More

Social Media

Light
Dark

সমীকরণের মারপ্যাঁচে বাংলাদেশ

গেল ম্যাচে শক্তিশালী ভারতের ভাল ফুটবল খেললেও এবারের বাংলাদেশ দল ছন্নছাড়া। সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে আজ তৃতীয় ম্যাচে স্বাগতিক মালদ্বীপের মুখোমুখি হয়ে জামাল ভূঁইয়ার দল হারলো ২-০ গোলে।

প্রথম ম্যাচ হেরে কিছুটা বিপাকে থাকা ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের টুর্নামেন্টে টিকে থাকার ম্যাচ। অন্যদিকে মালদ্বীপকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানে উঠে যাবার হাতছানি বাংলাদেশ দলের কাছে।

নিজেদের টিকে থাকার ম্যাচে মালদ্বীপ কোচ আলি সুজেইন ৪-৩-৩ অ্যাটাকিং ফরমেশনে খেলতে নামায় দলকে৷ অপরদিকে বাংলাদেশের কোচ অস্কার ব্রুজন মালদ্বীপের আক্রমণ নৎসাৎ করার লক্ষ্যে মাঝমাঠকে জমাট করে রাখতে ৪-৪-১-১ ফরমেশন দিকনির্দেশনা দিয়ে মাঠে নামান জামাল-সাদদের।

ads

বাংলাদেশ প্রথমার্ধের শুরুর দিকে বেশ গোছালো ফুটবল খেলতে থাকলেও মিনিট পনেরো পরে ম্যাচের সম্পূর্ণ দখল নিয়ে নেয় মালদ্বীপ। একের পর এক আক্রমণের বর্ষণ হতে থাকে বাংলাদেশের রক্ষণদূর্গে। মুহুর্মুহুর আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে বেশ ক’বার ভুলও করে বসেন তারিক কাজি, ইয়াসিন আরাফাতরা। যার ফলস্বরূপ তাদেরকে হলুদ কার্ড দেখিতে সতর্ক করেছে রেফারি।

শ্রীলঙ্কা কিংবা ভারতের বিপক্ষে যে কাউন্টার অ্যাটাক গুলো করেছিল বাংলাদেশ তার ছিটেফোঁটাও এদিন চোখে পরেনি। বাংলাদেশের একমাত্র স্টাইকার মতিন মিয়া মালদ্বীপের ডিবক্সের আশেপাশে বলের দখল পেলেও সতীর্থদের অভাবে তা আর কাজে লাগাতে পারেনি।

অর্ধের খেলা যখন প্রায় শেষের দিকে তখন বাংলাদেশের ডি বক্সের ডানপাশে পরপর দু’টি ফ্রি-কিকের সুযোগ পায় মালদ্বীপ। দলের অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আলি আশফাক প্রথমবার বুদ্ধিদীপ্ত ফ্রি-কিক নেন। তবে বাংলাদেশ দলকে বাঁচিয়ে দেন একবার রহমত মিয়া ও আরেকবার গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। প্রথমার্ধে ০-০ গোললাইন নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল।

দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমেই প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। বাংলাদেশ একের পর এক শুধু আক্রমণ আটকে গেছে। কিন্তু কতক্ষণ আর তীব্র আক্রমণের স্রোত আটকে রাখবে তারিক, তপুরা। রক্ষণ ভাঙলো বাংলাদেশের। ম্যাচের ৫৪ মিনিটে কর্ণায় পায় হামজা, আল ঘানিরা। সেই কর্ণার প্রথম থেকে ডি-বক্সের ঠিক উপর থেকে আসা আলতো হেডে আরো ভেতরে আসা বলে অসাধারণ এক বাই সাইকেলে গোল করেন আলি হামজা। এগিয়ে যায় মালদ্বীপ ১-০ গোলে।

এক গোল খেয়ে ব্রুজোন আনেন তিন পরিবর্তন। অলআউট অ্যাটাকে যেতে শুরু করে বাংলাদেশ। বেশকিছু আক্রমণও করে কিন্তু সফলতা আসেনি, গোলে শট করা আর হয়ে ওঠেনি। বরং ব্রুজোনের পরিকল্পনা ব্যাকফায়ার করে বসে। ৭১ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাক মালদ্বীপের। বল নিয়ে ডি-বক্স পর্যন্ত একাই টেনে নিয়ে যান নাইজ হাসান৷ ডি-বক্সের ভেতর সোহেল রানার এক বাজে ভুল। পেনাল্টি পেয়ে যায় মালদ্বীপ।

সেটপিস থেকে রীতিমত জিকোকে দাড় করিয়ে রেখে তার হাতের ডান দিকের নিচের কোণা দিয়ে গোল আদায় করে নেন মালদ্বীপের সর্বোচ্চ গোলদাতা আলি আশফাক। ২-০ তে পিছিয়ে যায় বাংলাদেশ।

গোছানো ফুটবলটা আর খেলা হয়ে ওঠে না বাংলাদেশের। ৬৩ শতাংশ বল পজিশনে রাখা মালদ্বীপে কাছে পাত্তা না পাওয়া বাংলাদেশ ত্রিশটি ফাউল করেছে পুরো ম্যাচ জুড়ে। দেখেছে পাঁচটি হলুদ কার্ড। শেষমেষ ২-০ গোলের পরাজয় নিয়ে মাঠে ছাড়েন জামাল-সুফিলরা।

এই হারে পয়েন্ট দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও বাংলাদেশের জন্যে ফাইনালে উঠার সমীকরণ বেশ কঠিন হয়ে গেলো বাংলাদেশের জন্যে। অপরদিকে মালদ্বীপ দুই গোলের জয়ে উজ্জীবিত হয়েই তাদের শিরোপা ধরে রাখার আশা বাঁচিয়ে রাখতে সক্ষম হয়। এখন বিভিন্ন সমীকরণের মারপ্যাঁচে শেষমেশ কোন দুইটি দল খেলবে এবারের সাফের ফাইনাল তা জানতে অপেক্ষা পালা যেন আরো দীর্ঘ হলো এই ম্যাচ শেষে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link