More

Social Media

Light
Dark

‘নীল’ হয়ে নিলের বিদায়!

টেস্ট ইতিহাসের ভয়ংকরতম পেসত্রয়ী কারা? এমন প্রশ্নের বিপরীতে অনেকেই কার্টলি অ্যামব্রোস, ইয়ান বিশপ, কোর্টনি ওয়ালশ- ক্যারিবিয়ান পেসত্রয়ীর মাঝে উত্তর খুঁজে নিতে পারেন। কিংবা সমসাময়িক কালে অস্ট্রেলিয়ার মিশেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজলউড ত্রয়ীকে এগিয়ে রাখেন বেশির ভাগ মানুষ। কিন্তু জানেন কি, পেসত্রয়ীর হিসেবে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ডটা নিউজিল্যান্ডের তিন পেসার সাউদি, বোল্ট আর ওয়াগনারের।

সাউদির আউট সুইং, বোল্টের ইন সুইং আর ওয়াগনারের বাউন্সার ও গতির অপূর্ব মিশেলে নিউজিল্যান্ড পেয়েছে অবিশ্বাস্য এক বোলিং আক্রমণ। আর সে কারণে গত কয়েক বছরে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড রীতিমত হারতেই ভুলে বসেছে। তবে এ পেসত্রয়ীর একজনের অবশেষে প্রস্থান ঘটতে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন নিল ওয়াগনার।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচের একাদশে বাঁহাতি এ পেসার থাকবেন না। নির্বাচকেরা আগেই সেটি জানিয়ে রেখেছিল নিল ওয়াগনারকে। এমনিতেও সবশেষ কয়েকটি সিরিজের একাদশে নিয়মিত মুখ ছিলেন না। নিউজিল্যান্ডের সর্বশেষ ১৭ টেস্টের ৭টিতে একাদশে ছিলেন রাখা হয়নি তাঁকে। সব মিলিয়ে নিজের শেষের ‘শুরু’ ভেবেই অবসরের ঘোষণা দিয়ে দিলেন এ পেসার।

ads

৬৪ টেস্টের ক্যারিয়ারে নিল ওয়াগনারের পরিসংখ্যান বেশ সমৃদ্ধ। ক্যারিয়ারে মাত্র ২৭.২৭ গড় ও ৫২.৭ স্ট্রাইক রেটে ২৬০ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ১০০ উইকেট নেওয়া কিউই বোলারদের মধ্যে স্যার রিচার্ড হ্যাডলিরই পর তাঁরই সবচেয়ে ভালো স্ট্রাইক রেট ছিল। অবশ্য কিউইদের হয়ে মাঠ মাতানো এ পেসারের জন্মস্থান আবার দক্ষিণ আফ্রিকায়। ২০০৮ সালে জন্মভূমি দক্ষিণ আফ্রিকা ছেড়ে ওটাগোর হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে নিউজিল্যান্ডের ডানেডিনে চলে আসেন তিনি। এরপর ২০১২ সালে কিউইদের হয়ে অভিষেক হয় তাঁর। বাকিটা তো ইতিহাস।

সাউদি, বোল্টদের সঙ্গে লাল বলের ক্রিকেটে গড়ে তোলেন অপ্রতিরোধ্য এক পেস আক্রমণ। যে পেসত্রয়ী পিছনে ফেলেছে কার্টলি অ্যামব্রোস, ওয়াশ, বিশপ ত্রয়ীকেও। ৩৭ টেস্ট একসঙ্গে খেলে ক্যারিবিয়ান এ পেসত্রয়ী নিয়েছিল ৪১২ উইকেট। সেখানে ৩৬ ম্যাচে ৪৯০ উইকেট উইকেট নিয়েছেন সাউদি-বোল্ট-ওয়াগনার পেসত্রয়ী।

শুধু তাই নয়, জেতা ম্যাচেও বল হাতে দারুণ অবদান রেখেছেন নিল ওয়াগনার। ক্যারিয়ারে জেতা ৩২ টেস্ট তাঁর উইকেট ১৪৩ টি। এ ছাড়া ২০২১ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপ জেতার ক্ষেত্রেও অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন এ পেসার। তবে তরুণদের জায়গা করে দিতেই আচমকা অবসরের ঘোষণা দিয়ে দিলেন ওয়াগনার। অবশ্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও খেলা চালিয়ে যাবেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে।

নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন এমনিতেই পেসারদের জন্য আদর্শ। তবে সবুজ উইকেটে রীতিমত প্রতিপক্ষের উপর ত্রাস ছড়িয়েছেন ওয়াগনার। নিউজিল্যান্ডের নরম মাটির উইকেটে ওয়াগনারের বাউন্সারের উচ্চতা আঁচ করা বেশ কঠিনই ছিল ব্যাটারদের জন্য। এমনকি ক্যারিয়ারে অজি ব্যাটার স্টিভেন স্মিথকে এই বাউন্স দিয়েই বেশ ভুগিয়েছেন এ পেসার।

ওয়াগনারের গতির বৈচিত্র্যতা আবার আরো লক্ষণীয়। ১২৫ কিলোমিটারেও বল করেন। আবার তাঁর ছোঁড়া বলে ১৪০ ও পেরিয়ে যায় অনেক ডেলিভারিতে। টেস্ট ক্রিকেট এমন বৈচিত্র্য বোলারের দেখা খুব কমই পেয়েছে বটে। তবে আপাতত ইতিহাসের আর্কাইভে বন্দী হচ্ছেন তিনি।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link