More

Social Media

Light
Dark

জন্ম ছিল ভুল সময়ে

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হল যে কোনো উদীয়মান ক্রিকেটারের জন্য একটি চূড়ান্ত অবস্থা। প্রত্যেক ক্রিকেটারের স্বপ্ন থাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলা এবং দীর্ঘ সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টিকে থাকতে চায় সবাই।

কিন্তু অনেক কারণেই অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টিকে থাকতে পারেননি। এমনকি অনেক সময় অনেক ক্রিকেটার পর্যাপ্ত সুযোগের অভাবে নিজেকে সঠিক ভাবে তুলে ধরতে পারেননি। কারণ তাদের সময় তাদের স্থানে অন্য একজন ক্রিকেটার নিজেকে প্রমান করে তুলেছেন। আর এই কারণেই ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণ করেও জাতীয় দলে নিজের স্থান পাকা করে তুলতে পারেননি।

অনেক ক্রিকেটারই এই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। এর ফলে যাদেরকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিয়মিত দেখা যায়নি।

ads
  • স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল (অস্ট্রেলিয়া)

স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল যদি অন্য কোনো দেশে জন্ম করতেন তাহলে হতে পারতেন বেশ সফল একজন স্পিনার। আন্তর্জাতিক মানের একজন স্পিনার হতে হলে যেসব গুণাবলি থাকার দরকার তার মধ্যে সেসকল সব গুনাবলিই ছিল তার মধ্যে। সে শুধু ভালো লেগ স্পিন করতে পারতেন না। সে বেশ ভালো ফ্লিপারও করতে পারতেন।

কিন্তু যখন ম্যাকগিল ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে ছিলেন তখন অস্ট্রেলিয়া দলে ছিলেন কিংবদন্তি লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্ণ। এই সময়ে অস্ট্রেলিয়া দলে টেস্ট ক্রিকেট এবং সীমিত সংস্করণের নিয়মিত মুখ ছিলেন শেন ওয়ার্ন । তার কারণে দলে রিজার্ভ স্পিনার হিসেবে সাইড বেঞ্চে বসে থাকতে হয়েছে স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল। যখন ওয়ার্ন ইনজুরি বা বিভিন্ন কারণে দলের বাইরে থাকতেন তখনই দলে সুযোগ পেতেন ম্যাকগিল। ম্যাকগিল অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলেছেন ৪৪ টেস্ট এবং ৩ ওয়ানডে।

  • পার্থিব প্যাটেল (ভারত)

জাতীয় দলে পার্থিব প্যাটেলের অভিষেক তখনই যখন জাতীয় দলের নির্বাচকরা চাচ্ছিলেন রাহুল দ্রাবিড়ের উপর থেকে উইকেট কিপিংয়ের দায়িত্ব কমে যায়। এই সময়ে জাতীয় দলে প্রায় নিয়মিতই সুযোগ পাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু সুযোগের সঠিক ব্যবহার করতে পারেননি তিনি।

এর কারণে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ে যান তিনি। পার্থিব প্যাটেলের জায়গায় চলে আসেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। এর পর ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফর্মেন্স এবং প্রচুর রান করার পরও আর দলে ফিরতে পারেননি। পার্থিব প্যাটেল ভারতের হয়ে খেলেছেন ২৫ টেস্ট, ৩৮ ওয়ানডে এবং দু’টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।

  • মুরালি কার্তিক (ভারত)

মুরালি কার্তিক ছিলেন বাম হাতি স্পিনার। তিনি বেশ দক্ষতার সাথে বোলিং করতে পারতেন। মুরালি কার্তিক যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলতেন তখন ভারতীয় দলে থাকতেন দুই কিংবদন্তি স্পিনার অনিল কুম্বলে এবং হরভজন সিং।

