More

Social Media

Light
Dark

আশার প্রদীপ নিভেছে আক্ষেপের বাতাসে

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্র। শেষ দুই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের প্রাপ্তি বলতে ছিল শুধু একটি মাত্র জয়। লাল বলের ক্রিকেটে এমন দুঃস্মৃতি মুছে ফেলতে তাই নতুন শুরুটা দারুণভাবেই করতে চেয়েছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে সিলেট টেস্টে সকাল পেরিয়ে দুপুর, এরপর বিকেল গড়াতেই দেখা মিলল চিরচেনা সেই বাংলাদেশকে।

শুরুর ছন্দ হারিয়েছে শেষ বিকেলে। তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার। ব্যর্থ মিডল অর্ডার। দলের দুঃসময়ে হাল ধরতে পারেনি লোয়ার অর্ডার ব্যাটাররাও। প্রথম দিন শেষে স্কোরবোর্ডে বাংলাদেশের জমা হয়েছে ৯ উইকেটে ৩১০ রান।

তাইজুল ৮ ও শরিফুল ১৩ রানে অপরাজিত থেকে শুরু করবেন দ্বিতীয় দিন। স্কোর দেখে বোঝার উপায় নেই, সিলেট টেস্টের প্রথম দিনে অর্ধেকেরও বেশি সময় ধরে আধিপত্য বিস্তার করেছিল বাংলাদেশি ব্যাটাররাই।

ads

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা খারাপ করেনি বাংলাদেশ। যদিও ইনিংসের শুরু থেকেই বেশ নড়বড়ে ছিলেন ওপেনার জাকির। এজাজ প্যাটেলদের স্পিনটা যেন ঠিকঠাক ধরতেই পারছিলেন না তিনি। হতশ্রী ব্যাটিংয়ে ইনিংসটাও তেমন দীর্ঘস্থায়ী লাভ করেনি।

ধরা দেন এজাজ ব্যাটের স্পিনে। ইনিংসের ১৩তম ওভারে প্যাটেলের করা তৃতীয় বলটা পেছনের পায়ে ভর করে খেলতে চেয়েছিলেন জাকির। কিন্তু ব্যাটে সংযোগ না ঘটায় বল সরাসরি আঘাত করে অফ স্ট্যাম্পে। ৪১ বলে ১২ রানের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে সেখানেই।

এরপর কিউই স্পিন আক্রমণের বিপরীতে আগ্রাসী মেজাজেই ব্যাটিং করছিলেন তিনে নাজমুল হোসেন শান্ত। শান্তর সাবলীল ব্যাটিংয়ে প্রথম সেশনটাও তাই বাংলাদেশ কাটাতে যাচ্ছিল দারুণ আধিপত্য বিস্তার করে। কিন্তু মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার কিছুক্ষণ আগে এক রকম উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

৩৫ বলে ৩৭ রানের ইনিংসে তখন উইকেটে থিতুই হয়ে পড়েছিলেন এ ব্যাটার। তবে বাজে শটের মাশুল যেমন নিজে দিয়েছেন, তেমনি তাঁর আউটে বাংলাদেশের ইনিংসও যায় থমকে।

অবশ্য লাঞ্চ বিরতির পর টাইগারদের ইনিংস মেরামতের কাজটা শুরু করেন মমিনুল আর মাহমুদুল হাসান জয়। দুজনের জুটিতে দারুণ গতিতেই এগিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। প্রায় নির্বিঘ্নেই দ্বিতীয় সেশন পার করার পথে এগিয়ে যাচ্ছিল টাইগাররা। তবে হঠাতই চিত্রটা বদলে যায় চা বিরতির ঠিক আগে মাত্র পাঁচ বলের মধ্যে।

গ্লেন ফিলিপসের বলে কাট খেলতে গিয়ে ৩৭ রানে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান মমিনুল হক। আর তার তিন বল পরই জয় ফিরে যান স্পিনার ইশ সোধির বলে ড্যারিল মিশেলকে ক্যাচ দিয়ে। আর এখানেই সেঞ্চুরির পথে হেঁটে শতক মিসের আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরের পথে হাঁটা দিতে হয় এ ওপেনারকে।

১৬৬ বলে ৮৬ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। তবে চা বিরতিতে যাওয়ার আগে ৫ বলের ব্যবধানে এই ২ উইকেটের পাল্টা ঝড়েই বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস।  ২ উইকেট ১০৪ রান নিয়ে দ্বিতীয় সেশন শুরু করা বাংলাদেশ চা বিরতিতে যাওয়ার আগে তোলে ৪ উইকেট ১৮৫ রান।

এর পরের সেশনটা বলতে গেলে নিউজিল্যান্ডই আধিপত্য বিস্তার করে। বাংলাদেশি ব্যাটাররা যেখানে ছিলেন নীরব দর্শক। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের অন্যতম ভরসা মুশফিক ফিরে যান দ্রুতই। এরপর অভিষিক্ত শাহাদাৎ হোসেন দীপু শুরুটা ভাল করলেও নিজের ইনিংসটাকে বড় করতে পারেননি। ৫৪ বলে ২৪ রান করেন এ ব্যাটার। দীপুর মতো উইকেটে থিতু হয়েও আউট হয়ে যান মিরাজ। ৩০ বলে খেলেন ২০ রানের ইনিংস।

এরপর নুরুল হাসান সোহান আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাটিং করলেও নিজের ইনিংসকে নিয়ে যেতে পারেননি বেশি দূর। গ্লেন ফিলিপসের বলে ধরা দেওয়ার আগে খেলেন ২৮ বলে ২৯ রানের ইনিংস। মজার ব্যাপার হলো, এখন পর্যন্ত আউট হওয়া সব ব্যাটারই নিজের ইনিংসকে দুই অঙ্কে নিয়ে গেছেন।

স্বীকৃত ব্যাটারদের মাঝে মুশফিক বাদে সবাই ন্যূনতম ২৫ টা করে বল খেলেছেন। তবে উইকেটে থিতু হয়েও সবাই উইকেট খুইয়ে এসেছেন। আর এ কারণেই বড় সংগ্রহের পথে হেঁটেও কোনোমতে তিনশো পেরোনো সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ।

 

 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link