More

Social Media

Light
Dark

আন্তর্জাতিকে সেরা, ফ্রাঞ্চাইজিতে কেন নয়!

ডেভিড মালানের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয়েছে ২০১৭ সালে। অভিষেকের এত বছর পর এখন, ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি দলে সবচাইতে বড় ভরসার নাম ডেভিড মালান। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তিনি ইতোমধ্যে র‍্যাংকিংসেরা ব্যাটসম্যানও হয়েছেন। কিন্তু, টি-টোয়েন্টির রমরমা খেলা যেখানে হয়, সেই ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে ডেভিড মালান ব্যার্থ। স্ট্রাইক রেটের ব্যাবধান কম থাকলেও ফ্রাঞ্জাইজি টি-টোয়েন্টিতে মালানের গড় আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির গড়ের অর্ধেক!

কিন্তু কেন?

  • পিচ-ফ্যাক্টর

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির পিচ আর ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের পিচের মধ্যে বেশ পার্থক্য আছে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে গ্রাউন্ডসম্যান আর কিউরেটর খুব যত্ন নিয়ে পিচ প্রস্তুত করেন। সেখানে কন্ডিশনও একটা নির্দিষ্ট ধারাতে থাকে। মালান যেমন তাঁর ১৯ টি-টোয়েন্টির ছয়টাই খেলেছেন নিউজিল্যান্ডে, নিজের ৮৫৫ রানের ৩২০ ই এসেছে এই কন্ডিশনে। আর কে না জানে, নিউজিল্যান্ডের বাউন্ডারিগুলো ছোট হওয়ায় তা টি-টোয়েন্টির জন্যে একেবারে আদর্শ!

ads

আবার ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে একেকদিনের পিচ হয় একেক রকম। মালানই যেমনটা বলছিলেন, ‘আমি যদি বাংলাদেশে খেলতে যাই সেখানে দেখা গেল সোমবারে এমন একটা পিচে খেলতে হচ্ছে যেটা কিনা ২০০ রানের উইকেট। কিংবা মঙ্গলবারের ম্যাচে দেওয়া হল ১২০ রানের উইকেট।’

মালান অবশ্য বলেছেন, ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের এই পিচের কারসাজি একজন খেলোয়াড়ের উন্নতিতে ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু মালানের ক্ষেত্রে সেটা হচ্ছে কই?

  • স্ট্রোক খেলার স্বাধীনতা

ইংল্যান্ড দলে মালান খেলেন টপ অর্ডারে। টপ অর্ডারে খেললেও মালানকে কখনই নিচের ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে চিন্তিত হতে হয়না। তিনি জানেন, ব্যাটিং অর্ডার কলাপ্স করলেও ছয়ে নামা এয়ন মরগান তা সামলাতে পারবেন। আবার, ইংল্যান্ড দলের নয়,দশ, এগারোতে নামা আর্চার, আদিল রশিদ কিংবা জর্ডানেরাও হাত খুলে খেলতে পারেন। মালানকে তাই ইংল্যান্ড দলে খেলতে হয় ফ্রি রোলে। তিনি হাত খুলে খেলতে পারেন, ব্যাট চালাতে পারেন।

কিন্তু ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে তিনি থাকেন কড়ি দিয়ে কেনা বিদেশি খেলোয়াড়। তাঁর ওপরই দলের চাহিদার বেশিরভাগ আপতিত থাকে। আবার ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের ব্যাটিং গভীরতাও অনেকটা সময় ইংল্যান্ড দলের ব্যাটিং অর্ডারের মত হয়না। এর ফলাফলও দৃশ্যমান- ইংল্যান্ডের হয়ে যেখানে মালানের স্ট্রাইক রেট ১৪৯.৫, সেখানে ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের হয়ে তা ১২৮.১!

মালান কি তাহলে প্রত্যাশার চাপেই ভেঙে পড়েন?

  • প্রস্তুতি

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রস্তুতির সাথে ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকের প্রস্তুতির যথেষ্ট পার্থক্য থাকে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একজন খেলোয়াড় একটামাত্র প্রতিপক্ষের জন্যে লম্বা সময় ধরে পরিকল্পনার সুযোগ পান। কিন্তু ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে প্রস্তুতির সময়টা পাওয়া যায় যথেষ্ট অল্প, একেক দিন  পর পর ভিন্ন প্রতিপক্ষের সাথে ম্যাচও খেলতে হয়। ডেভিড মালানের পারফরম্যান্সের ভিন্নতার জন্যে এটা একটা কারণ হতে পারে।

এই কথার খানিকটা সত্যতা অবশ্য মালানের কথাতেই পাওয়া যায়। অক্টোবরে প্রফেশনাল ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন  কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মালান বলেছিলেন, ‘আমি বেশিরভাগই প্রস্তুতির ওপর নির্ভর করি!’

  • ভাগ্য

ফ্রাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টিতে মালান ব্যার্থ এমনটা মনে করার আগে আরেকটা ব্যাপারও মনে রাখা জরুরি। তিনি এখনও ফ্রঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টির সবচাইতে স্ট্যান্ডার্ড আসর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) এই খেলেননি। এতে করে টি-টোয়েন্টি খেলার মাঝে তিনি বিরতি পান, এটা মালানকে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সাহায্য করতে পারে। মালান এটাকে ভাগ্য বলেবন নাকি দুর্ভাগ্য সেটা অবশ্য নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না!

 

লেখক পরিচিতি

আদ্যোপান্ত স্টোরিটেলার!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link