মুরালি কার্তিক মূলত যে ধরনের স্পিনার ছিলেন তাতে জাতীয় দলের ‘অটো চয়েজ’ হবার কথা ছিল। কিন্তু অনিল কুম্বলে এবং হরভজন জুটির সব ধরনের পরিবেশে দুর্দান্ত বোলিং করার জন্য মুরালি কার্তিকে খুব বেশি জাতীয় দলে দেখা যায় নাই। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ দুর্দান্ত পারফর্ম করতেন তিনি।

মুরালি কার্তিক ভারতের হয়ে ৮ টেস্ট এবং ৩৭ ওয়ানডে খেলেছেন।

  • মনোজ তিওয়ারি (ভারত)

মনোজ তিওয়ারি ভারতের হয়ে অনেক দিন খেলার মত সামর্থ্যবান ছিলেন। কিন্তু ভুল সময়ে ইনজুরিতে পড়ার কারণে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন। এরপর ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপে এসে পড়েন আরো কিছু ক্রিকেটার। যার ফলে আর জাতীয় দলে নিয়মিত হতে পারেননি।

মনোজ তিওয়ারি ঘরোয়া ক্রিকেটে বাংলার হয়ে বেশ দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন এবং এখনো বেশ ভালোই খেলে যাচ্ছেন। ভারতের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বেশ নিয়মিত পারফর্মার ছিলেন তিনি। মনোজ তিওয়ারি এখনো আন্তুর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাননি। এখন তার জায়গায় ভারতীয় দলে বেশ কিছু তরুণ ক্রিকেটার খেলে যাচ্ছেন। মনোজ তিওয়ারি ভারতের হয়ে খেলেছেন ১২ ওয়ানডে এবং তিন টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।

  • নুরুল হাসান সোহান (বাংলাদেশ)

নুরুল হাসান সোহান একজন উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান। বলা হয়, দেশের ইতিহাসেরই সবচেয়ে সেরা অলরাউন্ডার তিনি। জাতীয় দলে তার সময়ে খেলে যাচ্ছেন মুশফিকের মত অভিজ্ঞ ক্রিকেটার এবং লিটন দাসদের ক্রিকেটারের জন্য জাতীয় দলে সুযোগ পান না নিয়মিত।

জাতীয় দলের আশে পাশে সব সময়ই থাকেন। এছাড়াও ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ দাপটের সাথে খেলে যাচ্ছেন। সোহান বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়কত্বও করেছেন। তবে, বরাবরই তিনি এখানেও আপাতত আছেন আলোচনার বাইরে। সব ফরম্যাটেই তাঁর ভাল কিছু ইনিংস আছে, তবে লম্বা সময় কখনোই তাঁর ওপর ভরসা রাখে না বাংলাদেশ দল।

  • দীনেশ কার্তিক (ভারত)

ভারতীয় উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান। এই উইকেট রক্ষকের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ২০০৪ সালে। যখন ভারতীয় দলের নির্বাচকরা রাহুল দ্রাবিড়ের উপর থেকে চাপ কমানোর জন্য উইকেটের পিছনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে চাচ্ছিল।

কিন্তু এই একই সময়ে ভারতীয় দলে অভিষেক হয় আরও দুই উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান পার্থিব প্যাটেল এবং মহেন্দ্র সিং ধোনির। এই দুই উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যানের জন্য জাতীয় দলে নিয়মিত হতে পারেননি। বিশেষ করে মহেন্দ্র সিং ধোনির জন্য জাতীয় দলে সুযোগ পাননি তিনি। মহেন্দ্র সিং ধোনির অনুপস্থিতিতে বেশ কয়েকটি ম্যাচ খেলতে পেরেছেন তিনি।

দীনেশ কার্তিক ভারতের হয়ে খেলেছেন ২৬ টেস্ট, ৯৪ ওয়ানডে এবং ৩২ টি-টোয়েন্টি।

লেখক পরিচিতি

খেলাকে ভালোবেসে কি-বোর্ডেই ঝড় তুলি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link