More

Social Media

Light
Dark

ত্রাণকর্তা তপু বর্মণ

পুরো মাঠ দৌড়ে বেড়াচ্ছেন তপু বর্মণ। তার পেছন পেছন পুরো দল। পুরো ম্যাচটার হাইলাইট এটাই। ১-১ গোলের ড্র পুরো ম্যাচটার চিত্র তুলে ধরবে না। কিন্তু শেষ গোলের ছবিটাই পুরো ম্যাচের হাইলাইট।

কেউ শেষ ১০ মিনিটের বাংলাদেশের সাথে যদি প্রথম ৮০ মিনিটের বাংলাদেশকে মেলান, তবে অবশ্যই বলবেন অন্য কোন দল। প্রথম ৮০ মিনিটে যে বাংলাদেশ মিডফিল্ডের উপরে উঠছিলই না সেই বাংলাদেশ শেষ ১০ মিনিটে বল নিজেদের হাফে আসেইনি। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে এসেও পুরোদমে লড়ে গিয়েছে বাংলাদেশ দল, দেখে মনেই হয়নি র‍্যাংকিংয়ে এগিয়ে থাকা একটা দলের বিপক্ষে খেলতে নেমেছে তাঁরা।

র‍্যাংকিংয়ে ১৪৯ নাম্বারে থাকা আফগানিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল ১৮৪ তে থাকা বাংলাদেশ। প্রথমার্ধের খেলা দেখে সেটা ছিল স্পষ্ট। বল পজেশন, খেলার ধরণ সবদিক দিয়েই আফগানরা বাস্কবন্দি করে রেখেছিল বাংলাদেশকে। কিন্তু জেমি ডের ডিফেন্স হতাশ করেনি।

ads

বরং ডিফেন্সে খুঁটি গেড়ে বসেছিলেন তপু বর্মন আর রিয়াদুল হাসান। আর আজকেই ফিনল্যান্ড প্রবাসী রাতিক কাজীকে নিয়ে বাজি ধরেছিলেন জেমি ডে। তার বাজি কাজে দিয়েছে, ডানপাশে ডিফেন্স আর অ্যাটাকের অসাধারণ সমন্বয় দেখিয়েছেন তিনি।

৪-২-৩-১ ফরমেশনে শুরু করা বাংলাদেশের প্রথমার্ধ শেষ হয়েছিল ০-০ গোলে। ম্যাচে একের পর এক আক্রমণ সামলেই সময় কাটিয়ে দিচ্ছিল বাংলাদেশ। জেমি ডের ডিফেন্সিভ ফুটবল বেশ ভালোভাবেই আয়ত্ত করে ফেলেছে বাংলাদেশ। প্রথমার্ধের সলিড ডিফেন্সই তার প্রমাণ।

কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতে না হতেই ভুল করে বসে বাংলাদেশ। লেফট ব্যাক রহমত মিয়ার ভুল থেকে ডানপ্রান্ত থেকে ড্যাভিড নাজিমের ক্রস থেকে বাঁ পায়ে শটে বল জালে জড়ান আমির শরিফি। আফগানরা এগিয়ে যায় ১-০ গোলে।

এরপরই ম্যাচে ফেরাতে মত্ত হয়ে পরেন জেমি ডে। ট্যাক্টিক্যাল চেঞ্জ আনতে থাকেন ম্যাচে। ৫ টি পরিবর্তনের সুযোগ কাজে লাগিয়ে অর্ধেক দলই পরিবর্তন করে ফেলেন জেমি ডে। আর শুরু হয় বাংলাদেশের অল আউট অ্যাটাক। ৬০ মিনিটে সোহেলকে বদলে মানিক মোল্লাকে মাঠে নামাতে অ্যাটাকে প্রাণ পায় বাংলাদেশ।

৮০ মিনিটের মাথায় আসে সূবর্ণ সুযোগ। কিন্তু গোলরক্ষক আজিজিকে ওয়ান টু ওয়ানে বিট করতে ব্যর্থ হন আব্দুল্লাহ। কিন্তু ২ মিনিট পরেই আসে সেই সূবর্ণ সুযোগ। ডান প্রান্ত থেকে উড়ে আসা বল হেড পরে ডি-বক্সে প্রবেশ করান রিয়াদুল রাফি।

সেই বল ডিফেন্ডারকে বিট করে বুক দিয়ে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দারুণভাবে টার্ন করে ডান পায়ের জোড়াল শটে বল জালে পাঠান এই ডিফেন্ডার। দেখে মনে হবে কোনো ইউরোপিয়ান দলের মূল স্ট্রাইকারের গোল যেন। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এটাই তপুর প্রথম গোল। আর ক্যারিয়ারে চতুর্থ।

এরপর থেকে ম্যাচটা যেন নিজের মতন করে সাজিয়েছে বাংলাদেশ। বাকি থাকা ৮ মিনিট আর অতিরিক্ত ৫ মিনিট, পুরো ১৩ মিনিট আফহানিস্থান ডিফেন্সে স্ট্রিমরোলার চালিয়ে গিয়েছেন বাংলাদেশি স্ট্রাইকাররা। কিন্তু গোল পাওয়া হয়নি। ৮৭ মিনিটে আফগানিস্থান ডিফেন্সে মতিন মিয়াকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন আফগান ডিফেন্ডার। বাংলাদেশের আবেদন কানেই তোলেননি রেফারি। নইলে সেখান থেকেই জয় তুলে নিতে পারতো বাংলাদেশ।

তবে পুরো ম্যাচ জুড়ে আধিপত্য দেখিয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমে ডিফেন্সিভ মাইন্ড সেটাপে দল সাজানো জেমি ডের শিষ্যরা তার প্রতিদান দিয়েছেন ডিফেন্স সলিড রেখেই। কিন্তু ৭০ মিনিটের পর যখন পরিবর্তন এনেছেন ফরমেশন আর ট্যাক্টিসে, সেখানেও খুব ভালোমতো মানিয়ে নিতে পেরেছে বাংলাদেশ দল।

সেরা খেলেও ১-১ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে বাংলাদেশকে। এবার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এই ড্রয়ের পর বাংলাদেশের পয়েন্ট বেড়ে হলো ২। যদিও এখনও সবার নিচের অবস্থানেই আছে তারা। আগামী ৭ জুন বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে ভারতের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link