More

Social Media

Light
Dark

ক্লাসেন-মিলারের ঠুনকো প্রতিরোধ

কলকাতার মেঘাচ্ছন্ন আকাশ। পেসারদের পেস মুভমেন্ট, বাড়তি বাউন্স তখনই পাওয়ার কথা। তারপরও রান তাড়ায় নড়বড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা অস্বস্তি এড়াতে শুরুতেই টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু টেম্বা বাভুমার ঐ এক সিদ্ধান্তই কাল হয়ে দাঁড়ায় প্রোটিয়াদের জন্য।

শুরু থেকেই দারুণ সুইং আর পেস মুভমেন্ট পাচ্ছিলেন অজি দুই পেসার মিশেল স্টার্ক আর জশ হ্যাজলউড। আর এতেই বিপাকে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার টপ অর্ডার। কোনো রান যোগ না করেই ফিরে যান বাভুমা। এরপর প্রোটিয়া অধিনায়কের পথ ধরে একে একে ফিরে যান কুইন্টন ডি কক, ভ্যান ডার ডুসেন আর এইডেন মারক্রাম।

২৪ রানে ৪ উইকেট হারানো দক্ষিণ আফ্রিকা তখন অল্প রানেই গুঁটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায়। তবে অজি পেসারদের তাণ্ডব সামলাতে এ দিন দলকে খাদের কিনারা থেকে রক্ষা করেন হেনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার। যদিও পেসারদের তোপেই বড় ক্ষতিটা ততক্ষণে হয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার।

ads

তবে অজিদের সামনে প্রোটিয়াদের প্রতিরোধ গড়ার প্রচেষ্টায় তখন অনেকটাই নির্ভর করছিল ক্লাসেন ও মিলারের পঞ্চম উইকেট জুটিতে। দলের চাওয়া অনুযায়ী এ জুটি সেই লক্ষ্যেই ব্যাটিং শুরু করে। রয়েশয়ে ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে সাময়িক বিপদ সামলানোর চেষ্টা করেন এ দুই ব্যাটার। মাঝে অবশ্য বৃষ্টির বাঁধা এসেছিল।

আর তাতে খেলা বন্ধ থাকে মিনিটে ত্রিশের মতো। এমন বিরতিতে অবশ্য আলাদা একটা টনিক পেয়েছিল ক্লাসেন-মিলার জুটি। বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার পর আবারো খেলা শুরু হলে এবার সাবলীল ব্যাটিং শুরু করতে থাকেন এ জুটি। তাতে অবশ্য বড় ক্ষতিটা এড়ানো  যায়নি, তবে খানিকটা পুষিয়ে দেওয়া গিয়েছে নিশ্চিতভাবেই।

দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে প্রথম পাল্টা আক্রমণের দেখা মেলে ইনিংসের ১৭তম ওভারে। অ্যাডাম জাম্পাকে স্লটে পেয়ে লং অনের ওপর দিয়ে ইনিংসের প্রথম ছক্কাটি মারেন ডেভিড মিলার। আর সে শটেই পঞ্চাশ পেরোয় দক্ষিণ আফ্রিকার। প্রোটিয়াদের পাল্টা আক্রমণ শুরু হয় তখন থেকেই। এরপর জাম্পার বলে আরো একটি ছক্কা হাঁকান মিলার।

আর সেই জাম্পাকেই টার্গেট করে চড়াও হন আরেক ব্যাটার হেনরিখ ক্লাসেনও। ইনিংসের ২৭ তম ওভারে জাম্পাকে পেয়ে কাউ কর্নার দিয়ে ক্লাসেন পরপর ২ বলে মারেন দুটি ছক্কা। আর এমন ব্যাটিংয়েই দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস কিছুটা গতিশীল হওয়া শুরু করে। তার আগেই অবশ্য ক্লাসেন-মিলার জুটি টপকে যায় ৫০ রানের যুগলবন্দীতে।

২৪ রানে ৪ উইকেট হারানো দক্ষিণ আফ্রিকার ততক্ষণে শতরান পেরিয়েছে। অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের কপালেও পড়েছে খানিকটা চিন্তার ভাঁজ। কোনো উপায়ন্তর খুঁজে না পেয়ে বোলিং প্রান্তে আনেন ট্রাভিস হেডকে। পার্ট টাইম এ স্পিনারকে পেয়ে শুরুটা দুর্দান্তই করেছিলেন ক্লাসেন।

টানা দুই বলে মারেন দুই চার। কিন্তু আক্রমণাত্বক হতে গিয়েই নিজের বিপদ ডেকে আনে এ ব্যাটার। ওভার দ্য উইকেট থেকে ফুললেংথের বল খেলতে গিয়ে লাইন মিস করেন ক্লাসেন। ফলাফল, বোল্ড। ক্লাসেন-মিলারের ৯৫ রানের জুটির সমাপ্তি ঘটে সেখানেই।

কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করলেই জুটিটা বড় হতে পারতো নিশ্চিতভাবেই। হয়তো অজিদের আগ্রাসনের বিপরীতে প্রোটিয়াদের পাল্টা আক্রমণের দৃশ্যও মিলত। কিন্তু সেটি হয়নি শেষ পর্যন্ত। যা হয়েছে, সেটা হলো, ক্লাসেন-মিলার জুটিতে শুধু মান বেঁচেছে দক্ষিণ আফ্রিকার। তবে ম্যাচ বাঁচানোর জন্য পর্যাপ্ত হলো কি? খুব সম্ভবত না।

 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link