More

Social Media

Light
Dark

শ্রীলঙ্কার চাকরি পেতেই টাইমড আউটের বিরুদ্ধে ডোনাল্ড!

বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ হিসেবে অ্যালান ডোনাল্ডের অধ্যায় এখন অতীত। বিশ্বকাপ পর্যন্ত চুক্তি থাকলেও বিসিবি’র কাছ থেকে সাবেক প্রোটিয়া এ পেসার পেয়েছিলেন চুক্তি বাড়ানোর প্রস্তাব। কিন্তু পারিবারিক কারণেই ডোনাল্ড আর বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাথে থাকতে চাননি। যদিও এটি তাঁর ভাষ্য। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা।

নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র জানাচ্ছে, বিশ্বকাপ চলাকালীনই শ্রীলঙ্কার বোলিং কোচের প্রস্তাব পেয়েছিলেন অ্যালান ডোনাল্ড। আর এরপর থেকেই বাংলাদেশ ক্রিকেট থেকে মন সরে যেতে থাকে প্রোটিয়া এ কিংবদন্তি পেসারের। এমনকি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে ম্যাথুসের টাইমড আউট ইস্যুতে সাকিবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে দলের কোড অব কনডাক্ট ভেঙেছিলেন ডোনাল্ড। যেটি মূলত বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার প্রক্রিয়ারই একটা অংশ ছিল।

ম্যাথুসের টাইমড আউট নিয়ে শুরু হওয়া বিতর্কের ঝড় এখনও থামেনি। এ ঘটনায় কেউ বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের পক্ষ নিচ্ছেন, কেউবা আবার ক্রিকেটীয় চেতনার কথা বলে ম্যাথুসের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। তবে এই আলোচনা, সমালোচনার স্রোতে সবচেয়ে বিস্ময়কর কাজটা করেছিলেন অ্যালান ডোনাল্ড। স্রোতের বিপরীতে গিয়ে নিজ দলের অধিনায়ক সাকিবের বিপক্ষে মত দিয়েছিলেন তিনি।

ads

ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকব্লগ ডটনেটে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড স্পষ্ট করেই বলেছিলেন, ‘ক্রিকেট মাঠে আমি এমন কিছু দেখতে চাই না। আমার মন বলছিল মাঠে ঢুকে বলি, যা হয়েছে যথেষ্ট হয়েছে, আমরা এর পক্ষে না। আমরা এমন দল না যে এর পক্ষ নেব। আমি শুধু সেখানে গিয়ে বলতে চাচ্ছিলাম, ‘যথেষ্ট হয়েছে আর না’। এটা আমার তাৎক্ষণিক ভাবনা। সবকিছু দ্রুত ঘটে গেছে। আপনি কর্তৃত্বের কথা বলতে পারেন। কিন্তু আমি তো প্রধান কোচ না, আমি দায়িত্বে নেই। তাই আমার হাতে ছিল না।’

ডোনাল্ডের এমন সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হওয়ার পরই বাংলাদেশের ক্রিকেট পাড়ায় শুরু হয় নতুন বিতর্ক। দলের দায়িত্বশীল একজন কোচের এমন বিবৃতিতে বিব্রত হয় বিসিবিও। তাই ডোনাল্ডকে কারণ দর্শানোরও নোটিশ পাঠিয়েছিল দেশের সর্বোচ্চ ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তবে ততক্ষণ পর্যন্ত বিসিবির গুডবুকে পেস বোলিং কোচ হিসেবে ডোনাল্ডই ছিলেন। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার এই কোচ যে চাকরি ছাড়া প্রস্তুতি নিচ্ছেন, সেটি নিয়ে অবগত ছিল না কেউ-ই।

কিন্তু বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার আগে হঠাতই ডোনাল্ড জানিয়ে দেন, তিনি আর বাংলাদেশের দায়িত্বে থাকছেন না। আপাত দৃষ্টিতে যেটি টাইমড আউট ইস্যুর প্রভাব মনে হলেও, বাস্তবতা সেটি নয়। বিসিবির এক ঘনিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, ডোনাল্ড আগেই শ্রীলঙ্কা থেকে প্রস্তাব পেয়েছিলেন। আর সেই প্রস্তাবের পরই তিনি অনুশীলনে উদাসীন হয়ে পড়েন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ ম্যাচের আগে অনুশীলনে প্রায় একাকীই সময় কাটিয়েছেন ডোনাল্ড। গণমাধ্যমের ক্যামেরায় সেটি বারবার ধরা পড়েছে।

তবে শেষদিকে নয়, এমনকি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের পরেও নয়, টাইগার ড্রেসিংরুমে যে ডোনাল্ডের আর মন টিকছে না তার নমুনা দেখা গিয়েছে বিশ্বকাপের মাঝপথ থেকেই। অবশ্য এখানে দায় আছে বিসিবিরও। বিশ্বকাপের আগেই ডোনাল্ড নিজের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তখন বিসিবি কোনো কিছু খোলাসা করেনি।

আর খুব স্বাভাবিকভাবেই তাই অন্য প্রস্তাবের দিকে ঝুঁকেছেন ডোনাল্ড। বিশ্বকাপের মাঝপথ পেরিয়ে যাওয়ার পর যখন বিসিবি থেকে চুক্তি বাড়ানোর প্রস্তাব পেলেন, ততক্ষণে তিনি নতুন গন্তব্য চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ায়। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাথে আর দুইয়ে দুইয়ে চার মিলল না ডোনাল্ডের।

যদিও দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি পেসার পারিবারিক কারণ দেখিয়েই চাকরি ছেড়েছেন। আর শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের এখন যা অবস্থা তাতে শেষ পর্যন্ত তিনি নাও যেতে পারেন সেখানে। তবে আইপিএলে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা থাকা ডোনাল্ডের চাকরির অভাব হওয়া কথা নয়। হয়তো বাংলাদেশ ক্রিকেট ছেড়ে ‘নতুন’ কোনো গন্তব্যেই চোখ রেখেছেন ডোনাল্ড। আবার এমনটাও হতে পারে, গত দেড় বছরে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্দরমহল বিষিয়ে তুলেছিল তাঁকে। সেখান থেকেই পরিত্রাণ পেতেই আর নতুন করে সম্পর্কের সুতো বাঁধতে চাননি তিনি।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link