More

Social Media

Light
Dark

ফাইনালে ভারতের অজিবধের পাঁচ ফর্মুলা

অপেক্ষার দৈর্ঘ্যটা এখন কমে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ঘন্টার হিসেবে। প্রায় দেড় মাসের ক্রিকেট যজ্ঞের পর্দায় নামছে আর কয়েক ঘন্টা বাদেই। সময়ের হিসেবে গত ১২ বছর ধরে বিশ্বকাপশূন্য ভারত। এবার সেই শূন্যতা কিংবা অপূর্নতা ঘোচানোর সুবর্ণ সুযোগ টিম ইন্ডিয়ার সামনে। পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে তিন তারকায় নাম লেখাতে পারবে ভারত?

নানামুখী বিশ্লেষণ সেই সম্ভাব্যতাকে পোক্তই করে তুলছে। তবে প্রতিপক্ষ যখন অস্ট্রেলিয়া, তখন কাজটা মোটেই সহজ নয়। অবশ্য বিশ্বকাপে টানা ১০ ম্যাচ সেই কাঠিন্যতাকেই তো বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে ভারত। প্রশ্ন হচ্ছে, অজিবধে ভারতের রণকৌশলটা কেমন হতে পারে? খুবই সরল প্রশ্নের সহজ উত্তর হলো, আগের ১০ ম্যাচের ভারত শুধু নিজেদের ছন্দটা ধরে রাখতে পারলেই হলো।

ফাইনালে অজিবধের পথে ভারতের প্রথম রণকৌশলটা হচ্ছে রোহিতের হিটম্যানরূপ। এবারের আসরে সিংহভাগ ম্যাচেই ভারতকে দূরন্ত সূচনা এনে দিয়েছেন রোহিত শর্মা। ইনিংস হয়তো বড় করতে পারেননি, কিন্তু তাঁর শুরু আক্রমণাত্বক রূপ ভারতকে একটা বড় সংগ্রহের ভিত্তি গড়ে দিয়েছে প্রায় প্রতি ম্যাচেই। রোহিতের এমন রূদ্র রূপের ধারা ফাইনালেও অব্যাহত থাকলে বিশ্বকাপ জয়ের পথে বেশ ভালভাবেই এগিয়ে যাবে ভারত।

ads

উদ্বোধনীতে উড়ন্ত শুরু। এরপর প্রয়োজন ইনিংস বিল্ডআপ। যে কাজটা গোটা টুর্নামেন্ট ধরেই করে এসেছেন বিরাট কোহলি। ৭১১ রান নিয়ে সেরা ব্যাটারদের তালিকায় রয়েছেন চূড়ায়। এরই মধ্যে এবারের বিশ্বকাপে ৩ টা শতক হাঁকিয়ে ফেলেছেন। এ ছাড়া এই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই রাউন্ড রবিন লিগের ম্যাচে ৮৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। আর ঐ ইনিংসেই ভারত পেয়েছিল জয়ের দেখা। ফাইনালেও তাই ‘বিরাট স্পেশাল’ এর অপেক্ষায় থাকবে ভারত।

বিশ্বকাপের আগে ভারতের মিডল অর্ডার নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল অনেক। তবে সেই দুশ্চিন্তা নিমেষেই উড়িয়ে দিয়েছেন শ্রেয়াস আইয়ার ও লোকেশ রাহুল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফাইনালেও তাই তাদের উপর থাকছে গুরু দায়িত্ব। উড়ন্ত সূচনার দুর্দান্ত ফিনিশিং কিংবা শুরুর ছন্দপতন কাটিয়ে ওঠা- দুই মুহূর্তের জন্যই অপেক্ষায় থাকতে হবে মিডল অর্ডারের এই দুই ব্যাটারকে।

গোটা টুর্নামেন্ট জুড়েই দুর্দান্ত বোলিং করছেন মোহাম্মদ শামি। ৬ ম্যাচে নিয়েছে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ২৩ উইকেট। মুম্বাইয়ের সেমিফাইনাল একরকম ‘শামি শো’-ই ছিল। নিউজিল্যান্ডের ৭ ব্যাটারকে একাই গুঁড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফাইনালেও তাই বোলিংয়ে প্রধান ভরসার নাম এই শামি। তাঁর কাঁধেই থাকবে অজি টপ অর্ডারদের উপর মরণাস্ত্র চালানোর দায়িত্ব। শুরুতেই যদি ট্রাভিস হেড, ওয়ার্নার, মিশেল মার্শকে ফিরিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে অজিদের ছন্দপতনে ভারতও এগিয়ে যাবে বিশ্বজয়ের পথে।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২০১ রানের ইনিংস খেলে অবিশ্বাস্য এক ম্যাচ জিতিয়েছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ভারতের জন্য তাই গলার কাঁটা হতে পারে এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। আর এই কাঁটা উপড়ে ফেলার দায়িত্বটা থাকবে কুলদ্বীপ যাদবের উপরে। রাউন্ড রবিন লিগের ম্যাচে এই কুলদ্বীপের বলেই কুপোকাত হয়েছিলেন ম্যাক্সওয়েল। এ ছাড়া সেমিতে তাব্রাইজ শামসির বলে বোল্ড হয়েছিলেন অজি এ ব্যাটার। বাঁহাতি স্পিনারদের বিপক্ষে এই দুর্বলতাকে চিহ্নিত করেই নিশ্চয় ম্যাক্সওয়েলের জন্য আলাদা রণকৌশল সাজাবে ভারত। যার নেতৃত্বে থাকবেন কুলদ্বীপ যাদব।

২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালেও মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ও ভারত। ভারতকে সেবার ১২৫ রানে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। এবার ঘরের মাঠে নিশ্চয়ই সেই প্রতিশোধই নিতে চাইবে রোহিত শর্মার দল। আর সেই পথে হাঁটতে হলে, গোটা টুর্নামেন্ট চেনা ছন্দের ভারতকে তাদের ছন্দটা ফাইনালে প্রতিস্থাপিত করতে হবে শুধু। তবেই এক যুগের বিশ্বকাপখরা কাটবে ভারতের। ভারত হবে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link