More

Social Media

Light
Dark

শ্যামারের সাতে অস্ট্রেলিয়া কুপোকাত

একেবারে সঠিক লেন্থ। সেই বলটা মিডল স্ট্যাম্পকে ফেললো উপড়ে। এরপরই ২৪ বছর বয়সী এক ক্যারিবিয়ান তরুণ দৌড়ে বেড়ালেন গ্যাবার বুকে। অস্ট্রেলিয়ার দূর্গে শ্যামার জোসেফ করলেন আনন্দোল্লাস। অজি দর্শকদের সামনে এক  বুনো উদযাপনই করলেন তিনি। বাইশ গজ থেকে যে উল্লাস নিয়ে গেছেন নিজেই বাউন্ডারির বাইরে।

উল্লাস করা তো তারই সাজে। নিজের দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচেই যে জয়ের নায়ক তিনি। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং দূর্গকে করেছেন দিশেহারা। অজিদের দিয়েছেন পরাজয়ের তিক্ততা। নতুন দিনের দিশারি হয়েই যেন দেখালেন নিজের দুর্ধর্ষ বোলিং। হারিয়ে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের আক্ষেপের অবসান ঘটানোর এক বার্তাও হয়ে রইলেন শ্যামার জোসেফ।

গুণে গুণে সাত খানা উইকেট যুক্ত হয়েছে শ্যামারের নামের পাশে। স্টিভ স্মিথের নিঃসঙ্গ লড়াইকে আড়ালে রেখে জয়োল্লাসে মেতেছেন ডানহাতি এই পেসার। অথচ দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সময় পায়ের চোট নিয়ে উঠে যেতে হয়েছে তাকে। তবুও অভিষেকের পর টানা দ্বিতীয় ম্যাচেই পেয়েছেন ফাইফারের দেখা। ক্যারিবীয় পেস আক্রমণের উত্তরসূরি হয়েই তিনি ব্রিসবেনে চালিয়েছেন তান্ডব।

ads

জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১৬। বিশ্বের যেকোন প্রান্তে টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে ২০০ এর বেশি রান তাড়া করে জেতা যেন এক উত্তাল সমুদ্র। অস্ট্রেলিয়ার সেই সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার পথে বজ্রপাত হয়েই আগমন ঘটেছে শ্যামারের।

শুরু থেকেই ভয় ধরিয়েছেন শ্যামার। তার গতি, লাইন লেন্থ, সেই সাথে সুইং। সবকিছু মিলিয়ে হাপিত্যেস করতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের। তবে চতুর্থ ইনিংসে উইকেট শিকারের যাত্রাটা শ্যামার শুরু করেন একটু দেড়িতেই। তবে সেটাও শুরু হয় এক ব্রেকথ্রু এনে দিয়ে।

২১৬ রানের লক্ষ্যে ৪২ রানে দুই উইকেট হারায় অজিরা। এরপর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন স্টিভেন স্মিথ ও ক্যামেরুন গ্রিন। তাদের ৭১ রানের জুটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের গলার কাটায় পরিণত হয়। জয়ের স্বপ্নটা মলিন হতে শুরু করে। তবে শ্যামার তেমনটা হতে দেননি। বোল্ড আউট করে গ্রিনকে পাঠান প্যাভিলিয়নে। সেখান থেকেই শুরু শ্যামারের তান্ডবের।

এরপর গুণে গুণে আরও ছয় খানা উইকেট নিজের করে নিয়েছেন তিনি। পরবর্তী ১৯ রানের মাঝেই তিনি অস্ট্রেলিয়ার মিডল অর্ডার লণ্ডভণ্ড করে দেন। মার্নাস লাবুশেন, মিচেল মার্শ, অ্যালেক্স ক্যারিরা অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করেন শ্যামারের গতির সামনে। তুখোড় সব ব্যাটারদের ব্যাটেও যেন ছিল না কোন জবাব।

মাঝে লাথান লিঁও এর উইকেটটি আলজারি জোসেফ তুলে নেন। জশ হ্যাজেলউডকে বোল্ড করেই তবে থামেন শ্যামার জোসেফ। নিজের নেওয়া সাত উইকেটের তিনটিই তিনি শিকার করেছেন উইকেট উপড়ে ফেলে। দারুণ বোলিংয়ের কল্যাণেই ১৯৯৭ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার গ্যাবায় জয়ের দেখা পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

হারানো জৌলুশ খুঁজে ফেরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই দলটার অভিজ্ঞতার ঝুড়ি ভারি নয় ততটা। তবে তারুণ্য হাজির হয়েছে সঞ্জীবনী সুধা হয়ে। শ্যামার জোসেফরা দেখাচ্ছেন আশার আলো। দিনবদলের নতুন দিনে এই জয় যে ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা তো উদযাপনেই স্পষ্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link