More

Social Media

Light
Dark

১৬ বছর বয়সেই অহরহ…

সব কিছু স্বাভাবিক গতিতে চললে সাসেক্সের ড্যানিয়েল ইব্রাহিমের পেশাদার ক্যারিয়ারটা দীর্ঘই হতে চলেছে। তবে, তিনি যতদিনই খেলুন না কেন, এমারাল্ড হেডিংলির স্মৃতি তাঁর মনে আজীবন টিকে থাকবে। এই মাঠেই তো অধিনায়ক ম্যাট প্রায়র তাঁর মাথায় ক্যাপ পরিয়ে দিলেন। আর তাতেই তিনি কাউন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে খেললেন প্রথম শ্রেণির ম্যাচ। আর অভিষেকে তিনি শুধু অধিনায়ককেই নন, মুগ্ধ করলেন গোটা ক্রিকেট বিশ্বকেই।

১৬ বছর বয়সে অনেকেই পড়াশোনার গণ্ডিতে আটকে থাকেন। ক্যারিয়ারে হয়তো কোনো লক্ষ্যকে মনে স্বপ্ন বুনে। আর বেশিরভাগই তখন বাবা-মায়ে কড়া নজরে থাকেন৷ এসবের বাইরে অন্য কিছু চিন্তা করাও যেন দু:সপ্ন। সেই ১৬ বছর বয়সেই কৈশোরের গণ্ডি না পেরোনো এক কিশোর ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচে ফিফটি করেছেন! অনেকেই যেই বয়সেই ক্রিকেটার কিংবা অন্য কিছু হবার স্বপ্ন দেখে সেই বয়সে এক কিশোর কাউন্টি ক্রিকেট খেলছে! শুধু খেলছে বললে ভুল হবে, অভিষেকে ফিফটিও করেছেন।

পাকিস্তানি বংশদ্ভূত ড্যানিয়েল ইব্রাহিম মাত্র ১৬ বছর বয়সে কাউন্টি ক্রিকেটে সাসেক্সের হয়ে অভিষিক্ত হন। ইয়োর্কশায়ারের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচেই তিনি ব্যাট হাতে দূর্দান্ত এক ফিফটি করেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই কাউন্টি অভিষেকে তিনটি মাইলফলক স্পর্শ করেন ইব্রাহিম। হেডিংলিতে ইয়োর্কশায়ারের বিপক্ষে অভিষেকে তার হাফ সেঞ্চুরিতে সাসেক্স ৩১৩ রানে অলআউট হয়। কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে ফিফটির রেকর্ড গড়েন তিনি।

ads

অবশ্য এই ফিফটির আগে বল হাতে অভিষেকেই নিজের প্রথম ফার্স্ট ক্লাস উইকেট শিকার করেন। ইয়োর্কশায়ারের টম কোহলার ক্যাডমোরেকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে নিজের মেইডেন শিকার বানান ইব্রাহিম।

তবে অভিষেকের খবর পাওয়ার পর খোদ ইব্রাহিমও সেটা বিশ্বাস করতে পারেনি। এ যেনো স্বপ্ন না দেখতেই বাস্তবে রুপ দেওয়া! ইব্রাহিম তার অভিষেকের পর বলেন, ‘আমি অভিষেকর খবর এটা শোনার পর বিস্মিত হয়েছিলাম! যখন আমাকে বললো আমি খেলছি, আমি খুব এক্সাইটেড ছিলাম। অভিষেকের জন্য হেডিংলির চেয়ে ভালো খুব বেশি মাঠ আর নেই। এবং এটা আরো বিশেষায়িত হয়েছিলো যখন বেন ব্রাউন তাঁর সেঞ্চুরি করলো এবং আমি তখন মাঠে।’

অবশ্যই বিরাট চাপ নিয়েই খেলতে নেমেছিলেন ড্যানিয়েল। তিনি বলেন, ‘নতুন বলের বিপক্ষে খেলাটা বেশ কঠিন ছিলো। কিন্তু ব্রাউনি আমাকে চাপের মূহুর্তে বেশ সাহায্য করেছে৷ আমার জন্য খুব কঠিন ছিলো এটা তবে আমি লড়াই করে গেছি এবং আমি আমার সেরাটা দিয়েছি। এটা খুব বেশি স্পেশাল এই রেকর্ড ভাঙ্গা (সবচেয়ে কম বয়সে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে ফিফটি)।’

২৬৭ রানে ৫ উইকেট নিয়ে সাসেক্স তাদের দিন শুরু করে তখন সাসেক্সের অধিনায়ক ব্রাউন ১২৬ রানে অপরাজিত। আর আরেকপ্রান্তে অভিষিক্ত ইব্রাহিম ৩৭ রানে খেলছিলেন। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই ব্রাউনের ১২৭ রানের অসাধারণ ইনিংস শেষ হয় বেন কোডের বলে। এরপরই সাত চারে ইব্রাহিম ১১৪ বলে তার অভিষেক হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করে। তবে এরপর আর বেশিদূর যেতে পারেননি তিনি ব্যক্তিগত ৫৫ রানে কোডের বলেই থার্ড স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।

তখন দলীয় রান ৭ উইকেটে ২৯৬। এরপর শেষ তিন উইকেটে ৩৫ রান যোগ করে ৩৩১ রানা থামে সাসেক্স। জবাবে ব্যাট করতে নেমে অ্যাডাম লিথ ও কোহলার ক্যাডমোরের ৮৩ রানের ওপেনিং জুটিতে দূর্দান্ত শুরু করে ইয়োর্কশায়ার। এরপর ইব্রাহিম প্রথম ব্রেজ থ্রু এনে দেন সাসেক্সকে ব্যক্তিগত ২৫ রানে ক্যাডমোরেকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন তিনি।

মাত্র ১৬ বছর বয়সে কাউন্টিতে অভিষেক ম্যাচে খেলতে নেমে ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম গুলোতে সুনাম কুড়িয়েছেন এই কিশোর। মাত্র তো পথ চলা শুরু, এখনো পাড়ি দিতে হবে অজানা এক লম্বা পথ। শুধু প্রয়োজন ধৈর্য্য, পরিশ্রম আর ক্রিকেটের প্রতি ধ্যান-জ্ঞ্যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link