More

Social Media

Light
Dark

যাচ্ছেন আগুয়েরো, আসছেন কে?

মৌসুমের মাঝপথে গুঞ্জনটা জোড়ালো হয়েছিল, বিশেষ করে সার্জিও আগুয়েরোকে ছাড়াই যখন একের পর এক জয় তুলে আনছিলেন পেপ গার্দিওলা। সার্জিও আগুয়েরোর সিটি অধ্যায়ের ইতি কি এখানেই টানা হয়ে গেল? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া ঘোষণা সেই জল্পনা কল্পনাকেই নিশ্চিত করলো। ১০ বছরের সম্পর্ক ছেদ করে নতুন ক্লাবের পথে পা বাড়াচ্ছেন কুন। সেই সাথে প্রশ্ন চলে আসছে আরেকটি। কে হবেন আগুয়েরোর বিকল্প?

২৭১ লিগ ম্যাচে ১৮১ গোল, সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২৫৭ গোল; প্রিমিয়ার লিগের তর্কাতীত সেরা বিদেশি স্ট্রাইকারকে রিপ্লেস করা সহজ কোনো কাজও নয়। যদিও এই মৌসুমে খেলার ধরণ বদলে কোনো স্ট্রাইকার ছাড়াই সাফল্য পাচ্ছেন গার্দিওলা। তাই বলে দলের এতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ফেলে রাখবেন ফাঁকা, তেমন মানুষ গার্দিওলা নন। বরং মৌসুম যেতে না যেতেই টাকার বস্তা নিয়ে মাঠে নামবেন খেলোয়াড় কিনতে। সিটির স্ট্রাইকিং ফোর্সে যুক্ত হতে পারেন কে?

  • আর্লিং হাল্যান্ড (নরওয়ে, বরুশিয়া ডর্টমুন্ড)

ads

হাল্যান্ডকে নিয়ে কার অবসেশন নেই বলুন তো? জার্মান লিগ, চ্যাম্পিয়নস লিগ, সব জায়গাতেই নিজের নামের সুবিচার করে যাচ্ছে নপ্রত্যেক সপ্তাহে। একটি করে গোল করেন আর দাম যেন হুট করে আরো কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এমন জেনারেশনাল স্ট্রাইকারকে কোন দলই বা না কিনতে চায়?

এর মধ্যেই বুন্দেসলিগায় ২১ ম্যাচে ২১ গোল। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩১ ম্যাচে ৩৩ গোল। হিসাবের খাতা খুললে ডর্টমুন্ডের ৭৬ শতাংশ গোলে সরাসরি অবদান তাঁর। ফলাফল? পাখির চোখ করে আছে বড় বড় সব দল, এইয়াল বার্সা থেকে শুরু করে হালের পিএসজি, চেলসি। সিটিই বা বাদ যাবে কেন? ডর্টমুন্ডও দাম ধরেছে ১৮০ মিলিয়ন ইউরো। কিনতে চাইলে এসে কিনে নিয়ে যাও, না করবো না। টাকা পয়সা সিটির বাম হাতের ময়লা, এই নরওয়েজিয়ানের বাবাও একসময় ছিলেন এই ক্লাবের সদস্য। দুইয়ে দুইয়ে চার মিললে হাল্যান্ডই হতে পারেন সিটির নিউ ‘নাম্বার টেন’।

  • রোমেলু লুকাকু (বেলজিয়াম, ইন্টার মিলান)

প্রায় ১১ মৌসুম পর আবারও স্কুডেট্টোর স্বাদ পেতে চলেছে ইন্টার। কিংবা স্বাদ পাওয়ার দ্বারপ্রান্তে, আর সেই ইন্টারের স্ট্রাইক ফোর্স চালনা করছেন যে দুইজন, তাদের একজন হচ্ছেন রোমেলু লুকাকু। বয়সটা মাত্র ২৭ হলে কী হবে, অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার পূর্ণ। এক ইংল্যান্ডেই নাম লিখিয়েছেন ভিন্ন ভিন্ন চার দলের হয়ে। চেলসি, ওয়েস্ট ব্রম, এভারটন কাটিয়ে নাম লিখিয়েছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডেও। ইংল্যান্ডে সে হিসেবে বেশ ভালোই সফলতা আছে তার।

এই মৌসুমে কন্তের অধীনে দিচ্ছেন নিজের সেরা পারফরম্যান্স। ৩৪ ম্যাচে গোল করেছেন ২৫টি, এসিস্ট ৭! কন্তের সিস্টেমে দলের মেইন ম্যান হয়ে উঠেছেন লুকাকু। তাকে টানতে গেলে আনতে হবে কন্তের মতের উপর দিয়ে। সেটা করা বেশ দুঃসাধ্যই। ১০ বছর পর এবার প্রথমবারের মতো ইতালিয়ান লিগে জুভেন্টাসের আধিপত্য ধ্বংস করার দ্বারপ্রান্তে ইন্টার। আর তার মূল সারথিকে নিশ্চয় কেড়ে নিতে দিবে না ইন্টার।

