More

Social Media

Light
Dark

ইউরো নক-আউটের সেরা একাদশ

দেখতে দেখতে ইউরোর নক-আউট পর্বও শেষ। শেষ আট দল নিশ্চিত করেছে কোয়ার্টার-ফাইনাল। সে জায়গায় ঘটেছে ঘটন, ঘটেছে অঘটনও। ‘গ্রুপ অফ ডেথ’ খ্যাত ‘গ্রুপ এফ’ থেকে কোয়ার্টার নিশ্চিত করতে পারেনি কেউই। ফ্রান্স-পর্তুগাল তাদের সেরা দল নিয়েও পায়নি প্রমোশন, নামের জোরে পরের রাউন্ডে পারি দিতে পারেনি নেদারল্যান্ডসও। চমক গড়েছে সুইজারল্যান্ড, চেক রিপাবলিক।

নক-আউট পর্বের সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে সাজানো হয়েছে এই তালিকা। কারা জায়গা করে নিলেন আমাদের সেরা একাদশে?

ইয়ান সোমার (সুইজারল্যান্ড)

ads

এই তালিকার গোলরক্ষক হিসেবে কে আসছেন তা নিয়ে নিশ্চয় কোনো সন্দেহ থাকার কথা নয়। সুইজারল্যান্ডের ইয়ান সোমার থাকছেন তিন কাঠির নিচে। ফ্রান্সের বিপক্ষে বিশা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন তিনি। যদিও তিন  গোল হজম করেছেন বটে, কিন্তু সেই তিন গোল না হলে গোলদাতার প্রতিই অবিচার হতো। কিন্তু বাকিটা সময় হয়ে ছিলেন দেওয়াল।

পেনাল্টি শ্যুট-আউটে গিয়েই দেখা মিলল আসল সোমারের। কিলিয়ান এমবাপ্পের শট থামিয়ে প্রথমবারের মতন দলকে নিয়ে গেলেন ইউরোর কোয়ার্টার-ফাইনালে। ১৯৫৪ বিশ্বকাপের পর এটাই তাদের প্রথম কোয়ার্টার খেলা। জায়গাটা তারই প্রাপ্য।

  • সিজার আজপিলিকুয়েতা (স্পেন)

ইউরোর শুরুটা মনমতো হয়নি স্পেনের। দুই ম্যাচ শেষে নিজেদের সমর্থকরাই বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলেন দলের উপর। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে আজপিলিকুয়েতাকে নামাতেই খোলনচালে পাল্টে যায় স্পেনের খেলা। তা অব্যাহত ছিল নক-আউট রাউন্ডেও। ক্রোয়েশিয়ার বাম পাশের আক্রমণ একাই আটকে রেখেছিলেন তিনি। এমনকি দলের প্রয়োজনের সময় একটি মহামূল্যবান গোলও করেছেন তিনি। রাইটব্যাক জায়গাটা তার জন্যই।

  • হ্যারি ম্যাগুইয়ার (ইংল্যান্ড)

ম্যাচে দুটো গোল হওয়ার পরও যখন ম্যাচ সেরা হন একজন ডিফেন্ডার, তখনই বোঝা সম্ভব কতটা ভালো খেলেছেন তিনি। পুরো টুর্নামেন্টে কোন গোল হজম করেনি ইংল্যান্ড। তার পেছনে ম্যাগুইয়ারের অবদানও কম নয়। জার্মান আক্রমণ খুব একয়টা থ্রেট হয়ে দাঁড়াতে পারেনি ইংলিশ ডিফেন্সের সামনে, কিন্যু যতটুকু দাড়িয়েছিল সেটুকুও নিস্ক্রিয় করে দিয়েছেন তিনি।  

  • লিওনার্দো বনুচ্চি (ইতালি)

ইতালি মানেই ডিফেন্সে সর্বেসর্বা। যদিও রবার্তো ম্যানচিনি সে জায়গা থেকে সরে এসেছেন অনেকটা। কিন্তু তাতে করে ইতালির ডিফেন্স কিন্তু দূর্বল হয়ে পরেনি। কিন্তু কিয়েলিনির ইঞ্জুরির পর পর ইতালি ডিফেন্স নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল, আগের মতন সামলাতে পারবে তো নিজেদের? সে প্রশ্ন উত্তর দিয়েছেন বনুচ্চি, অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে অসাধারণ ডিফেন্স করে সে জায়গাটা নিয়ে নিয়েছেন লিওনার্দো বনুচ্চি।

  • জোয়াকিম মেহলে (ডেনমার্ক)

ওয়েলসের বিপক্ষে আন্ডারডগ হিসেবেই শুরু করেছিল ডেনমার্ক। কিন্তু ম্যাচের যত সময় এগিয়েছে, ততই ম্যাচে আধিপত্য পেয়েছে ডেনমার্ক। তাদের জন্য থ্রেট হয়ে উঠতে থাকা গ্যারেথ বেলকে একাই সামলেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, বাম পাশ দিয়ে মুহূর্মুহু আক্রমণ করে গিয়েছেন মেহলে। একটি গোলও করেছেন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে।  

  • গ্রানিত শাকা (সুইজারল্যান্ড)

