More

Social Media

Light
Dark

বাংলাদেশ দলে হয় না মুস্তাফিজের যথাযথ ব্যবহার

৮০! মুস্তাফিজুর রহমানের খেলা শেষ পাঁচটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এটি তার বোলিং গড়। শ্রীলঙ্কা সিরিজে তিনি রান দেননি ৪০ এর নিচে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ঠিক আবারও সোরগোল পড়ে গেল- মুস্তাফিজ তবে ফিনিশ! বিশ্বকাপের দলে তাকে নেওয়া হবে, কারণ তিনি অটোচয়েজ। এমন নানা ধরণের কথা ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট পাড়ায়।

ঠিক সেই ফিনিশড মুস্তাফিজ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ খেলছেন। খেলছেন না ঠিক, মাতাচ্ছেন। ফ্রাঞ্চাইজি ভিত্তিক এই টুর্নামেন্টে তার বোলিং গড়- ১৪.২২। অতএব প্রতি ১৪ রান খরচায় একটি করে উইকেট নিতে সক্ষম হয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। কিন্তু শেষ তিন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে তিনি যথাক্রমে রান দিয়েছিলেন ৪২, ৪২ ও ৪৭। ঠিক এরপরই কিভাবে ঘুরে দাড়ালেন তিনি?

এমন প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। সেই প্রশ্নের একটা সহজ উত্তর হতে পারে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে মুস্তাফিজের করা ইনিংসের ১৮তম ওভারটি। সেই ওভারের শুরুতে স্ট্রাইকে ছিলেন ক্যারিবিয়ান হার্ড হিটার আন্দ্রে রাসেল। তিনি সাধারণত ডেথ ওভারে ক্রিজের বেশ ভেতরের দিকে থাকেন। ইয়োর্কার বলগুলো যাতে অনায়াসে খেলতে পারেন। তাছাড়া পেছনের দিকে থাকায় গুড লেন্থও খানিকটা খাটো হয় তার জন্যে। হাতখুলে খেলার ক্ষেত্রে যা ভীষণ কার্যকর রাসেলের জন্যে।

ads

এই রাসেলকে তো আটকানো প্রয়োজন। তাইতো চেন্নাই সুপার কিংস টিম থেকে পরিকল্পনা করা হলো অফ স্ট্যাম্পে বল ফেলে তা আরও বাইরের দিকে বের করা হবে। সে জন্যে মহেন্দ্র সিং ধোনি চিরায়র কিপিং পজিশন থেকে আরও খানিকটা অফের দিকে সরে দাড়ান। আর অফ স্ট্যাম্পের বাইরের দিকে ফুলার লেন্থে বল করবার কার্য সম্পাদনের দায়িত্ব এসে পড়ে মুস্তাফিজুর রহমানের কাঁধে। তিনি রীতিমত হতাশায় ডুবিয়েছেন আন্দ্রে রাসেলকে। এক নো-বলে চার ছাড়া আর কোন বাউন্ডারি আদায় করতে পারেননি রাসেল।

অথচ সেই সময়টায় হাতখুলে খেলতে পারেন বলেই রাসেলের কদর রয়েছে সারা বিশ্বে। কিন্তু মুস্তাফিজকে দিয়ে দেওয়া হয় তার বিপক্ষে পরিকল্পনা। তিনি সে পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা। এমনকি ডেথ ওভারে দুই ওভার বল করা মুস্তাফিজ দিয়েছেন স্রেফ ১০ রান। কিন্তু নিজের খেলা শেষ তিন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে শেষের দিকে বল করে মুস্তাফিজ খরচ করেছেন যথাক্রমে ৩৩, ২১ ও ২৩ রান।

ঠিক এখানেই প্রমাণিত হয় বাংলাদেশ জাতীয় দলের মুস্তাফিজ যথাযথভাবে ব্যবহৃত হন না। এখানে টিম অ্যানালিস্ট থেকে শুরু করে কোচ ও অধিনায়কেরও দায়িত্ব রয়েছে। আপনার দলের অন্যতম সেরা অস্ত্রকে আপনি কিভাবে ব্যবহার করবেন- সে বিষয়ে আপনার স্পষ্ট ধারণা থাকা চাই। তবে বাংলাদেশ দলে মুস্তাফিজের উপরই দিয়ে দেওয়া থাকে সে দায়িত্ব। তাকে স্বাধীনতার নামের অথৈ সাগরে ফেলে দেওয়া হয়।

কিন্তু এই মুস্তাফিজকে একটা সঠিক পরিকল্পনা ধরিয়ে দিতে পারলেই যে তিনি ভয়ংকর হয়ে উঠবেন সেদিক যেন কারও নেই ভ্রুক্ষেপ। তাইতো জাতীয় দলের জার্সিতে বড্ড বেশি মলিন হয়ে যান মুস্তাফিজুর রহমান। প্রতিবার কোন এক বিশ্বকাপের আগে তিনি আইপিএলে দেখিয়ে আসেন মুন্সিয়ানা। এরপর জাতীয় দলের জার্সি গায়ে আবার ফিঁকে হয়ে যান তিনি। তাতে করে সমালোচনার তীব্র বাণে বিদ্ধ হতে হয় মুস্তাফিজকে। পুরোটাই কি তার দায়?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link