More

Social Media

[ivory-search id="135666" title="Post Search"]
Light
Dark

তারপরও অপরাজেয় ইতালি

গ্রপপর্বের তিন ম্যাচে দাপুটে জয়ের পাশাপাশি কোনো গোল হজম করেনি ইতালি। স্বাভাবিকভাবেই ইতালি আজকে জিতবে সেটা ধরে নিয়েছিলেন সবাই। বরং কয় গোলে জিতবে সেটাই ছিল দেখার বিষয়। কিন্তু কঠিন প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল অস্ট্রিয়া।

ইতালি ম্যাচ জিতলেও জিততে হয়েছে যথেষ্ট ঘাম ঝরিয়েই। অতিরিক্ত সময়ে বদলি হিসেবে নামা কিয়েসা আর পেসিনোর গোলে ব্যবধানে জয় পেয়েছে আজ্জুরিরা। ম্যাচের তিনটি গোলই হয়েছে অতিরিক্ত সময়ে।

গোল করার চাইতে গোল আটকানোতে পারদর্শী ইতালি বিখ্যাত তাদের জমাট রক্ষণের কারণে। কিন্তু বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে না পারার পর পিয়েরে ভেনতুরা বরখাস্ত হলে তার স্থলাভিষিক্ত হন রবার্তো মানচিনি। ম্যানসিটিকে দুবার ইপিএলের শিরোপা জেতানো এই কোচ বিখ্যাত তার আক্রমণাত্নক ফুটবল দর্শনের কারণে। আজ্জুরিদের দায়িত্ব পাবার পর দলের মাঝে ছড়িয়ে দিলেন সেই দর্শন।

ads

ইতালি এখন আর বিরক্তিকর রক্ষণাত্নক ফুটবল খেলে না। বরং তাদের চোখজুড়ানো ফুটবল দেখে মুগ্ধ হয় সবাই। তাই বলে রক্ষণকে ভুলে যায়নি ইতালি। ১১৬৯ মিনিট ক্লিনশিট রেখে গড়েছে বিশ্বরেকর্ড। গতকাল রাতে ইম্মোবিলেবেরার্ডিরা ছন্দে না থাকায় তাৎক্ষণিক বদল আনেন; মাঠে নামান কিয়েসাপেসিনোদের। পরবর্তীতে তাদের গোলেই ম্যাচ বের করে আনে ইতালি। ম্যাচে ইতালির নায়ক তাই মাঠের কেউ নন, বরং ডাগআউটে দাঁড়িয়ে থাকা রবার্তো মানচিনি।

বদলি নামা কিয়েসাই প্রথম গোল করলেন, পুনরাবৃত্তি ঘটালেন ইতিহাসের। ইংল্যান্ডেই অ্যানফিল্ডে ১৯৯৬ ইউরোতে গোল করেছিলেন এনরিকো কিয়েসা। ২৫ বছর পর সেই ইউরোতে এসে সেই ইংল্যান্ডেই বিখ্যাত ওয়েম্বলিতে গোল পেলেন তারই ছেলে ফেদেরিকো কিয়েসা। অথচ গ্রুপপর্বের কোনো ম্যাচেই আলো ছড়াতে পারেননি কিয়েসা, ফলশ্রুতিতে একাদশেই ছিলেন না তিনি।

ইউরোতে এর আগে সাতটি ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গেলেও গোল পায়নি ইতালি। এই প্রথম গোলের দেখা পেল যোগ করা সময়ে। পেসিনোর গল্পটা অবশ্য ভিন্ন, উড়ন্ত ফর্মে ছিলেন। কিন্তু মাঝমাঠের কম্বিনেশনের কারণে তাকে বেঞ্চে রেখেছিলেন মানিচিনি। গোল পেয়েছিলেন গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচেও, এবারও গোল করে বাঁচালেন দলকে। কোয়ার্টার ফাইনালে তাকে একাদশে রাখার কথা ভাবতেই পারেন কোচ মানচিনি।

১৯৩৫৩৯ সাল পর্যন্ত টানা ৩০ ম্যাচ অপরাজিত ছিল ভিক্তোরিও পুজ্জোর ইতালি। ৮২ বছর পর গতকাল সেই রেকর্ড ভেঙে দিল মানচিনিরনতুন ইতালি নিজেদের ইতিহাসে এর চেয়ে বেশি সময় কখনোই অপরাজিত থাকেনি তারা। যদিও সবমিলিয়ে সবচেয়ে বেশিসময় অপরাজিত থাকার রেকর্ড স্পেন এবং ব্রাজিলের। দুই দলই অপরাজিত ছিল ৩৫ ম্যাচ, তাদের রেকর্ড ছুঁতে ইতালিকে অপরাজিত থাকতে হবে কেবল ম্যাচ। অর্থাৎ ইউরোর শিরোপা জিতলেই ব্রাজিলস্পেনকে ছোঁয়ার পথে অনেকখানি এগিয়ে যাবে তারা।

অস্ট্রিয়াকে কখনোই কেউ হিসেবের মাঝে রাখেননি। কিন্তু সেই তারাই প্রায় আটকে দিয়েছিল ইতালিকে। নিজেদের রক্ষণ সামলে প্রতিআক্রমণে উঠার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছিল তারা। এর ফলও পেয়ে গিয়েছিল, কিন্তু ৬৫ মিনিটে আরনাউতোভিচের গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয় ভিডিও অ্যাসিট্যান্ট রেফারির সিদ্ধান্তে। গোলটা হয়ে গেলে হয়তো ইতিহাস রচনা হতে পারতো, কিন্তু দুর্দমণীয় ইতালির বিপক্ষে শেষরক্ষা হলো না তাদের। ১১৪ মিনিটে কালাইজিচের গোলটা তাই যথেষ্ট ছিল না তাদের বিদায় ঠেকাতে।

টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট হিসেবেই খেলতে এসেছে ইতালি। যদিও সমালোচকদের দাবি এখনো বড় দলের মুখোমুখি হয়নি ইতালি। তাদের অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়েছে, কোয়ার্টার ফাইনালে ইতালি মুখোমুখি হবে বেলজিয়াম কিংবা পর্তুগালের। সে ম্যাচেই বুঝা যাবে ইউরো জেতার জন্য কতটা মরিয়া এই ইতালি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link