এই দুই পক্ষকে ম্যানেজ করতে পারলে লুকাকুকে আনার বেশ ভালো সুযোগ আছে সিটির।

  • লাওতারো মার্তিনেজ (আর্জেন্টিনা, ইন্টার মিলান)

লাওতারোর প্রতি ইন্টারের আগ্রহ অবশ্য এই প্রথম নয়। এর আগেও একবার লাওতারোকে কিনতে চেয়েছিল সিটি। কোভিড সিচুয়েশনের আগে বেশ ভালোরকম লড়াই হয়েছিল সিড়ি আর বার্সার মধ্যে। কিন্তু সবকিছু ছেড়ে ইন্টাএই থেকে গিয়েছিলেন এই আর্জেন্টাইন। আর সিড়ি আরো এক মৌসুম ভরসা রেখেছিল আগুয়েরোর উপর। কিন্তু এবার তো আর আগুয়েরো নেই। লাওতারোর তাই ভাবার সময় এসেছে দ্বিতীয়বার।

লুকাকুর সাথে জুটি করে প্রথম সিরি-আ টাইটেলের দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। দলে কন্ট্রিবিউশনও কম নয়। ৩৭ ম্যাচে ১৬ গোল। দুজনে মিলে খোলনচালে বদলে দিয়েছেন ইন্টারের খেলার স্টাইল। এমনকি নিচে এসে টিম প্লেতে বেশ ভালো খেলার অভিজ্ঞতাও আছে। সব মিলিয়ে যদি পেপ গার্দিওলার দলে যুক্ত হন খারাপ হবে না।

  • হ্যারি কেইন (ইংল্যান্ড, টটেনহাম হটস্পার)

রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু/ দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া, ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া/একটি ধানের শিষের উপরে, একটি শিশিরবিন্দু’।

সিটি দলের ক্ষেত্রে এই কথাটা বেশ ভালোমতই খাটে। ২০০৮ সালে সিটির দায়িত্ব নিয়েছেন মালিক শেখ মনসুর। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ইংলিশ স্ট্রাইকার সাইন করায়নি তারা। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, স্পেন, ইতালি, এমনকি সার্বিয়া, বসনিয়া থেকেও স্ট্রাইকার এনেছে তারা। কিন্তু ইংলিশ স্ট্রাইকারের বেলায় সিটির যেন এ কোন বিমাতাসুলভ আচরণ।

তবে সেই রেকর্ড ভাঙ্গতে পারে এবার। ১২ বছর ধরে খেলে যাচ্ছেন একই দলে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনো শিরোপার দেখা পাননি হ্যারি কেইন। সময়ের অন্যরম সেরা স্ট্রাইকার হয়েও শিরোপা ঘরটা তার খাঁ খাঁ করছে। আর এই ট্রফি জয়ের আশাতেই হয়তো শৈশবের ক্লাবের সাথে সম্পর্ন ছিন্ন করতে পারেন ইংলিশ অধিনায়ক। হলে খুব একটা খারাপ হবে না, সিটির ট্যাক্টিসের সাথে খুব একটা খেলার ধরণে না মিললেও হ্যারি কেইনের ইনক্লুশন বদলে দিবে সিটির হালচাল।

তবে কেইনকে নিয়ে বড় সমস্যা টটেনহ্যামের সভাপতি ড্যানিয়েল লেভি। এর মতন ধুরন্দর লোক খুব কমই আছে ব্রিটিশ তল্লাটে। তার কাছ থেকে খেলোয়াড় বের করে আনোট কম দূর্ভোগ পোহাতে হয় না লোকেদের। দলের সেরা তারকাকে সহজে ছেড়ে দিবে, এমনটা ভাবাও দুঃসাধ্য। তবে তাঁকে মানানো গেলে বাকি কাজটা জলের মতন সোজা গার্দিওলার জন্য।

  • ড্যানি ইংস (ইংল্যান্ড, সাউদাম্পটন)

গত কয়েক মৌসুম ধরেই সাউদাম্পটনের আশা ভরসার প্রতীক ইংস। লিভারপুল থেকে সাউদাম্পটনে এসে লিজেকে বদলে ফেলেছেন ইংস। সে হিসাবে তার দিকে আগ্রহ দেখানো দোষের কিছু না। এই মৌসুমে গোল করেছেন ৮টি, স্ট্যাট দেখে ঈর্ষজনক মনে না হলেও গার্দিওলা যদি নিজের টাইপের খেলোয়াড় চান, তবে তার জন্য সেরা আকর্ষণ ইংস। নিজের খেলার স্টাইলের সাথে পুরোপুরি যায় ইংসের খেলার ধরণ।

তার উপর ইংল্যান্ডের ঘরের ছেলে ইংস। নতুন করে বদলানো ‘হোম গ্রোন’ কোটায় সিটির সুবিধাও হবে তাঁকে নিলে। এই মৌসুম শেষে তার চুক্তির মেয়াদও শেষ হচ্ছে। ফলে তাঁকে আনতে কোনোপয়সাই খরচ হবে না তাদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link