More

Social Media

Light
Dark

২০১১ বিশ্বকাপ ও কিছু মিথ

২০১১ বিশ্বকাপ। সম্ভবত এই বিশ্বকাপ দর্শকদের জন্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল। বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের ইংল্যান্ডকে হারানো, নিউজিল্যান্ডের পাকিস্তানকে হারানো, আবার পাকিস্তানের ফাইনালিস্ট শ্রীলঙ্কাকে হারানো, ভারত ইংল্যান্ডের টাই ম্যাচ এবং সম্ভবত ২০১৯ সালের আগে পর্যন্ত সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ ফাইনাল। সবই ছিল এই বিশ্বকাপে।

ভারত জেতার আগে অবধি কারোরই এই বিশ্বকাপের থিম সং পছন্দ হয়েছিল বলে আমার জানা নেই। ফাইনালে ভারত ২৭৪ তাড়া করতে গিয়ে মাত্র ২ টো ছয় মারে। দুটোই মেরেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। এটা থেকে বোঝা যায় ভারত বিশ্বকাপ জিততে কতটা মরিয়া ছিল, যে যুবরাজ, কোহলি বা গম্ভীর একটাও ছয় মারার চেষ্টা না করে রান রেট বজায় রাখছিলেন। ধোনিও অনেক পরে প্রথম ছয় মারেন। আর উইনিং স্ট্রোক হিসেবে দ্বিতীয়টি।

‘ধোনি ফিনিশেশ অফ ইন স্টাইল’  – ছক্কাটা মারার সময় ১ বলে ৬ রান দরকার ছিলনা। অনেক ক্রিকেটভক্তদের মনে এরকম একটা মিথ আছে। ১১ বলে ৪ রান বাকি থাকা অবস্থায় মহেন্দ্র সিং ধোনি ৬ মেরে ফিনিশ করেন।

ads

গৌতম গম্ভীরের ইনিংসটি যতবার দেখি মুগ্ধ হই, কেননা একদিকে খুব বেশি রিস্ক না নিয়েও তিনি বাউন্ডারি মেরে রান রেট বজায় রেখেছিলেন। সচিনের আউট এর সময় ৬ ওভারে ৩১/২, থেকে ভারত ৯ ওভারে ৩৫ রানে পৌঁছায়। এই সময় খোলসে ঢুকে গেলে ভারতের সামনে আস্কিং রেট ৬ ছাড়িয়ে ৭ এ পৌঁছে যেতে পারতো এবং সেক্ষেত্রে ম্যাচ জেতা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ত, এমনকি ধোনির পক্ষেও।

কিন্তু, ৯ ওভারের পর থেকে বিরাট কোহলি ও গম্ভীরের মহাগুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ ভারতকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনে। ফাইনালের মত বড়ো ম্যাচে যেটা সচিন কম রানে আউট হলে খুব কম দেখা যেত। এমনকি ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালেও শচীন টেন্ডুলকার আউট আর ভারতের ভেঙে পড়া খুব কমন দৃশ্য ছিল।

ধোনির ইনিংসটি নিয়ে অনেকে একটু নাক সিঁটকান। গম্ভীরের থেকে নাকি তিনি লাইমলাইট কেড়ে নিয়েছেন। কিন্তু একটু ম্যাচ সিচুয়েশন দেখলে বোঝা যাবে যে কোহলি আউট হবার সময়েও আস্কিং রেট প্রায় ৬। সেই সময়ে একজনকে ওভার পিছু একটি বাউন্ডারি বা পাঁচ ছটি সিঙ্গেল নিয়ে স্কোরবোর্ড সচল রাখতে হতো।

গম্ভীর তখন অলরেডি ৫০ করে ফেলেছেন এবং ফাইনাল ম্যাচের প্রেসার, রান আউট থেকে বাঁচতে ডাইভ ইত্যাদি দিয়ে বেশ ক্লান্ত। তাঁর একার উপর রান করার দায়িত্ব থাকলে এত বড় রান চেস সম্ভব হতো না, ২৭৫ রান একজন ব্যাটসম্যানের বড়ো স্কোর দিয়ে জেতা যায়না। ধোনি পুরো সার্জনের মত গ্যাপ খুঁজে খুঁজে বাউন্ডারি মারছিলেন।

তাই, ভারতের জয়ের ৭০-৮০ রান বাকি থাকতেই শ্রীলঙ্কা ম্যাচ থেকে হারিয়ে যায়। বিশ্বকাপ ফাইনালের মত ম্যাচে যা প্রায় অবিশ্বাস্য। এমনকি গম্ভীর আউট হবার পরেও মনে হয়নি শ্রীলঙ্কার কোনো সুযোগ আছে, এতটাই ডমিনেট করেছিলেন ধোনি এবং রান চেস কে কন্ট্রোলে রেখেছিলেন।

২০১১ বিশ্বকাপ জয় একটা পুরোপুরি টিম এফোর্ট। দলগত ভাবে ৬-৭ জন প্রতি ম্যাচে পারফর্ম না করলে বিশ্বকাপের মত বড়ো ট্রফি জেতা সম্ভব নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link