More

Social Media

Light
Dark

৩০ পয়েন্টের মিশন সম্পন্ন

প্রথম দুই ম্যাচের জয়ে স্বস্তি থাকলেও তৃপ্তি মেলেনি স্বাগতিক দর্শকদের। প্রথম দুই ম্যাচেই প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশি বোলারদের তোপের মুখে অল্পতেই গুটি যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যার কারণে লম্বা সময় ব্যাট করতে হয়নি বাংলাদেশকে। আজ শেষ ওয়ানডেতে আসে সেই সুযোগ। টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করার সুযোগ পায় বাংলাদেশ।

প্রথমে ব্যাট করে তামিম, সাকিব, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাফসেঞ্চুরিতে স্কোরবোর্ডে ২৯৭ রান তোলে বাংলাদেশ। ২০১৫ সালে বিশ্বকাপে নেলসনে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে একই ম্যাচে এই চার জন হাফসেঞ্চুরি পাওয়ার পর আজ দ্বিতীয় বারের মতো এই কীর্তি গড়ার ম্যাচে বল হাতে সাইফউদ্দিনের সাথে আলো ছাড়িয়েছেন মুস্তাফিজ ও মিরাজ। তাতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১২০ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে হোয়াটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ।

এই সিরিজ দিয়েই শুরু হয়েছে বাংলাদেশের ওয়ানডে বিশ্বকাপের সুপার লিগের মিশন। তিন ম্যাচেই জয় তুলে নিয়ে সিরিজ থেকে পূর্ণ ৩০ পয়েন্ট অর্জন করে ওয়ানডে সুপার লিগেও উড়ন্ত সূচনা করেছে বাংলাদেশ।

ads

স্বান্তনার দশ পয়েন্ট পেতে লক্ষ্যটা মোটেও সহজ ছিলো না ক্যারিবিয়ানদের জন্য। এমন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে যেরকম শুরুর প্রয়োজন সেটাও পায়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মোস্তাফিজের জোড়া আঘাতে শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়ে বসে সফরকারীরা। মোস্তাফিজ ফিরিয়ে দেন কেজর্ন ওটলে (১) ও সুনীল অ্যামব্রোসকে (১৩)। এরপর মিরাজের ঘূর্ণিতে কাইল মেয়ার্স (১১) ফিরে গেলে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

৪৭ রানে ৩ উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪র্থ উইকেট জুটিতে অধিনায়ক জেসন মোহাম্মাদ ও বোনারের ব্যাটে ঘুড়ে দাঁড়ানোর চেস্টা করে। এই জুটিতে আসে ৩২ রান। সিরিজে প্রথম বারের মতো খেলতে নামা সাইফউদ্দিনের জোড়া আঘাতে ফিরে যান দুজনই। জেসন মোহাম্মাদ করেন ১৭ ও বোনারের ব্যাট থেকে আসে ৩১ রান।

এরপর নিয়মিত বিরতীতে উইকেট হারাতে থাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মাঝখানে রোভম্যান পাওয়েল চেস্টা করলেও জয়ের জন্য যথেষ্ঠ ছিলো না তা। ৪৯ বলে ৪৭ রান করে সৌম্যর বলে আউট হন পাওয়েল। রেইফারের ব্যাট থেকে আসে ২৭ রান। বাংলাদেশের পক্ষে মোহাম্মাদ সাইফউদ্দিন ৩ টি, মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ ২ টি এবং সৌম্য সরকার ও তাসকিন আহম্মেদ শিকার করেন ১ টি করে উইকেট।

এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে তামিম-সাকিব-মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাফসেঞ্চুরিতে ২৯৭ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। তবে শুরুটা ভালো হয়নি স্বাগতিকদের। আগের দুই ম্যাচের মতো আজকেও ব্যর্থ ছিলেন লিটন দাস। ইনিংসের প্রথম ওভারে রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন লিটন।

