More

Social Media

Light
Dark

বিষণ্ণ ট্র্যাজেডির পুনর্মঞ্চায়ন

ব্যবধান ছয় বছরের। দু’টি ভিন্ন মানব, কিন্তু গল্পটা একই; চিত্রটা দুর্দশার। মুদ্রার একই পিঠে বিরাট ও বাটলার; ব্যর্থতার পিঠ। দুই ফাইনাল, দু’জনের সেরা মৌসুম; দু’জনেরই পরাজয়। ফাইনালের মঞ্চে ভাগ্য সহায় হয়নি দুই তারকার; রেকর্ডগড়া রানের পরেও যেন ফিরেছেন শূন্য হাতে।

২০১৬ আইপিএলে বিরাট কোহলি আর ২০২২ মেগা আইপিএলে জশ বাটলার – দুই ভিন্ন মৌসুমে ব্যাট হাতে রেকর্ড গড়ে টুর্নামেন্ট সেরা বনে গেলেও শিরোপা জয়ের আক্ষেপ নিয়েই মাঠ ছেড়েছে এই দুই তারকা। 

২০১৬ সালটা স্বপ্নের মতই কেটেছিল বিরাটের। ছিলেন ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে। ব্যাট হাতে দাপট দেখাচ্ছিলেন প্রতিনিয়ত। গড়েছেন রানের পাহাড়; ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ইতিহাসে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। ১৬ ম্যাচে ৮১ গড়ে ১৫২ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ৯৭৬ রান। সাত ফিফটি আর চার সেঞ্চুরিতে পুরো আসরটা যেন নিজের করে নিয়েছিলেন এই ভারতীয় তারকা।

ads

বিরাটের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সেবার ফাইনালে পা দেয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। প্রথমবারের মত আইপিএলের শিরোপা জয়ের হাতছানি; আগে দু’বার ফাইনালে গেলেও শিরোপা ছুঁতে পারেনি বিরাটবাহিনী। তাই বিরাটের ব্যাটে শিরোপা জয়ের অধরা স্বপ্নটা পূরণ করতে মরিয়া ব্যাঙ্গালুরু।

সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমে ক্রিস গেইল ও বিরাটের তাণ্ডবে দলীয় রান দুইশো পার। ফাইনালের মঞ্চে বিরাট খেললেন ৩৫ বলে ৫৪ রানের ঝড়ো ইনিংস। কিন্তু সেদিন ডেভিড ওয়ার্নার, যুবরাজ সিং, বেন কাটিংদের তাণ্ডবে আবার শিরোপা জয়ের স্বপ্নভঙ্গ হয় বিরাটের। উড়ন্ত ফর্ম, দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পরেও আক্ষেপ নিয়ে টুর্নামেন্ট ছেড়েছিলেন বিরাট।

ছয় বছর কেটে গেল। ঘড়ির কাঁটায় ঠিক ছয় বছর। মে মাসের এই ২৯ তারিখেই বিরাট রানের পাহাড় মাথায় নিয়েও হতাশ চোখে বাড়ি ফিরেছিলেন। ছয় বছর বাদে আইপিএলের মঞ্চে পুনরাবৃত্তি হল ঠিক এক দৃশ্যের। এবারের আক্ষেপের পেছনের নায়ক – জশ বাটলার।

পঞ্চদশ আসর, মেগা আসর। ব্যাট হাতে পুরো আসর জুড়েই দাপট দেখালেন বাটলার। কিন্তু পরিণতি সেই এক। দলকে কাঁধে চড়িয়ে ফাইনালে পৌঁছে দিলেন। ফাইনালের মঞ্চে বাটলারসুলভ ব্যাটিংটা দেখা গেল না ঠিক, তবু তিনি দলের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেললেন। গুজরাট টাইটান্সের দাপটের কাছে পেরে উঠেনি বাটলারের রাজস্থান। ৭ উইকেটের বড় পরাজয়ে শিরোপা জয়ের আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হল এই ওপেনারকে।

টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান, ছক্কা সবকিছুই বাটলারের দখলে; সর্বোচ্চ রানের মালিকও তিনি। ১৭ ম্যাচে ৫৭ গড় আর ১৪৯ স্ট্রাইক রেটে ৮৬৩ রান। ৪ ফিফটির পাশাপাশি আছে ৪ সেঞ্চুরিও। বিরাটের পর আইপিএল ইতিহাসে এক মৌসুমে গড়েছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। মাঝে খারাপ সময় না কাটালে হয়ত ভেঙে ফেলতেন বিরাটের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটাও। পুরো আসর জুড়ে দাপট দেখানো বাটলারের হাসিটা ফিঁকে হয়ে গেল ফাইনালে দলের ব্যর্থতায়।

দুই ভিন্ন আসর, দুই ভিন্ন তারকা; দুই ফাইনাল, দু’টি ব্যর্থতা। ছয় বছরের ব্যবধানে ২৯ মে রাতে আইপিএল সাক্ষী হল দুটি ফাইনালের; দুই ম্যাচের একদিকে শিরোপাজয়ীদের উল্লাস, আরেকদিকে দুই তারকার আক্ষেপ। নিজেদের সেরাটা দিয়েও ব্যর্থতার গল্পে নাম লেখানোর চেয়ে বড় হতাশা কি হতে পারে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link