমান পেসারদের বিকল্প হিসাবে তিনিই এগিয়ে ছিলেন।

রুবেলের বোলিংয়ের প্রধান শক্তি অবশ্যই তাঁর গতি। বাংলাদেশের পাঁচ জন গতিময় বোলারের তালিকা করলে সেখানে তাঁর নাম থাকবে। তবে এই গতি সাম্প্রতিক সময়ে অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। এখন তাঁর বোলিংয়ের প্রধান শক্তি হিসাবে বিবেচনা করা হয় রিভার্স সুইং করে ব্যাটসম্যানদের ফাঁদে ফেলা। এছাড়া রুবেলের বোলিংয়ের এঙ্গেল প্রায় সময়ই ব্যাটসম্যানদের অস্বস্তিতে ফেলে।

আর রুবেলের বোলিংয়ের সবচেয়ে দূর্বল দিক নতুন বলে তাঁর সীমাবদ্ধতা। পুরোনো বলেই এই পেসার বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। যার কারণে অনেক সময়ই সমস্য হয়। আউট সুইংয়ে দক্ষ না হওয়ার কারণে ইন সুইংয়ের উপর বেশি নির্ভরশীল হতে হয় রুবেলকে। এছাড়া ক্যারিয়ারের শুরুতে তিনি নিখুতভাবে ইয়র্কার দিতে পারলেও এখন এটার উপর থেকেও অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছেন।

বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলে পেসার রয়েছেন চার জন। মুস্তাফিজুর রহমানের সাথে আছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম। এদের টপকে চূড়ান্ত দলে রুবেলের জায়গা না হলেও রুবেল সামর্থ্য রয়েছে তাদের সাথে জুটি বেঁধে বল করার।

সর্বশেষ তিন সিরিজে রুবেল খেলার সুযোগ না পেলেও দলের সাথেই ছিলেন। নিজকে অবশ্যই তৈরি করেছেন তিনি। নতুন চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্যও হয়তো মুখিয়ে আছেন এই পেসার। তবে এই বিশ্বকাপে রুবেলের সুযোগ পাওয়ার সম্ভবনা সীমিতই বলা যায়। একমাত্র চূড়ান্ত দলের কেউ চোট পেয়ে ছিটকে গেলেই সুযোগ আসবে রুবেলের সামনে।

রুবেল সুযোগ পাবেন কিনা সেটা সময়ই বলে দেবে। তবে যদি সুযোগ পেয়েই যান সেটা হবে রুবেলের জন্য দারুণ এক পাওয়া। নিজের টি-টোয়েন্ট ক্যারিয়ার গুছিয়ে নিতে ৩১ বছর বয়সী এই পেসারের এটাই হবে হয়তো বড় সুযোগ। সেই সুযোগের অপেক্ষার প্রহরই হয়তো গুনছেন রুবেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link