More

Social Media

Light
Dark

এক দিনে বাংলাদেশের অস্ট্রেলিয়া-ভারত জয়!

কথাটা শুনতে একটু বেখাপ্পা লাগছে না?

বাংলাদেশ তো অস্ট্রেলিয়া, ভারতকে রোজ রোজ হারায় না। তারওপর ঘটনাটা আবার এক দিনে ঘটে কী করে? এটা কী তাহলে নিতান্ত ক্লিক বেইট!

না, ঘটনা সত্যি। বাংলাদেশ আসলেই এক দিনেই ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ক্রিকেট ম্যাচ জিতেছিলো। তাও আবার ১৯৯৭ সালে। যখন পর্যন্ত স্বীকৃত ক্রিকেটে ভারত-অস্ট্রেলিয়া তো দূরে থাক, কোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষেই বাংলাদেশের জয় নেই।

ads

তাহলে এই ঘটনাটা ঘটেছিলো কেমন করে?

সেটা ছিলো হংকং সিক্স-এ সাইড ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ঘটনা। সেই টুর্নামেন্টে প্রথম পর্বের ম্যাচে ভারত ও অস্ট্রেলিয়াকে একই দিনে হারিয়েছিলো বুলবুল-আকরামদের দল।

সেই দুই ম্যাচের মূল নায়ক ছিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও ইমরান হামিদ পার্থ। সম্প্রতি পার্থ ফেসবুকে সেই দুই ম্যাচের স্কোর কার্ড শেয়ার করলে আবার আলোচনায় আসে টুর্নামেন্টটা।

সেদিনের দুই ম্যাচের স্কোর্ডকার্ড, সৌজন্যে – দৈনিক সংবাদ

তাহলে একটু ফিরে দেখা যাক।

১৯৯৭ সালের সেপ্টেম্বরে হংকংয়ে বসেছিলো এই ৫ ওভারের টুর্নামেন্ট। তখনও টি-টোয়েন্টি বা টি-টেন দুনিয়ার আলোর মুখ দেখেনি। ফলে এই সংক্ষিপ্ত সংষ্করণের খেলার সে কালে বেশ জনপ্রিয়তা ছিলো। টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, ভারত, ইংল্যান্ড, পাকিস্তান ও হংকং।

তিনটি গ্রুপে তিনটি করে দলকে ভাগ করা হয়েছিলো-রেড, ব্লু ও গ্রিন। বাংলাদেশ ছিলো অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের সাথে ব্লু গ্রুপে।

টুর্নামেন্টের প্রথম খেলাই ছিলো বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে। আগে ব্যাট করা অস্ট্রেলিয়া সব উইকেট (৫ উইকেট) হারিয়ে ৫ ওভারে ৪৯ রান করেছিলো। অস্ট্রেলিয়ার নামকরা খেলোয়াড়দের মধ্যে ছিলো অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহ, মার্ক ওয়াহ, অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসরা। মার্ক ওয়াহ সর্বোচ্চ ১৭ রান করেছিলেন।

বাংলাদেশের হয়ে এক ওভার করে বল করেছিলেন মাহফিজুর রহমান, বুলবুল, আকরাম, আতাহার ও রফিক। বুলবুল ৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছিলেন। রফিক কোনো উইকেট পাননি। বাকীরা একটি করে উইকেট পান।

জবাবে বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস শুরু করেন পার্থ ও রফিক। রফিক ২ বলে কোনো রান না করেই আউট হন। পার্থ ও বুলবুল ঝড় তুলে ম্যাচ শেষ করে। ৪.৩ ওভারে ৫০ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ। ১২ বলে ৩ চারে সাজানো ২০ রান করে অপরাজিত থাকেন পার্থ। আর ১৪ বলে একটি চার ও দুটি ছক্কায় ২৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন বুলবুল।

সাঙ্গাকারার সাথে ইমরান হামিদ পার্থ

এরপর বাংলাদেশ দ্বিতীয় ম্যাচ খেলে ভারতের বিপক্ষে। ভারতও আগে ব্যাট করে। ভারতের তারকারা ছিলেন নভোজাত সিং সিধু, রোহান গাভাস্কার, সঞ্জয় মাঞ্জরেকার, সলিল আঙ্কোলারা। আগে ব্যাট করা ভারত বিরাট রানের স্কোর করে। সিধু ও ওয়াসান ৩১ রান করে করেন। আতাহার ও রফিক ১টা করে উইকেট পান। ২ উইকেটে ভারত ৮৩ রান করে।

এই বিরাট স্কোর ৫ ওভারে পাড়ি দেওয়াটা অসম্ভব একটা কল্পনা ছিলো। তারপর আবার রফিক ০, বুলবুল ৯ ও আকরাম ৪ রান করে ফিরে আসেন। তবে এই ম্যাচে দারুণ ধারাবাহিকতা ধরে রাখে পার্থ। তিনি ১৩ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩১ রান করে অবসরে যান। আর তাকে দারুন সঙ্গ দেন ৫ বলে ১৬ রান করা মাফিজুর।

বাংলাদেশ ৭ উইকেটের জয় পায়। দুই ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপসেরা হয়ে পরের পর্বে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় পর্বে বাংলাদেশের খেলা ছিলো পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। দুটো ম্যাচই হেরে যায় বাংলাদেশ। ফলে ওখান থেকেই বিদায় নিশ্চিত হয়।

ইংল্যান্ডকে হারিয়ে এই টুর্নামেন্টের শিরোপা জেতে পাকিস্তান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link