More

Social Media

Light
Dark

১ রানে ৭ উইকেট, স্যার কার্টলি অ্যামব্রোস!

রিকি পন্টিংকে একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, কোন বোলারের মুখোমুখি হতে বেশি ভয় লাগতো? সাবেক অজি অধিনায়ক এক ক্যারিবিয়ান ফাস্ট বোলারের নাম নিয়েছিলেন। তিনি হলেন – স্যার কার্টলি এলকন লিনওয়াল অ্যামব্রোস।

নব্বই দশকের ব্যাটসম্যানরা আজো নিশ্চয়ই এই নামটা শুনে আতঙ্কে ভুগেন। ৬ ফুট ৭ ইঞ্চির আদর্শ উচ্চতার অধিকারী অ্যামব্রোস অপ্রত্যাশিতভাবে বলকে বাউন্স প্রদানে সক্ষম ছিলেন। তার সাথে গতির ঝড় তো ছিলই। সব মিলিয়ে তিনি ছিলেন মূর্তিমান আতঙ্ক। কোর্টনি ওয়ালশের সাথে বোলিং উদ্বোধনের নেতৃত্বে দেখা যেত তাঁকে। দু’জনে মিলে গড়ে তুলেছিলেন ইতিহাসের সেরা ফাস্ট বোলিং জুটি।

  • ব্যক্তিগত জীবন

অ্যান্টিগার সুইটস এলাকায় ১৯৬৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই বোলার। তাঁরা সাত ভাই-বোন ছিলেন। তার বাবা গ্রামের এক কাঠমিস্ত্রী ছিলেন। পরিবারের কারও ইতিহাস ছিল না ক্রিকেট খেলার। মায়ের অনুপ্রেরণায় ক্রিকেটার হয়ে উঠেন অ্যামব্রোস। মাত্র ১৬ বছর বয়সে ৬ ফুট ৭ ইঞ্চি হয়ে উঠেন অ্যামব্রোস।

ads

  • আন্তর্জাতিক অভিষেক

১৯৮৮ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক হয়। প্রথম বোলিং করতে এসে পাকিস্তানের দুই ওপেনার রমিজ রাজা ও শোয়েব মোহাম্মদকে বোল্ড আউট করে বিশ্বকে জানান দেন তার আগমনী বার্তা। অভিষেক ম্যাচে ১০ ওভার বল করে এক মেডেন সহ ৩৯ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। এরপরের মাসে টেস্ট অভিষেক হয় , কিন্তু অভিষেক টেস্টে জ্বলে উঠেন নাই অ্যামব্রোস নিজের মত। ম্যাচে ১২৫ রানে ২ উইকেট নেন। ওয়েস্টইন্ডিজও পরাজিত হয়। সিরিজে ৩ ম্যাচে নেন ৭ উইকেট।

এরপর ইংল্যান্ড সিরিজের প্রথম ইনিংসে নেন ৪ উইকেট। ১৯৯০ সালে ব্রিজটাউন টেস্টে ক্যারিয়ার সেরা ৪৫ রানের বিনিময়ে ৮ উইকেট নেন। আর ওইটাই তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগার।ম্যাচে সেরা বোলিং ফিগার ৮৪/১১ উইকেট। টেস্টে ২১বার ইনিংসে চার উইকেট, ২২ বার ইনিংসে ৫ উইকেট ও ৩ বার ১০ উইকেট লাভ করেন ম্যাচে। ৯৮ টেস্টে ১২ গড়ে ১৪৩৯ রান করেন। সাথে একটি অর্ধশত রানের ইনিংস রয়েছে।

  • বিখ্যাত সেই স্পেল

১৯৯৩ সালে ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা বোলিং স্পেলের রেকর্ড গড়েন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পার্থ টেস্টে। পার্থে ‘দ্য ফ্রাঙ্ক ওরেল ট্রফি’র শেষ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওপেনার জাস্টিন ল্যাঙ্গার ও ডেভিড বুন। ২৭ রানের মাথায় ইয়ান বিশপের বলে ১০ রান করে আউট ল্যাঙ্গার। ৫৮ রানের মাথায় আউট হন স্টিভ ওয়াহ আবারও ইয়ান বিশপের বলে। ৮৫ রানের মাথায় ম্যাচে নিজের প্রথম উইকেট নেন কার্টলি অ্যামব্রোস মার্ক ওয়াহকে আউট করে।

৮৮ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৪৪ রান করে বিদায় নেন বুন, আঊট হয় সেই ম্যাচের ইতিহাস গড়তে যাওয়া কার্টলি অ্যামব্রোসের বলে। কিছু বুঝে ওঠার আগে অ্যামব্রোসের পরের বলেই উইকেট কিপারের হাতে ক্যাচ দেন অ্যালান বোর্ডার।

অস্ট্রেলিয়ার দলীয় ১০০ রানের কোটায় আসলে , রানের খাতা খুলার আগে ইয়ান হিলিকে লারার হাতে ক্যাচ বানিয়ে প্যাভিলিয়নে পাঠায় অ্যামব্রোস। ১০২ রানের মাথায় আর্থারটনের তালুবন্দি হন মার্ভ হিউজ বোলার আবার সেই কার্টলি অ্যামব্রোস। এরপর ১০৪ রানের মাথায় ড্যামিয়েন মার্টিন ও জো অ্যাঞ্জেলকে শূন্য রানে বিদায় জানান ক্যারিবীয় দানব আর সাথে সাথে হয়ে গেল অসাধারণ সেই বিশ্বরেকর্ড।

৩২ বলে ১ রানের বিনিময়ে ৭ উইকেট। ভাবা যায়!

বিখ্যাত ফাস্ট বোলার ও স্বল্পভাষী অ্যামব্রোস তাঁর সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ৯৮টি টেস্টে অংশ নিয়ে ২০.৯৯ রান গড়ে ৪০৫ উইকেট লাভ করেন। ৯৮ টেস্টে ১৪ বার ম্যাচ সেরা ও ৬ বার সিরিজ সেরা হন এই বোলার। অ্যামব্রোসের খেলা ৯৮ ম্যাচের মাঝে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয় লাভ করে ৪৪ ম্যাচে আর সেখানে ১৬ গড়ে ২২৯ উইকেট লাভ করেন।

অ্যামব্রোসের খেলা ৯৮ ম্যাচের মাঝে ৬১ ম্যাচে অস্ট্রলিয়া ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যেখানে ২৯২ উইকেট লাভ করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link