More

Social Media

Light
Dark

গোল্ডেন বুটের দারুণ দৌড়

দেখতে দেখ্যে ইউরো এসে থেমেছে চার দলে। ২৪ দল থেকে সেমিতে লড়াই করবার জন্য টিকে আছে চার দল। এর মধ্যেই ঘটেছে ঘটন, অঘটন। ফ্রান্স-পর্তুগালকে অনেকদূর যেয়ে দেখা লোকেদের সামনেই বাদ পরে গিয়েছেন দুজনে। আবার সবাইকে অবাক করে সারপ্রাইজ প্যাকেজ হিসেবে উঠে এসেছে ডেনমার্ক।

সেমি ফাইনালের চার দলের লড়াইয়ের মাঝে নজর কেড়ে বিয়েছে গোল্ডেন বুটের লড়াই। গোলের খেলা ফুটবল, দিনশেষে যারা গোল করে তাদের দিকেই আলাদা করে নজর থাকে দর্শকদের। এই ইউরোও ব্যতিক্রম হবে কেন? এই ইউরোর সেরা গোলস্কোরারদের তালিকায় থাকা অনেকেই বাড়ির পথ ধরেছেন। শীর্ষ ১০ থেকে টিকে আছেন শুধু ৩ জন।

সে তালিকাই দেখে আসা যাক।

ads
  • ক্রিস্টিয়ানো (পর্তুগাল) – ৫ গোল, ১ অ্যাসিস্ট

ইউরোজয়ী অধিনায়ক হিসেবে এই ইউরোতে আগমণ ঘটেছিল রোনালদোর। ইউরোর রেকর্ডগুলোও নেড়েচেড়ে দেখার হয়েছিল তার। আর রেকর্ড ভাঙ্গতে তার থেকে ওস্তাদ আর কেই বা আছে? আর তা ভাঙ্গতেই মাঠে নেমেছিলেন তিনি।

পরেছিলেন গ্রুপ অফ ডেথে, একক নৌপূণ্য ছাড়া সে গ্রুপ থেকে বের হওয়ার কথা হয়তো পর্তুগালবাসীরাও ভাবেনি। একক নৈপূন্য দেখিয়েছেন তিন ম্যাচেই। হাঙ্গেরির বিপক্ষে দুই গো এক এসিস্ট দিয়ে বের করে এনেছেন জয়। জার্মানির বিপক্ষেও প্রথমে গোল করে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন দলকে। কিন্তু নিজের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মেরে ম্যাচ থেকে ছিটকে পরেছে পর্তুগাল। এমনকি গ্রুপের তৃতীয় ম্যাচেও দলের দুই গোলের দুইটিই এসেছে তার পা থেকে। পর্তুগালের করা ৭ গোলের মধ্যে ৫টিই তার, একটিতে প্রত্যক্ষ অবদান এসিস্ট করে। বেলজিয়াম ম্যাচে যেই না একটু অফ-ফর্ম গিয়েছে, ওমনি হেরে বসেছে তার দল।

  • প্যাট্রিক শিক (চেক রিপাবলিক) – ৫ গোল

এবারের ইউরোর সারপ্রাইজ প্যাকেজ বলতে যদি কেউ থাকে, তবে সেটা চেক রিপাবলিকের প্যাট্রিক শিক। ফুটবলে পোচার রোল এখন নেই বললেই চলে, কিন্তু নতুন করে তার মূল্য বোঝাতে শুরু করেছেন তিনি। রোমাতে ফ্লপ হয়ে শিক পাড়ি জমিয়েছিলেন বরুশিয়া লেভারকুশেনে।

সেখানেও রেমন ভালো একটা মৌসুম কাটাননি, কিন্তু যখন দরকার তখনই জ্বলে উঠেছেন শিক। এবারের অইরোতে একমাত্র ইংল্যান্ড ম্যাচ বাদে প্রতিটি ম্যাচেই গোল আছে তার। এমনকি ডেনমার্কের সাথে ম্যাচে হেরে গেলেও দলকে স্বান্তনাসূচক গোল এনে দিয়েছেন শিক।

  • করিম বেনজেমা (ফ্রান্স) – ৪ গোল

এবারের ইউরোটা করিম বেনজেমার জন্য অন্যরকম একটা যাত্রা। ৬ বছর দল থেকে একপ্রকার নির্বাসনেই ছিলেন তিনি। প্রত্যাবর্তনটা না রাঙাতে পারলে কথা শুনতে হতো সব জায়গা থেকেই। সে ভুল করেননি বেনজেমা। নিজের মতন করে রাঙিয়েছেন নিজের প্রত্যাবর্তন।

প্রথম দুই ম্যাচে গোল না পেলেও তা পুষিয়ে দিয়েছেন বাকি দুই ম্যাচে গোল পেয়ে। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে রোনালদোর সাথে তার দৈরত্থ্য নজর কেড়ে নিয়েছিল সকলের। এমনকি সুইজাতল্যান্ডের সাথে ম্যাচেও, দলকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু সতীরথদের ব্যর্থতায় আজ এই অবস্থানে বেনজেমা। ফ্রান্সের ৭ গোলের ৪টিই তার, একটি আত্মঘাতী, অন্যটিতে তার প্রত্যক্ষ অবদান।   

  •  এমিল ফর্সবার্গ (সুইডেন) – ৪ গোল

ফর্সবার্গের গল্পটাও অন্যদের মতই। এবারের ইউরোতে একাই দলকে টেনে এনেছেন ফর্সবার্গ। সুইডেনের এতদূর আসার পেছনের মূল তারকাও ফর্সবার্গ। স্লোভাকিয়া বিপক্ষে উইনিং গোল, পোল্যান্ডের সাথে গুরুত্বপূর্ণ দুই গোল আর ইউক্রেনের সাথে হেরে যাওয়া ম্যাচেও গোল। সবমিলিয়ে নিজের কাজটা ঠিকই করেছেন। কিন্তু দলকে একা এগিয়ে নেওয়া তো আর সম্ভব নয়। 

  • রোমেলু লুকাকু (বেলজিয়াম) – ৪ গোল

লুকাকুই সম্ভব্য এই তালিকার একমাত্র তারকা, যাকে দলের গুরুদায়ত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে হয়নি। বরং তিনি হয়ে ছিলেন দলের মূল স্ট্রাইকার। আর গোল তার পা থেকেই এসেছে। পুরো টুর্নামেন্টে একটা বাজে ম্যাচই তারা খেলেছে, আর তার ফলাফলে বিদায় নিয়ে হয়েছে ইতালির কাছে হেরে।

এ বাদে পুরো টুর্নামেন্টে বলার মতন তেমন কিছু করে দেখাতে পারেননি লুকাকু। রাশিয়ার বিপক্ষে দুইটি, ফিনল্যান্ডের বিপক্ষে একটি আর ইতালির বিপক্ষে পেনাল্টিতে গোল করে আছেন তালিকার ৫-এ।  

টুর্নামেন্টে শীর্ষ ১০ এর ৭ জনই ফিরে গিয়েছেন বাড়িতে। ৩ গোল নিয়ে তালিকার কোনোমতে ঝুলে আছেন ইংল্যান্ডের রহিম স্টার্লিং, হ্যারি কেইন ও ডেনমার্কের ক্যাস্পার ডলবার্গ। আগামী দুই ম্যাচে কিছু করে দেখাতে না পারলে এই টুর্নামেন্টের গোল্ডেন বুট উঠছে রোনালদোর হাতেই।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link