More

Social Media

Light
Dark

সবার আগে যাওয়া ছোট্ট সেই হোলিওক

বেন হোলিওক আসলে কার?

বাবা ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ইঞ্জিনিয়ার, মা ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার। বড় ভাই ক্রিকেট খেলেছেন ইংল্যান্ডের হয়ে। আবার তাঁর ক্রিকেটে হাতেখড়ি হয় হংকংয়ে। তাঁর নিজের স্কুল-কলেজ ছিল অস্ট্রেলিয়ার পার্থে। সেখানে ছোট বয়সেই একটি আঞ্চলিক দলের হয়েও খেলেছেন। কিন্তু তিনি ভাইয়ের সাথে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন ইংল্যান্ডের হয়ে। এক পারিবারিক অনুষ্ঠানে আবার সেই পার্থে গিয়েই তাঁর মৃত্যু হয়।

তাহলে বেন হোলিওক আসলে কার? তিনি আসলে কারোই না, তিনি ছিলেন শুধুই মরণের।

ads

কিছু মানুষ পৃথিবীতে আসেনই তাঁর দাগ রেখে যাওয়ার জন্য।

যেমনটা ইংল্যান্ড ক্রিকেটে এসেছিলেন বেঞ্জামিন কেইন হোলিওক। ইংল্যান্ড তো বটেই, মাত্র ২৪ বছর বয়সে পুরো ক্রিকেট বিশ্বে রেখে গেছেন শোকের ছায়া। আজ তাঁর মৃত্যুর ১৯ বছর পর এসেও ইংল্যান্ডের টিম মেটরা, অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর বন্ধুরা মনে রেখেছেন একজন বেন হোলিওক এসেছিলেন। তাঁদের বন্ধু, হাস্যোজ্জ্বল, সবার প্রিয় ছোট্ট হোলিওক।

১৯৭৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে জন্ম গ্রহণ করেন এই ক্রিকেটার। তাঁর বয়স যখন ৫ বছর তখন তাঁরা দুই বছরের জন্য হংকং চলে যান। সেখানেই ক্রিকেটের হাতেখড়ি হয় এই অলরাউন্ডারের। তারপর আবার অস্ট্রেলিয়া ফিরে এসে সিডনিতে জুনিয়র ক্রিকেট খেলেছেন। নয় বছর বয়সেই তিনি গ্ল্যাডেসভিলের হয়ে খেলতেন। সেই ছোট বয়স থেকেই তিনি তাঁর পেস বোলিং ও ব্যাটিং ট্যালেন্টের জন্য পরিচিত হয়ে ওঠেন।

তবে ১৯৮৪ সালে তিনি তাঁর বড় ভাই অ্যাডাম হোলিওকের সাথে চলে যান ইংল্যান্ডে। সেখানে তাঁর ভাইয়ের সাথে যোগ দেন সুররেতে। ১৯৯৬ সালে দলটির হয়ে অভিষেক ম্যাচেই ৭৪ রানে নেন ৪ উইকেট। সে বছর ইংল্যান্ডে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অসাধারণ একটি মৌসুম পার করার পর ১৯৯৭ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে ইংল্যান্ড ওয়ানডে দলে ডাক পান তিনি। মজার ব্যাপার হচ্ছে, তিনি দলে ডাক পেয়েছেলিন অস্ট্রেলিয়ার সিরিজের জন্যই। নিজের জন্মভূমির বিপক্ষেই ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন প্রতিভাবান এই ক্রিকেটার।

অভিষেক ম্যাচেই লর্ডসে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪৮ বলে ৬৩ রানের একটি ইনিংস খেলেন। সেই ম্যাচে প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচও নির্বাচিত হন তিনি। সেই ম্যাচের পর ইংল্যান্ডের গণমাধ্যম তাঁকে ভবিষ্যতের ইয়াম বোথাম বলেও ঘোষণা করে।

তারপর সে বছরই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকও হয় এই অলরাউন্ডারের। সেই ম্যাচে তাঁর বড় ভাই অ্যাডাম হোলিওকেরও টেস্ট অভিষেক হয় ইংল্যান্ডের হয়ে। তৃতীয় বারের মত দুই ভাইয়ের একসাথে টেস্ট অভিষেকের ঘটনা ঘটে ইংল্যান্ডের ক্রিকেটে।

মৃত্যুর আগে অল্প কয়েকটি ম্যাচ খেললেও তাঁকে নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখছিল ইংল্যান্ডের ক্রিকেট। কিন্তু  দেশটির হয়ে খেললেন মাত্র ২টি টেস্ট ও ২০ টি ওয়ানডে ম্যাচ। যার ব্যাটে হাজার হাজার রান আর শত উইকেট দেখার আশায় ছিল ইংল্যান্ড তাঁর জীবনটাই থেমে গেল মাত্র শ তিনেক রান আর ১২ উইকেটে।

অস্ট্রেলিয়ার পার্থে তাঁর স্কুলের কাছেই পারিবারিক অনুষ্ঠান থেকে ফিরছিলেন সেদিন। তবে তাঁর গাড়িটা দেয়ালের সাথে ধাক্কা খেলে সেখানেই মৃত্যুবরন করেন এই সম্ভাবনাময়ী ক্রিকেটার। মাত্র ২৪ বছর বয়সে মৃত্যুকেই আপন করে নিলেন। রেখে গিয়েছেন শুধুই একটা হাসিমুখের স্মৃতি।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link