More

Social Media

Light
Dark

সাদা পোশাকের উইকেটরক্ষকনামা

ক্রিকেটে উইকেটরক্ষককে চাইলে হিসাবরক্ষকের সাথে তুলনা করা যায়। হিসাবরক্ষকের কোন ছোট খাট ভুল যেমন ওই প্রতিষ্ঠানের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হয়ে যেতে পারে, তেমনি উইকেটের পেছনে দাঁড়ানো মানুষটির ছোট দুই-একটা ভুল উক্ত দলটাকে ম্যাচ থেকে ছিটকে ফেলতে পারে। এটুকু বললেই বোঝা যায়, উইকেটরক্ষকের কাজটা কতটা জরুরী।

ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি থেকে টেস্ট বা বড় দৈঘ্যের ম্যাচে একজন উইকেটরক্ষকের গুরুত্ব বেশি। এজন্য শর্টার ফরম্যাটে যখন কিপিংয়ের সাথে ব্যাটিং দক্ষতা বড় করে দেখা হয় সেখানে টেস্টে ব্যাটিংয়ের থেকে কিপিংয়ে পারদর্শিতা বেশি দরকারি। কারণ এখানে কিপিং করতে হয় লম্বা সময় ধরে। তাই কিপিংয়ে ভুল হলেই ম্যাচের ফলাফল পাল্টে যেতে পারে।

বাংলাদেশ এই পর্যন্ত ১০০ টির বেশি টেস্ট খেলে ফেলেছে। বাংলাদেশ দলে সাদা পোশাকে উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব পালন করাদের তালিকাটাও নেহায়েৎ কম নয়।

ads
  • খালেদ মাসুদ পাইলট

লম্বা সময় তিনি ছিলেন জাতীয় দলের অবিসংবাদিত উইকেটরক্ষক। ২০০৭ সালে মুশফিককে সুযোগ করে দিতে তিনি স্বেচ্ছায় দল থেকে সরে যান। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সব প্রথমের সাথে জড়িয়ে থাকা পাইলট ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম টেস্টের রক্ষক। তারপর থেকে ২০০৭ পর্যন্ত ৬১ ইনিংস কিপিং করে করেন মোট ৮৭ টি ডিসমিসাল। যেখানে ৭৮ ক্যাচের পাশাপাশি রয়েছে নয়টি স্ট্যাম্পিং।

  • মুশফিকুর রহিম

৯৯ ইনিংসে ৯৮ ক্যাচ এবং ১৫ টি স্ট্যাম্পিং। মোট ১১৩ টি ডিসমিসাল। এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশের সফল উইকেটরক্ষক বলা যায় মুশফিকুর রহিমকে। কিন্তু পরিসংখ্যান সব সময় সঠিক উত্তর দেয় না। এখানেও তাই ঘটেছে।  পরিসংখ্যান অনুযায়ী মুশফিক সেরা উইকেটরক্ষক হলেও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সহজ কিছু সুযোগ মিস করে তিনি বিস্তর সমালোচিত হন। তবে, উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি বিশ্বসেরা। একমাত্র তিনিই উইকেটক্ষক হিসেবে খেলে পেয়েছেন দুটি ডাবল সেঞ্চুরি।

  • লিটন দাস

বর্তমানে বাংলাদেশ টেস্ট দলের নিয়মিত উইকেটরক্ষক হলেন লিটন দাস। কিপিংয়ের সাথে ব্যাটিং সার্মর্থ্যের কারণে তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ দলের অপরিহার্য সদস্যে পরিণত হন। কিপিংয়ের সময় ব্যাটসম্যানদের পজিশন দেখে দ্রুত তাঁর অবস্থান ঠিক করা তার কিপিংয়ের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক। ১৮ ইনিংস কিপিং করে ২৫ টি ক্যাচ ও ২ টি স্ট্যাম্পিংয়ের মাধ্যমে মোট ২৭ টি ডিসমিসাল করেন লিটন দাস।

  • নুরুল হাসান সোহান
CHRISTCHURCH, NEW ZEALAND – JANUARY 21: Nurul Hasan Sohan of Bangladesh unsuccessfully appeals for the wicket of Ross Taylor of New Zealand during day two of the Second Test match between New Zealand and Bangladesh at Hagley Oval on January 21, 2017 in Christchurch, New Zealand. (Photo by Kai Schwoerer/Getty Images)

বর্তমানে বাংলাদেশের সেরা উইকেটরক্ষক বলা হয় তাঁকে। তবুও ব্যাটিং সার্মথ্যে এগিয়ে থাকায় লিটন এখন বাংলাদেশ টেস্ট দলের উইকেটরক্ষক। মোট পাঁচ ইনিংস কিপিং করে তিনি মোট আটটি ডিসমিসাল করেন। যেখানে তিন স্ট্যাম্পিংয়ের সাথে আছে পাঁচটি ক্যাচ।

  • মোহাম্মদ সেলিম

দু’টি টেস্ট ম্যাচ খেলে ৪ টি স্ট্যাম্পিং করা সাবেক এই ক্রিকেটার বর্তমানে একজন ইঞ্জিনিয়ার। স্রেফ ভাগ্যগুনে তিনি জাতীয় দলে খেলেন। ২০০৩ বিশ্বকাপে ব্যাপক ভরাডুবির পর তৎকালীন অধিনায়ক খালেদ মাসুদের পরিবর্তে তিনি দলে ঢোকেন। তারপর দুই টেস্ট খেলার পর বাদ পরেন খুলনার হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা এই ক্রিকেটার।

অবাক করার মত একটা ব্যাপার হল যে, বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে প্রথম স্টাম্পিং খালেদ মাসুদ করেননি! করেন শাহরিয়ার হোসেন বিদুৎ। তিনি ছাড়াও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদেরও একটি স্ট্যাম্পিং করেছেন। নিয়মিত উইকেটরক্ষকের ইনজুরিতে আপদকালীন দায়িত্ব আরো অনেকে পালন করেছেন। এই তালিকায় ইমরুল কায়েস, রাজিন সালেহ, সামসুর রহমান শুভ, মোহাম্মদ মিঠুন (তিনি অবশ্য নিয়মিত উইকেটরক্ষক), সাব্বির রহমান এবং সাকিব আল হাসানদের নাম রয়েছে।

এদের মধ্যে একটু আলাদা ইমরুল কায়েস। বদলী বা স্টান্ডিং কিপার হিসেবে এক ইনিংসে পাঁচটি ডিসমিসালের মালিক বনে যান। এটা বদলী উইকেটরক্ষকদের মধ্যে সর্বোচ্চ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link