সাকিব আল হাসানকে সরিয়ে তিনে নাজমুল হোসেন শান্তকে সুযোগ দিয়েছিল বাংলাদেশ। আগের দুই ম্যাচের মতো শেষ ম্যাচেও সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন শান্ত।

তিন চারে ৩০ বলে শান্তর ব্যাট থেকে আসে ২০ রান। আগের দুই ম্যাচে করেছিলেন ১ ও ১৭ রান। দলীয় ৩৮ রানে ২ উইকেট হারানোর পর উইকেটে এসে তামিম ইকবালের সাথে জুটি বাঁধেন সাকিব আল হাসান। তৃতীয় উইকেট জুটিতে দুজন সংগ্রহ করেন ৯৩ রান। ৮০ বলে তিন চার ও এক ছয়ে ৬৪ রান করে তামিম বিদায় নিলে ভাঙ্গে এই জুটি।

বাংলাদেশের তৃতীয় জুটি হিসেবে ওয়ানডেতে দুই হাজার রানের মাইলফক স্পর্শ করেছেন তামিম ও সাকিব। এর আগে প্রথম কীর্তির সাথেও জড়িত আছে সাকিবের নাম। মুশফিক ও সাকিব জুটির সংগ্রহ ৩২০৪ রান এবং মাহমুদউল্লাহ মুশফিক জুটির সংগ্রহ ২২১৭ রান।

তামিমের বিদায়ের পর উইকেটে আসেন মুশফিকুর রহিম; জুটি বাঁধেন সাকিবের সাথে। এই জুটিতে দ্রুত রান তুলতে থাকে বাংলাদেশ। ৫২ বলে ৪৮ রান আসে এই জুটিতে। তামিমের মতো ইনিংস বড় করতে পারেননি সাকিবও। ৮১ বলে ৫১ রান করে বিদায় নেন সাকিব।

তবে স্বাগতিকদের রানের গতি বাড়ে মাহমুদউল্লাহ উইকেটে আসার পর। মাহমুদউল্লাহকে সাথে নিয়ে ৫ম উইকেটে মাত্র ৫৮ বলে ৭৩ রান যোগ করেন মুশফিকুর রহিম। এই জুটির কল্যাণেই বড় সংগ্রহের পথ পায় বাংলাদেশ। আক্রমণাত্মক খেলতে গিয়ে ৫৫ বলে চারটি চার ও দুটি ছয়ে ৬৪ রান করে মুশফিক আউট হয়ে গেলে ভাঙ্গে এই জুটি।

তবে মুশফিক আউট হয়ে গেলেও রানের গতি কমতে দেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে তুলে নেন ক্যারিয়ারের ২২তম হাফসেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত রিয়াদের ৪৩ বলে অপরাজিত ৬৪ রানে ভর করে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৯৭ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় স্বাগতিকরা। সৌম্য সরকার ৭ ও সাইফউদ্দিন অপরাজিত থাকেন ৫ রানে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আলজারি জোসেফ ও রেইফার ২ টি এবং কাইল মায়ার্স ১ টি উইকেট শিকার করেন।

  • সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৯৭/৬ (রিয়াদ- ৬৪*, মুশফিক- ৬৪, তামিম- ৬৪, সাকিব- ৫১; জোসেফ- ২/৪৮,  রেইফার- ২/৬১, মায়ার্স- ১/৩৪)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৪৪.২ ওভারে ১৭৭/১০ (অ্যামব্রোস- ১৩, বোনার- ৩১, পাওয়েল- ৪৭, রেইফার- ২৭; সাইফউদ্দিন- ৩/৫১, মুস্তাফিজুর- ২/২৪, মিরাজ- ২/১৮, সৈম্য- ২২/১, তাসকিন- ৩২/১)

ফলাফল: বাংলাদেশ ১২০ রানে জয়ী।

ম্যাচ সেরা: মুশফিকুর রহিম (বাংলাদেশ)।

সিরিজ সেরা: সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ।

সিরিজ: বাংলাদেশ ৩-০ তে জয়ী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link