More

Social Media

Light
Dark

শান্তর ‘নতুন’ বাংলাদেশের প্রথম ইতিহাস

চতুর্থ দিনশেষেই সিলেট টেস্ট জয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ছিল বাংলাদেশ। শেষ দিনে এসে কিউইদের ইনিংসে লোয়ার অর্ডার ব্যাটারদের প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা অপেক্ষাই বাড়িয়েছে শুধু। ২ সেশন হাতে রেখেই ১৫০ রানে ম্যাচটি জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এর আগে ১৭ টেস্ট খেলে মাত্র একটিতেই জয়ের হাসি হেসেছিল টাইগাররা। মাউন্ট মঙ্গানুইতে সেই ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের পর এবার সিলেটে এসে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটালো বাংলাদেশ। বাংলাদেশের দেওয়া ৩৩২ রানের লক্ষ্যে ১৮১ রানেই গুঁড়িয়ে গেছে নিউজিল্যান্ড।

কিউইদের শেষ ভরসা হিসেবে এ দিন ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন ড্যারিল মিশেল। লক্ষ্য ছিল, সিলেট টেস্টে নাটকীয় মোড় দেওয়া। তবে কিউই এ ব্যাটার শেষ পর্যন্ত পারেননি।  নাঈম হাসানের করা দিনের দশম ওভারের ৪র্থ বলটি তুলে মারতে চেয়েছিলেন মিশেল। ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে থাকা ফিল্ডার তাইজুল দারুণ দক্ষতায় সেই ক্যাচ লুফে নেন।

ads

অবশ্য ড্যারিল মিশেল ফিরে যাওয়ার ক্রিজে এসে আক্রমণাত্বক ব্যাটিং শুরু করেছিলেন টিম সাউদি। ইশ সোধিকে নিয়ে দ্রুত রান তোলার দিকেই নজর দিয়েছিলেন এ কিউই অধিনায়ক। তাতে অবশ্য স্কোরবোর্ডে ৪৬ রান যোগ করে ফেলে এ জুটি। তবে তা টাইগারদের কপালে চিন্তার ভাঁজ এনে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল না।

তাইজুলের বলে শর্ট মিড উইকেটে সজোরে চালিয়েছিলেন সাউদি। তবে জাকির হাসানের বিশ্বস্ত হাত ভুল করেনি। ফলত, ২ ছক্বা ও ১ চারে ২৪ বলে ৩৪ রানের ইনিংস খেলে ফিরে যেতে হয় নিউজিল্যান্ড অধিনায়ককে। আর এই উইকেটের মধ্য দিয়েই টেস্ট ক্যারিয়ারে ১২তম বারের মতো ফাইফারের স্বাদ নিলেন তাইজুল।

বাঁহাতি এ স্পিনার সেখানেই থামেননি। নিউজিল্যান্ডের শেষ উইকেটটিও তুলে নেন তিনি। আগের ইনিংসে চার উইকেট আর এই ইনিংসে ৬ উইকেট মিলিয়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় বারের মতো টেস্ট ম্যাচে ১০ উইকেট শিকারের কীর্তিতে নাম লেখান তাইজুল। তাইজুলের ১০ উইকেট শিকারের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশ পায়ে আকাঙ্খিত সেই জয়ের ক্ষণ।

এর আগে টসে জিতে দারুণ সংগ্রহের পথে হাটলেও ৩১০ রানের থেমেছিল বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। তার বিপরীতে নিউজিল্যান্ড অবশ্য খুব বেশি রানের লিড নিতে পারেনি। কেন উইলিয়ামসনের সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ৩১৭ রান তুলেছিল কিউইরা। ৭ রানে পিছিয়ে থাকলেও বাংলাদেশ ব্যবধান গড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর সেঞ্চুরি, মুশফিক আর মিরাজের ফিফটিতে ৩৩১ রানের লিড নেয় টাইগাররা। আর এখানেই ম্যাচে এগিয়ে যায় তাঁরা।

বাংলাদেশি স্পিনারদের সামনে অসহায় আত্মসমপর্ণ ঘটে কিউই ব্যাটারদের। ড্যারিল মিশেল বাদে কোনো ব্যাটারই পেরোতে পারেননি পঞ্চাশের গণ্ডি। ফলত, লক্ষ্য থেকে ১৫১ রান দূরে থাকতেই শেষ হয় নিউজিল্যান্ডের ইনিংস।

মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের পর সিলেট। একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জয়। সাবেক বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে পাওয়া এই জয় অন্যরকমই বটে। তবে লাল বলের ক্রিকেটে দেশের মাটিতে এই প্রথম নিউজিল্যান্ডকে হারালো বাংলাদেশ। ‘প্রথম’ এর অর্জনের দিনে এটিও এক ঐতিহাসিক জয় বটে।

তবে সবচেয়ে সুখকর ব্যাপার হচ্ছে, নতুন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে বাংলাদেশের শুরুটাই হলো জয় দিয়ে। বিশ্বকাপ দুঃস্মৃতি ভুলে এমন দুর্দান্ত বাংলাদেশকেই তো দেখার অপেক্ষায় ছিল সবাই। নাজমুল হোসেন শান্তর ‘নতুন’ বাংলাদেশ সেটা পেরেছে। দারুণ প্রতাপেই বিজয়ের গল্প লিখেছে।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link