More

Social Media

Light
Dark

আহা কোহলি! অবশেষে কোহলি!

নিতান্ত ডেড রাবার একটা ম্যাচ। ম্যাচের ফলাফলে কারো কোনো  কিছ যায় আসে না। ম্যাচের প্রতি দর্শকদের আগ্রহ তেমন নেই। গণমাধ্যমের আগ্রহও নেই বললেই চলে। দু’টো দলই বাদ পড়েছে ফাইনালের দৌড় থেকে। এই ম্যাচ দেখতে দেখতে হঠাৎ চোখ সরে যাওয়াটাও দোষের কিছু না।

কিন্তু, কে জানতো এই ম্যাচটাই কি অসম্ভব এক বিস্ময় নিয়ে অপেক্ষায় ছিল। কি সেই বিস্ময়? সেঞ্চুরি করেছেন বিরাট কোহলি।

হ্যাঁ, বিরাট কোহলি। দ্য রান মেশিন। যার নিন্দুকও বলতে পারবে না যে তিনি রান পাচ্ছিলেন না। হাফ সেঞ্চুরি করাটাকে এই এশিয়া কাপেও রীতিমত ডাল ভাতই বানিয়ে ফেলেছিলেন। কেবল সমস্যা ছিল একটাই। হাফ সেঞ্চুরিগুলো কোনো ভাবেই তিন অংকের ম্যাজিক্যাল ফিগার ছুঁতে পারছিল না।

ads

অবশেষে সেটা হল, পারলেন কোহলি। করলেন ‘বিরাট’ এক সেঞ্চুরি। সেটাও আবার টি-টোয়েন্টি ম্যাচে। একটা সেঞ্চুরির জন্য যে অবিরত অপেক্ষা তিনি করেছেন সেই অপেক্ষার অবসান হল। অবশেষে তিনি পেলে অধরাা ৭১ তম সেঞ্চুরির দেখা। প্রায় তিন বছর তিনি অপেক্ষা করেছেন এই মুহূর্তের জন্য। অবশেষে তাঁর পরিশ্রম, তাঁর অধ্যাবসায় পূর্ণতা পেল। সেই মাইডাস টাচে ক্রিকেট বিশ্ব খুঁজে পেল সেই পুরনো বিরাটকে।

কাগজে কলমে সেই অপেক্ষার সময়টা এক হাজার ২১ দিনের। সেঞ্চুরি করাটাকে যিনি রীতিমত অভ্যাসে পরিণত করেছিলেন – তাঁর জন্য এটা বড় অপেক্ষাই বটে। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ২২ নভেম্বর বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন, ঐতিহাসিক ইডেন গার্ডেন্সে। পেসার এবাদত হোসেন বিরাটের উইকেট পেয়ে স্যালুট করলেন, ব্যাস অপেক্ষাটা শুরু হল। থামল ২০২২ সারের আট সেপ্টেম্বর।

কিছু কিছু অর্জন, কিছু মাইলফলক, কিছু কিছু ইনিংস বর্ণনা করার জন্য ভাষা খুঁজে পাওয়া যায় না। এটা তেমনই একটা সময়। শুধু বলতে হয় – অবশেষে বিরাট! আহা বিরাট! সম্রাট তাঁর হারানো সিংহাসনের দেখা পেলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে। বিরাটকে তো মনে রাখবেনই, সাথে এই দিনটার কথাও মনে রাখুন।

কোহলির ওপরে এখন আছেন এখন কেবল ওই একটা মানুষ। স্বয়ং শচীন রমেশ টেন্ডুলকার। সমান ৭১ টি সেঞ্চুরি করে বিরাটের সাথেই আছেন আরেক বিরাট গ্রেট – সাবেক অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি রিকি পন্টিং।

সেঞ্চুরির এই ইনিংসটা ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকেও অনেক ‍গুরুত্ববহ। ১২২ রানের অপরাজিত ইনিংসটা ভারতের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ইনিংস। ওপেনিংয়ে নামা বিরাট ৬১ ডেলিভারি ক্রিজে থাকেন। সেখানে হাঁকান ১২ টি চার ও ছয়টি ছক্কা। বিরাটের ব্যাট আফগানিস্তানের বিপক্ষে সত্যিই বিরাট হয়ে ‍উঠেছিল।

এই ম্যাচের উদ্দেশ্য কি, ফলাফল কি, এই ম্যাচ খেলে কি লাভ? – এই সব কিছু ভুলে যান। খালি মনে রাখুন বিরাট কোহলিকে। বাইশ গজের মাস্টার মশাই ফিরে এসেছেন তাঁর পুরনো চেহারায়। এই চেহারাটাতেই, এই ব্যাট তুলে দুই হাত প্রসারিত করতেই  তো তাঁকে সবচেয়ে বেশি মানায়।

প্রিয় বিরাট কোহলি, অভিনন্দন আপনাকে। এই  বাইশ গজ আপনার রত্ন সিংহাসন। এই ব্যাট আপনার তলোয়ার। এই তলোয়ারের ধার টিকে থাকুক চিরকাল, গ্রেটনেসের বিরাটীয় পতাকা উড়ুক আজীবন।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link