More

Social Media

Light
Dark

ক্রিস গেইল, যে শুভ্রতা বিনোদন বঞ্চিত

এক দানবীয় তাণ্ডব। এক লম্বাটে টর্নেডো।  বাইশ গজে বিনোদনের এক পরিপূর্ণ প্যাকেজ। সাদা বলের একচ্ছত্র অধিপতিও বলা যায় তাকে। ক্রিস গেইল নিজের এমন এক চিত্রই এঁকেছেন তার পুরো ক্যারিয়ারে। টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে ক্রিকেটে তিনি ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছেন।

কিন্তু লাল বলের ক্রিকেটেও যে দক্ষতার পরিচয় রেখেছেন তিনি, সেটা অবশ্য আড়ালেই থেকে যায়। সবার মনেই একটা দৃঢ় প্রত্যয় বাসা বাঁধে। ক্রিস গেইল সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের জন্যেই আদর্শ বলে ধরে নিয়েছিলেন অনেকে। সাদা পোশাকের কার্যকর ক্রিস গেইলকে যেন দেখেও না দেখার ভান করেছে পুরো ক্রিকেট বিশ্ব।

টেস্ট ক্রিকেটে এক ইনিংসে ৪০০ রান করার রেকর্ডটা এখনও ব্রায়ান লারার দখলে। ক্রিস গেইলের যখন সবে মাত্র উত্থান হচ্ছে, তখন লারা নিজেই বলেছিলেন যে তার রেকর্ড গেইলের পক্ষেই ভাঙ্গা সম্ভব। যদিও সে শেষ অবধি তেমনটি হয়নি। কারণ সেই ‘ডগমা’, ‘গেইল সাদা বলের ব্যাটার’।

ads

ঠিক সে কারণেও হয়ত যতটুকু সুযোগ তার প্রাপ্য ছিল, ততটুকু তিনি পাননি। মাঝে অবশ্য বাগড়া দিয়েছে ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটও। চারিদিকে ছড়িয়েছে অর্থের রঙিন রোশনাই। আর তখন বেড়েছে গেইলের চাহিদা। এক প্রকার বাধ্য হয়েই টেস্ট ক্রিকেট থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন ক্রিস গেইল। পাশাপাশি ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট বোর্ডের নানা সংকট আরও বেশি নিরুৎসাহিত করেছে তাকে।

নতুবা এক ইনিংসে ৩৩৩ রান করা ক্রিস গেইল ৪০০ রানের গণ্ডিটা হয়ত ছাপিয়ে যেতেন নিশ্চতভাবেই। সাদা পোশাক শরীরে চাপিয়ে তিনি কঠিন কন্ডিশনেরও বোলারদের শাসন করেছেন। ৬৭.৫০ গড়ে রান করেছেন নিউজিল্যান্ডের মাটিতে। প্রোটিয়াদের ঘরের মাটিতে গড় ছিল তার ৫৪। ইংলিশদের উঠানে প্রায় ৫০ গড়ে রান করেছেন তিনি লাল বলের ক্রিকেটে।

এসব কিছুই অন্তত তার সক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ। ১৫টি সেঞ্চুরি এসেছে তার ব্যাট থেকে। যার দুইটি ৩০০ ছাড়িয়েছে। একটি আছে ২০০ ছাড়ানো ইনিংস। একটিতে অল্পের জন্য দ্বি-শতকের গণ্ডি পেরুতে পারেননি। ৩৭টি ইনিংসে অর্ধশত রান করেছেন বাঁ-হাতি দানব।

৭২১৪ রান রয়েছে এই ব্যাটারের নামের পাশে। অনায়াসে তা ছাপিয়ে যেতে পারত দশ হাজার রানের মাইল ফলক। ২০২১ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়া গেইল, টেস্ট খেলা ছেড়েছেন ২০১৪ সালে। এই সাত বছরে অন্তত ২০ খানা টেস্ট ম্যাচ খেললে তেমন রেকর্ড গড়া খেলোয়াড়ে পরিণত হতে পারতেন। কিন্তু হয়নি তা।

সব পেলে অবশ্য আক্ষেপ করবার জায়গাটা থাকত না। এমন মহারথীরা এমন কিছু অপূর্ণতা রেখে যান। যাতে করে  আক্ষেপের করুণ সুরে হলেও যেন তারা অমর থেকে যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link