গত কয়েক বছর ধরেই ক্লাব ক্যারিয়ার খুব একটা বাও যাচ্ছিল না শাকার। কিন্তু আন্তর্জাতিকে আসতেই তার মিল পাওয়া অসম্ভব। ফ্রান্সের বিপক্ষেও তার দেখা মিলল আপনরূপে। গোলের দেখা পাননি, কিন্তু শেষ ১০ মিনিটে যযে চমক উপহার দিয়েছে সুইজারল্যান্ড, তার পেছনের কারিগর ছিলেন শাকা।

তাঁর গোলের পেছনে অবদান ছিল যেমন, তেমনই ফ যখন টাই-ব্রেকার গিয়েছে, তখন অধিনায়কের মতন কাজ করেছেন তিনি। পুরোটা সময় তাকে দেখে মনে হয়েছে, তিনি দলের কোচ। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে ফ্রান্সকে নিষ্ক্রিয় করে রেখে দলকে পেনাল্টিতে নিয়ে যাওয়ার পেছনের কারিগরও তিনি।

  • টমাস হোলস (চেক রিপাবলিক)

জার্সি নম্বর ৯ হলেও টমাস হোলস চেক রিপাবলিকের হয়ে খেলেন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডে। আর সে জায়গায় থেকেই নিষ্ক্রিয় করেছেন নেদারল্যান্ডসের আক্রমণকে। শুধু তাই নয়, নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম গোলটাও এসেছে তার পা থেকে। সব মিলিয়ে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডের জায়গাটা তার জন্যই বরাদ্দ। 

  • ক্যাস্পার ডোলবার্গ (ডেনমার্ক)

ক্যাস্পার ডোলবার্গের আগমন হয়েছিল ইউসুফ পৌলসনের চোটের সুবাদে। কিন্তু দলে প্রবেশ করতে না করতেই খোলনচালে বদলে দিয়েছেন দলকে। ওয়েলসের বিপক্ষে একাই পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন তিনি। টানা দুই গোল করে ওয়েলসকে ছিটকে দিয়েছেন খেলা থেকে। মূলত স্ট্রাইকার হলেও ডান পাশে খেলার সুনাম আছে তার, সে হিসেবে দলে তার জায়গা অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে।

  • থোরগান হ্যাজার্ড (বেলজিয়াম)

দলের আরেকপাশে মিডফিল্ডার হিসেবে আছেন থোরগান হ্যাজার্ড। বেলজিয়াম-পর্তুগাল ম্যাচের ডিফারেন্স মেকার হিসেবে নাম উঠে এসেছে তার। পর্তুগালের বিপক্ষে একমাত্র গোলটা এসেছে তার পা থেকে। শুধু তাই নয়, বামপাশে পুরোটা সময় তাণ্ডব চালিয়ে গিয়েছেন।

  • প্যাট্রিক শিক (চেক রিপাবলিক)

গ্রুপ পর্ব থেকেই একজন খেলোয়াড় যদি সবাই নজর কেড়ে নেন, সেটা হচ্ছে প্যাট্রিক শিক। বর্তমানের আর দশটা স্ট্রাইকারের মতন নন তিনি। নিচে এসে বিল্ডআপ প্লেতে অংশ নিতে খুব কমই দেখা যায় তাকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও এবারের ইউরোতে নজর কেড়েছেন তিনি।

তথাকথিত পোচার রোলে খেলেই পেয়েছেন ৪ গোল। নক-আউট রাউন্ডও বাদ থাকেনি। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে পুরো ম্যাচে হয়ে ছিলেন নেদারল্যান্ড ডিফেন্সের আতঙ্ক। শেষ দিকে এসে পেয়েছেন মহামূল্যবান গোল। আর এই গোলটাই তাকে জায়গা করে দিয়েছে সেরা একাদশে।

  • করিম বেনজেমা (ফ্রান্স)

পুরো একাদশ থেকে একমাত্র করিম বেনজেমাই পার করতে পারেননি নক আউটের বৈতরণী। হেরে গিয়েও সেরা একাদশে জায়গা করে নেওয়াই বলে দেয় নিজের দলের হয়ে কতটা ভয়ঙ্কর ফর্মে ছিলেন তিনি। ছয় বছর পর ঠিক যে কারণে তাকে ডাকা হয়েছিল জাতীয় দলে, ঠিক সে কাজটাই করেছেন বেনজেমা।

পিছিয়ে থাকা ফ্রান্সকে এনেছেন সমতায়, এমনকি এনে দিয়েছেন লিডও। রিকার্দো রদ্রিগেজের নেওয়া পেনাল্টিতে কোনদিকে ঝাপ দিতে হবে, সেটাও বলে দিয়েছেন লরিসকে। চোটের কারণে তাকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরই খেলার উপর থেকে আধিপত্য হারিয়ে ফেলতে থাকে ফ্রান্স। এমনকি তৃতীয় গোলটাও এসেছে বেনজেমার ছুটে যাওয়া বল থেকে। যে কারণে গেরে গিয়েও সেরা একাদশে সুযোগ পেয়েছেন তিনি।

  • বেঞ্চ

হুগো লরিস, লুক শ, ফেডেরিকো কিয়েসা, পল পগবা, সার্জিও বুসকেটস, হ্যারিস সেফেতোভিচ, রাহিম স্টার্লিং।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link